নাভির উপরে নিচে ব্যথার কারণ ও করণীয়

নাভির উপরে ব্যথার কারণ: অনেকেরই দেখা যায় নভির চারপাশে বা উপরিভাবে ব্যথা করতেছে। কিন্তু হঠাৎ করে তারা

বুঝতে পারেনা তাদের এই ব্যথার মূল কারণ। আজ তাই এই আলোচনার মাধ্যমে এই ধরনের ব্যথা হবার কয়েকটি কারণ

ব্যখা করবো যাতে করে আপনি সহজেই ডাক্তারের কাছে না গিয়ে আপনার নাভি ব্যথার কারণ বুঝতে পারেন। আর সেই

অনুযায়ী প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। অনেক কারণেই আমাদের নাভির উপরে বা চারপাশে ব্যথার অনুভব হতে

পারে ।আর এই সকল কারণের মধ্যে যে সকল উল্লেখযোগ্য সেগুলো নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।

নাভির উপরে নিচে ব্যথার কারণ

নাভির চারপাশে বা উপরে ব্যথা হলে তেমন কোন জটিল কারণ না হলে সাধারণত এ্যান্টাসিড খেলেই এই ব্যথা সেরে যায়

আবার অনেক ক্ষেত্রে এই ব্যথা আস্তে আস্তে তীব্র তর হতে দেখা যায়। তবে যদি কোন কারণে ব্যথা খুব বেশি অনুভব হয়

তবে ডাক্তারের কাছে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এছাড়াও আরো অনেক গুলো কারণে এই ধরনের ব্যথা হতে পারে। তবে যে

সকল কারণে নাভির উপরে ব্যথা হয় তাদের মধ্যে  নিম্নোক্ত কারণ গুলো উল্লেখযেগ্য।

ক্রনস রোগের কারণে নাভির মধ্যে ব্যথা

এই রোগটি হচ্ছে অন্ত্রের এমন একটি প্রদাহজনিত রোগ যা সাধারণত ক্ষুদ্রান্ত ও বৃহদান্ত্রকে আক্রমণ করে। এ রোগ

সাধারণত নাভির পেছনের দিকে ব্যথা সৃষ্টি করে থাকে। অনেক সময় এই অনুভূতি হালকা হয় আবার অনেক সময় এটা

তীব্র হয়ে থাকে। খাবার খাওয়ার ২০ থেকে ৩০ মিনিট এর মধ্যে সাধারণত এই ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে। সহকারী

অধ্যাপক ( গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির সহকারী অধ্যাপক ইলানা মেসার তার এই বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন ” যখন কেউ ক্রন’স

রোগ নির্ণয় করতে যাবেন তখন শুধু পেটের ব্যথার উপর নির্ভর করেই সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যাবেনা। এক্ষেত্রে আরো যে

উপর্স আছে সে গুলোও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যেমন- তীব্র ডায়রিয়া, ক্লান্তি ও ওজন হ্রাস।

স্ট্র্যানগুলেটেড আন্বিলিক্যাল হার্নিয়ার কারণে নাভির উপরে ব্যথা

স্ট্র্যানগুলেটেড আন্বিলিক্যাল হার্নিয়ার কারণেও অসেত সময় আমাদের পেটের চারপাশে বা উপরে বা নিচে এই ধরনের

ব্যথা দেখা দিতে পারে। সাধারণত দেখা যায় জখন একটি বাচ্চা জন্ম গ্রহণ করে তখন ডাক্তার তার নাভিরজ্জু কেটে দেন যা

সাধারণত গর্ভাবস্থায় একটি শিশুর জন্য যাযা যে পরিমাণ খাদ্য প্রয়োজন তা এই নালীল মাধ্যমে খাইয়ে থাকে। যে নালী

গুলো কেটে দেয়ার পর আস্তে আস্তে আস্তে নিরাময় লাভ করে। কিন্তু কোন কারণে অনেক সময় এই জায়গার মাংষপেশি

একবারে সুখায়না তা আস্তে আস্তে হার্নিয়া রোগের সৃষ্টি করে।

বদহজম হবার কারনে নাভির মধ্যে ব্যথা

সাধারণত বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বদহজম হচ্ছে নাভি ব্যথার প্রদান কারণ। কিন্তু এর ফলে যে ব্যথার সৃষ্টি হয় তা শুধু

নাভির চারপাশেই বিদ্যমান থাকে না। তা অনেকাংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার এর সাথে বমি বমি ভাবও হতে পারে।

এই ধরনের ব্যথা সাধারণত বেশিক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হয়না। কয়েক ঘন্টা পরে এমনিতেই সেরে যায়। খাবারের অনিয়মের কারণে

সাধারণত এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর কারণে নাভির ব্যথা

সাধারণত অ্যাপেন্ডিক্স হচ্ছে একটি ক্ষুদ্র অর্গান যা বড় ও ছোট অন্ত্রের মধ্যে সংযোগস্থলে অবস্থিত থাকে। প্রখ্যাত ডাক্তার

