মধ্যবিত্ত নিয়ে উক্তি: মধ্যবিত্ত মানে কঠিন এক যন্ত্রণার নাম। মধ্যবিত্ত মানে সবকিছুকে মানিয়ে নেওয়া যাদের অভ্যাস। আর এই মধ্যবিত্ত হচ্ছে চোরাবালির মত যেখান থেকে উঠে আসা অনেক কষ্ট । একমাত্র মধ্যবিত্তরাই জানে জীবন মানে কি? আর মধ্যবিত্ত হওয়া হচ্ছে এক ধরনের অভিশাপ। আসুন আজকে তাদের নিয়ে এমন কিছু উক্তি লিখব, এবং সেই মধ্যবিত্ত অবস্থা থেকে আপনি কিভাবে পরিত্রান পেতে পারেন তার বিস্তারিত ধারনা দিব।
এছাড়াও থাকবে মধ্যবিত্ত কাকে বলে? মধ্যবিত্ত ছেলেদের কষ্টের উক্তি সহ আরো অনেক বিষয়। আমি আশা করি আপনি যদি মধ্যবিত্ত নিয়ে উক্তি লেখাটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে মধ্যবিত্তের যে যন্ত্রনা সেখান থেকে মুক্তি পাবেন । কারণ আমি নিজেও একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলাম।
মধ্যবিত্ত কাকে বলে?
এই বিষয় নিয়ে উক্তি লেখার আগে আমাদের জানতে হবে আসলে মধ্যবিত্ত কাদেরকে বলে? যদি আপনি জানেন মধ্যবিত্ত কাকে বলে তবে আপনি নিজেকে ঠিক করে বলতে পারেবেন আপনি কোন শ্রেণীর? আপনি কি ধণী নাকি গরীব নাকি মধ্যবিত্ত? আপনি যদি মধ্যবিত্ত হন তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার কষ্টের কারণ। আপনি যদি আমাদের দেয়া মধ্যবিত্তের সংজ্ঞায় পড়ে যান, তাহলেই এই লেখাটি পড়লে আপনি আপনার সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন।
যাদের কে মধ্যবিত্ত বোঝায়- যাদের অবস্থা না গরীব না ধনী এই দুয়ের মাঝা মাঝি। তাদের এমন একটি অবস্থা, তাদের যদি কিছু টাকা হয় তারা খুব ভালোভাবে চলতে পারে। আবার কিছু টাকা যদি হঠাৎ করে সংসারে ক্ষতি হয় তাহলে তাদের গরিব অবস্থায় চলে আসতে হয় । এই অবস্থাটা হল মধ্যবিত্ত অবস্থা। আর এ অবস্থায় বোঝা যায় জীবনের কঠিন বাস্তবতা । আপনি একদিকে যেমন গরিবের যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে, অন্যদিকে ধণী মানুষের স্বাদ পেয়ে যাবেন এই জীবন টাকে অনেক যন্ত্রণাময় জীবন বলা চলে।
মধ্যবিত্ত নিয়ে উক্তি/মধ্যবিত্ত পরিবার নিয়ে উক্তি
মধ্যবিত্ত নিয়ে বেশকিছু উক্তি রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার মনের দুঃখ গুলো দূর করতে পারবেন। এই উক্তিগুলো আপনি শেয়ার করতে পারবেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আরও শেয়ার করতে পারবেন আপনার বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে যা আপনার মনের দুঃখ্য দূর করতে সাহায্যে কারবে। তো চলুন নিচে তুলে ধরা হলো সেই উক্তি সমূহ।
হুমায়ূন আহমেদ তার মধ্যবিত্তের উক্তিতে বলেন-
যে সকল পরিবারের মানুষজন মধ্যবিত্ত তারাই আসলে সমাজের আসল রূপ দেখতে পায়
হুমায়ূন আহমেদ এর কথার অর্থ- সমাজের আসল রুপ দেখতে গেলে আপনাকে সমাজের সকল মানুষের সাথে মিশতে হবে । তবেই আপনি সমাজের আসল রুপ দেখতে পাবেন। আর তাই মধ্যবিত্ত যেহেতু সমাজের সকল মানুষের লোকের সাথে মিশতে পারে তার জন্য তারা সমাজের আসল রুপ তারা দেখতে পায়।
আমি যদি আপনাদের আরেকটু পরিস্কার করে বলি তাহলো যেহেতু মধ্যবিত্ত না ধনি না গরীব তারা সমাজের উভয় শ্রেণীর মানুষের সাথে মিশতে পারে যার কারনে তার আসল চিত্র দেখতে পায়।
মধ্যবিত্তের সুন্দর উক্তি দিয়েয়েছেন ভারতের অনেক ধনী ব্যক্তি নিতা আম্বানি –
আমি আমার সকল কাজে অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাই । কারণ আমি নিজেও ছিলাম একজন মধ্যবিত্ত।
তার কথার অর্থ: আপনি শুধু মধ্যবিত্তকে খারাপ কাজেই লাগবেন না। এটা থেকে বাস্তব কিছু জ্ঞান নিয়ে তা কাজে লাগিয়ে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে । তবেই জীবনে সফলতা আসবে। যেমন আমি আমার জীবনে মধ্যবিত্তের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সফলতা পেয়েছি।
জেফ্রি কানাডা তার উক্তিতে মধ্যবিত্তের সম্পর্কে বলেন –
’’যারা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলিতে বসবাস করে তাদের, জন্মের সময় থেকেই শিক্ষা শুরু হয়ে যায়’’
তার কথার অর্থ:– যারাই মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করে তাদের জন্মের পর হতেই বিভিন্ন বিষয়ে মানিয়ে চলতে হয়। এতে করে তাদের মধ্যে মানিয়ে নেয়ার মত শিক্ষা লাভ হয়ে যায়।
সাইফুল ইসালাম তার উক্তিতে বলেন-
’’মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান মনেই সকল কিছুর সাথে নিজেকে মানিয়ে চলা’’
তার কথার অর্থ- আপনি যদি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হন তাহলে আপনাকে সব কিছুর সাথেই মানিয়ে চলতে হবে ।আপনি ইচ্ছে করলেই ভাল কিছু ব্যবহার বা ভোগ করতে পারবেন না। কারন সেই সামর্থ আপনার নাই।
ডঃ নাজিমুদ্দিন তার উক্তিতে মধ্যবিত্ত সম্পর্কে সুন্দর ভাবে বলেন-
’’আপনি যদি গরীব হন সেটাও যেমন আপনার জন্য ভাল আর আপনি যদি ধনী হন সেটাও আপনার জন্য ভাল । কিন্তু ভুলেও মধ্যবিত্ত হবেন না । কারন এখান থেকে আপনাকে তুলে আনা কঠিন’’
তার কথার অর্থ: মধ্যবিত্তে এক রকমের চোরাবালির মত । যেখানটায় একবার কেউ পড়লে আর উঠতে পারে না। কারন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক কোন কাজ করতে সহজেই সহস পায়না । তাদের যা আছে তা হারাবে বলে।
মধ্যবিত্ত ছেলেদের কষ্টের স্ট্যাটাস
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েদের মনে অনেক কষ্ট থাকে। আর সেই কষ্ট তারা কাউকে দেখাতে পারেনা এবং কারো কাছে বলতেও পারে না । তাদের মনে কিছু লজ্জা কাজ করে। এর সাথে থাকে কিছু হারানোর ভয় । তারা একদিকে যেমন গরিব লোকের সাথে চলতে পারে না। অন্যদিকে ধনীদের সাথে তাল মিলাতে পারে না। তাই তাদের কষ্টের যেন আর সীমানাই।
আর এই সকল কষ্টের মধ্যে তারা বিভিন্ন উক্তি শেয়ার করে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । আর তাদের জন্যই মূলত আমি লিখেছি কিছু সুন্দর উক্তি, যেগুলো আপনি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে বন্ধু-বান্ধবের সাথে নিজের দুঃখকে ভাগাভাগি করে নিতে পারবেন।
মধ্যবিত্ত আমি ভাই
আমার কোন ইচ্ছে নাই।
কোনভাবে দিনটা
আমার কেটে যায়।
আমি একজন মধ্যবিত্ত
আমার নাই কোন সুখ।
আমার আছে শুধু হাহাকার করা
শত কষ্ট ভরা বুক।
গরীব হলেও ভালো হতো
না হয়ে মধ্যবিত্ত ।
যেকোনো কাজ করে চলতাম
মনে নিয়ে চিত্ত।
হাসতে পারি না অভিনয় করি
সংসার চালাতে মরিয়া হয়ে পড়ি
আমি মধ্যবিত্ত
সংসারের কেউ কিছু চাইলে আমি সরি।
আমায় তুমরা উপহাস করো না
আমার জন্য দোয়া করো ।
যারা আমার মত মধ্যবিত্ত
জীবনে ধনী হবার জন্য জীবন গড়ো।
মধ্যবিত্ত থাকলে কি কি সমস্যা হয়ে?
জীবনে মধ্যবিত্ত থাকাটাই হচ্ছে বিরাট সমস্যা । এই মধ্যবিত্ত তে যারা আছেন তারা জীবনের প্রতিটা মুহুর্তে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। তাদের চলতে গেলেই সমস্যা । আর এই সমস্যাগুলো থেকে তাদের উত্তরণ খুবই দুরূহ। মধ্যবিত্ত থাকার কারণে যে সকল সমস্যার তৈরী হয় তার মধ্যে থেকে উল্লেখ যোগ্য গুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
- ভাল খাবার খেতে পারে না।
- ভাল জামা কাপড় পড়তে পারে না।
- ছেলে মেয়েদের ভাল জায়গায় পড়াতে পাড়ে না।
- ভাল বাড়ী ঘর করতে পারে না।
- ভাল গাড়ী কিনতে পারে না।
- অসুখ বিসুখ হলে ভাল ডাক্তার দেখাতে পারে না।
- সংসারে সখের জীনিস ক্রয় করতে পারে না। মোট কথা তাদের জীবনে যে চাহিদা রয়েছে সেই চাহিদা গুলো ভালভাবে মিটাতে পারে না। কারন যে কোন কিছু করতে গেলে তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যায়।
মধ্যবিত্ত থেকে বের হওয়ার উপায়
যারা মধ্যবিত্ত অবস্থায় আছে, তারা প্রায় সময় মনে করে থাকে তারা একটি সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। আর তাই শত কষ্টের মধ্যে থেকেও এ অবস্থা থেকে তারা উত্তরণ পেতে চায় না, বা পাওয়ার জন্য সাহস পায় না। তারা সব সময় নিজের বুঝায় যদি কোনো কারণে দুর্ঘটনা হয়ে যায় তবে তারা গরীব হয়ে যাবে । এই ভয়ে তারা কোন কাজ করতে চায় না।
তারা এখানেই জীবনভর থাকতে চায়। এটাকে তারা সুবিধাজনক অবস্থান মনে করে। তাই আসুন যারা আজকের পর থেকে আপনার মধ্যবিত্ত অভিশাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চান, তাদের জন্য কিছু কথা বলব। আপনারা যদি নিচের উপদেশ গুলো ফলো করেন, তাহলে খুব সহজেই মধ্যবিত্ত থেকে আপনি ধনীর দিকে যেতে পারবেন। আর এর জন্য নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে।
- মনে-প্রাণে পদক্ষেপ নিতে হবে আপনি মধ্যবিত্ত থেকে ধনীর দিকে যেতে চান। এই সিদ্ধান্ত আপনাকে প্রথমে গ্রহণ করতে হবে ।
- আপনাকে একটি সুন্দর পরিকল্পনা করতে হবে। অর্থাৎ আপনি কত দিনের মধ্যে ধনী হতে চান? সেখানে সব বিষয় উল্লেখ থাকবে যেমন কিভাবে আপনি ধনী হবেন? কি কাজ করবেন ? যাবতীয় বিষয়ে পরিপূর্ণভাবে লিখিত থাকতে হবে।
- আপনি ধনী হওয়ার জন্য যে কাজটি হাতে নিবেন সেই কাজ সম্পর্কে আপনার পরিপূর্ণ ধারণা থাকতে হবে। তার জন্য আপনি কোথাও গিয়ে হাতে কলমে শিখে ধারণা নিতে পারেন। সেটা সবচেয়ে ভালো হয়।
- এবার যে কাজটি করবেন সেই কাজটি ধৈর্য ধরে কঠোর পরিশ্রমের সাথে চালিয়ে যেতে হবে।
- সবশেষে আপনাকে ধনী হওয়ার জন্য রিস্ক নিতে হবে।
শেষকথা:
আশাকরি উপরের লেখাগুলো আপনার অনেক কাজে লাগবে। আর আপনাদের মঙ্গল কামনাই আমার কাম্য। আপনারা ভালো থাকেন, সুন্দর থাকেন। সবাই নিজের জীবনে স্বাবলম্বী হন সেই প্রত্যাশাই করি। আমার লেখা যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, আপনাদের কাছে অনুরোধ রাখছি অবশ্যই সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করবেন।
আর দয়া করে আপনার মন্তব্য পাঠান তাহলে আমরা আরো ভালো লিখব সামনের দিনগুলোতে । ধন্যবাদ কষ্ট করে লেখা পড়ার জন্য।
(আপনি যদি কৃষি বিষয়ক সকল আপডেট ভিডিও দেখতে চান তাহলে দেখতে পারেন আমাদের চ্যানেলটি যেখানে আমরা সকল আপডেট কৃষি বিষয়ক তধ্য দেখানোর চেষ্টা করি)
আরো পড়ুন-
৩.. গুগলের জানা অজানা নানান তথ্য।
৫. গুগলে মানুষ কোন বিষয়ে বেশি সার্চ করে।