জনস হপকিনস তার মেডিসিনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন অ্যাপেন্ডিসাইটিস হচ্ছে অ্যাপেন্ডিক্সের প্রদাহ ও প্রায়ক্ষেত্র

এর প্রথম উপসর্গ হচ্ছে নাভির পাশে ব্যথা। তাই যদি কারও কোন কারণে এই অ্যাপেন্ডিসাইটির সমস্যা হয় তখন নাভির

চারপাশে বা উপরে নিচে ব্যথা হতে পারে।

পিত্তপাথর এর কারনে নাভির ব্যথা

সাধারণত দেখা যায় পিত্তথলিতে কোলেস্টেরল জমে অনেক সময় শক্ত স্তপ সৃষ্টি হয় আর সেটাকেই সাধারণত পিত্তপাথর

বলা হয়ে থাকে। এখানে সাথারণত একাধিক পাথর হতে পারে। ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টারের

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অধিকাংশ লোকই জটিলতা সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত পিত্তপাথর সম্পর্কে জানতে পারেন না। ডা.

মেসার বলেন, ‘চল্লিশোর্ধ্ব ও অতি ওজনের নারীদের মধ্যে পিত্তপাথর সবচেয়ে বেশি ধরা পড়ে । আর এ কারনেও অনেক

সময় আমাদের ব্যথা সৃষ্টি হয়ে থাকে।

নাভিতে ইনফেকশন হলে করণীয়

বেশ কয়েকটি কারণে অনেক সময় দুর্গন্ধযুক্ত সাদা পুঁজ নিঃসরণ হতে পারে আর এই অবস্থাকে নাভির ইফেকশন বলে।

আর এই রকম যদি শিশুর হয় তবে তাকে আমবিলিক্যাল সেপসিস বলে। এ রকম হলে সাধারণত চার পাশে লাল হয়ে যায়।

অনেক সময় দেখা যায় নাভি দিয়ে ক্রমাগত নিঃসরণ হতে। আর এটা হয়ে থাকে স্টেফাইলোকক্কাস নামক এক ধরনের

ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে। এই রোগটি বুঝার জন্য নাভির স্রাবের রুটিন ও কালচার পরীক্ষা করতে হবে। যদি কোন কারণে

এই রোগটি অতিমাত্রায় হয়ে যায় তবে তা নাভি থেকে লিভারে গিয়ে সমস্ত শরীরে তথা রক্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর এই

অবস্থা হলে তখন জন্ডিস , লিভারের ফোঁড়াসহ ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এ অবস্থাকে আমবিলিক্যাল সেপসিস বলা

হয়। আর তাই আমাদের উচিৎ জন্মের পরপরই নাভির যত্ন নেয়া। যদি সবসময় নাভি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যায় তাহলে

অনেক ক্ষেত্রেেই দেখা যায় এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।  প্রতিটা শিশুর জন্য দরকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে। যে

সকল শিশুর জন্মদান করে আমাদের তাদের জন্য নিরাপদ স্থান নির্ধারণ করা প্রয়োজন। যাতে করে শিশুটির মল-মূত্র

নাভিতে যেন না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখা। আর তাই সবসময় নাভির জায়গা শুকনো রাখা  এসব সাবধানতা অবলম্বন

করলে নাভিতে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। এর পরেও যদি কোন কারণে কোন শিশুর এই রোগটি দেখা দেয়

তাহলে দেরী না করে খুব জরুরী ভিত্তিতে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে এ রোগ ভালো হয়ে যায়।

যদি কোন ক্ষেত্রে রোগটি অল্পমাত্রায় হলে নাভির জায়গা বেটাডিন দিয়ে আস্তে আস্তে পরিষ্কার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে

স্পিরিট ব্যবহার না করাই উত্তম। সেই সঙ্গে পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক পাউডার প্রয়োগ করতে হয়। প্রয়োজনে

অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ বা ইনজেকশন চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। নাভির ঘাতে ঘাসের রস,

হলুদ বা কোনো ধরনের টোটকা ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। এটি শিশুর মঙ্গল তো নয়ই, বরং ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে

পারে।

নাভির উপরে ব্যথার কারণ এর  শেষ উপদেশ

নাভিতে ইনফেকশন উপরোক্ত লেখাটিতে যেভাবে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যদি আপনারা এই লেখাটি প্রথম থেকে

শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তবে আশাকরি কারণ আর নাভির সমস্যা সম্পর্কে জানার বাকি থাকবেনা আর তাই আমাদের

সবার উচিত বিশেষ করে নবজাতক বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কোন ভাবে অবহেলা করা যাবেনা তাদেরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে

রাখাই হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম প্রতিরোধ ব্যবস্থা এছাড়াও যদি অন্য কোন বিষয় আপনাদের প্রশ্ন থাকে বা জানার আগ্রহ থাকে

তবে আমাদের কি লিখতে পারেন আমরা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিব ধন্যবাদ সবাইকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার

জন্য।

About 24 Favor

Check Also

Meeting minutes writing format

Meeting minutes writing format: Who has engaged with NGO job maximum people need writings this …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *