ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা –সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা। যে লেখা টি
সবার জানা উচিত, কারণ আমাদের পরিচিত অনেকেই এই জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। এছাড়াও নিজেদের জানার
প্রয়োজন হলেও আমাদের জানা উচিত। তাই আজকে ক্যান্সার রোগীর খাবার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা
করব, কোন কোন ক্যান্সার রোগীর জন্য কি ধরনের খাবার গ্রহণ করতে হবে। কারণ এই রোগ হওয়ার পরও যদি একজন
রোগী সচেতন না হয় তাহলে এই রোগের ভয়াবহতা হবে অনেক কঠিন আকারে। তাই আসুন জেনে নেই একজন
মানুষের ক্যান্সার হলে তার খাদ্যতালিকায় কি কি থাকবে? সে বিষয়ে বিস্তারিত। আর এর জন্য প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত
ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা লেথাটি পড়তে হবে। আশা করি লেখাটি আপনাদের অনেক কাজে লাগবে।
ফুস ফুসে ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা
বেস কিছু গবেষনায় দেখা গেছে বর্তমানে অনেক কম বয়সী ছেলে মেয়েরও ফুস ফুসে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু
সিগারেট খেলেই এই রোগ হয় এটা ভূল ধারণা। অনেক সময় বায়ু দূষনের ফলেও এই রোগ হবার সম্ভাবনা আছে। আমরা
শুধু ঔষুদের উপর নির্ভর না হয়ে ভয়াবহ এই রোগ থেকে মুক্তির জন্য কিছু খাবার খেতে পারি । যে খাবার গুলো আমাদের
এই রোগ থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করবে বা এই রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে।
আপেল খেলে কি হয়? বা ফুস ফুসে ক্যান্সার রোধে আপেল
এই ফলটি অনেক ধরনের পুষ্টি গুনে ভরপুর। তাই প্রতিদিন নিয়মিত খাবার তালিকায় এই ফলটি রাখা প্রয়োজন। বিশেষ
করে এর মধ্যে যে খাদ্য উপাদান ফ্ল্যাভোনয়েডস আছে তা সাধারণক ক্যান্সার রোধী তাই যারা নিয়মিত বা পরিমাণ মত
আপেল খায় তাদের দেখা যায় ফুস ফুসে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
রসুনের উপকারিতা বা ফুস ফুসে ক্যান্সার রোধে রসুনের ভূমিকা
এই খাদ্যর রয়েছে বহু মাত্রিক উপকারিতা। তাই আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে বা নিরাময়ে রসুন খাওয়া প্রয়োজন।
আমরা অনেকেই জানিনা যে এই রসুনের মধ্যে রয়েছে ফুস ফুসে ক্যান্সার রোধ করার ক্ষমতা। তাই এর মধ্যে থাকা খাদ্য
উপাদান সালফাইড যা ফুস ফুসে ক্যান্সার হওয়া থেকে আমাদের বাঁচায়। তাই আমাদের প্রতিদিন নিয়ম করে পরিমাণ মত
রসুন খাওয়া দরকার।
ব্রকোলি খাওয়ার উপকারিতা বা ক্যান্সার রোধে ব্রকোলি
যত গুলো সবজি আছে তার মধ্যে অনেক সু-স্বাদু এবং উপকারি হলো এই সবজিটি। অনেক ধরনের পুষ্টি গুন রয়েছে এই
খাবারটিতে। তার মধ্যে সালফ্রোফেন ও এনজাইম রয়েছে যা সরাসরি ক্যান্সার প্রতিরোধ সহায়তা করে থাকে। তাই যাদের
খাদ্য তালিকায় এই খাবারটি থাক তাদের এই ধরনের রোগ সহজে হয় না।
লাল বেল পেপার খাওয়ার উপকারিতা বা ক্যান্সার রোধ
যদিও এই সবজিটি সহজেই পাওয়া যায় না। তাই খাওয়া অনেকটা কষ্টকর তার পরেও এই খাবারটি আমাদের খাওয়া
প্রয়োজন। তাই প্রতিদিন আমাদের এই ফলটি আমাদের খাওয়া প্রয়োজন। কারণ এই খাবারটি এমন একটি উপাদান রয়েছে
যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী আর এই উপাদানটি হলো ফাইটোকেমিক্যাল যা ফুস ফুস ক্যান্সার প্রতিরোধে
সহায়তা করে।
পালংশাক খাওয়ার উপকারিতা বা ক্যান্সার প্রতিরোধে পালংশাক
অনেক উপকারি এই সবজিটি আমাদের চারপাশে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। তাই আমরা ইচ্ছে করলে খুব সহজেই এই
খাবারটি আমরা খেতে পারি। আর এই সবজিটি আমাদের ফুস ফুসে ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে থাকে। এর যে খাদ্য
উপদান ফোলেট ভিটামিন এবং লুটেইন থাকে যা এই ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।
লিভার ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা
যাদের এই সমস্যা হয়নি তারা হয়তবা বুঝতে পারবেনা এই রোগের ভয়বহতা। তাই এই ধরনের রোগ যেন না হয় তার জন্য
আমাদের সবসময় সর্তক থাকা প্রয়োজন। আসুন আমরা কিছু খাবার গ্রহনের মাধ্যমে কিভাবে এই ধরনের রোগ প্রতিরোধ
করতে পারি সে বিষয়ে আলোচনা করবো। যদি কেউ নিয়ম করে নিচের খাবার গুলো গ্রহণ করে তবে খুব সহজেই যে কেউ
এই ধরনের রোগ থেকে মুক্ত থাকবে ইনশাল্লাহ।
ওটমিল খাওয়ার উপকারিতা বা লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ
সাধারণত আঁশ জাতীয় খাবার পাকস্থলীর হজমের জন্য অনেক সহায়ক। আর এই ওটমিল হলো আঁশ জাতীয় খাদ্যর মধ্যে
অন্যতম। তাই যদি বেশি আঁশ জাতীয় খাদ্যর প্রয়োজন হয় তবে আমরা এই খাদ্যটি গ্রহণ করতে পারি। তাছাড়াও এই খাদ্য
হজম শক্তি বৃদ্ধি করা সহ শরীরের চর্বি কমাতে সহায়তা করে যা লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
কফি খাওয়ার উপকারিতা বা লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
যারা কফি পানে অভ্যস্থ তাদের জন্য এটি হতে পারে একটি সুখর। কারণ অনেক গবেষনায় দেখা গেছে যে যারা প্রতিদিন
নিয়ম করে ২ থেকে ৩ কাপ কফি পান করে তাদের লিভার ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি কম থাক। কারণ কফির কিছু খদ্য
উপাদান এর অন্যতম কারণ। অনেক সময় দেখা যায় অ্যালকোহল পান কারিদের যে সকল ক্ষতি হয় কফি তা নিরাময়ে
সহায়তা করে থাক।
গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা বা ক্যান্সার প্রতিরোধ
সাধারণত অনেকেই গ্রিন টি পছন্দ করেন। কিন্তু অনেকেই জানেনা এই টি খাওয়ার ফলে কি উপকার হয় । তাই তারা যদি
জানতো তবে দেখা যেত অনেকেই অন্য ধরনের টি খাওয়া বন্ধ রেখে এই গ্রিন টি খাওয়া শুরু করে দিত। কারণ এর মধ্যে
এমন কিছু খাদ্য উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের মারাত্বক রোগ ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। আর এই খাদ্য
উপাদান হলো -অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যাটেচিন। তাই নিয়মিত গ্রিন টি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলন।
আমন্ড বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
সাধারণত আমরা অনেক ধরনের বাদাম খেয়ে থাকি। তবে আমন্ড বাদাম এর মধ্যে এমন কিছু উপাদান থাকে যা আমাদের
লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। আর যে উপাদান গুলো এই রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা কর তাদের
মধ্যে অন্যতম হলো ভিটামিন ই ফ্যাটি লিভার যা লিভারের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করে থাকে।
পালংশাক খেলে কি হয়? লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ
যদি কেউ লিভার কে ভাল রাখতে চায় তবে তার খাদ্য উপাদনের মধ্যে গ্লটাথিয়োন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
প্রয়োজন তাই এই ধরনের খাদ্য উপাদান রয়েছে সেই ধরনের খাবার খাওয়া প্রয়োজন। আর এই ধরনের খাধ্য উপাদান এর
প্রধান উৎস হলো পালংশাক। তাই যারা নিয়মিত এই সবজিটি খান তাদের এই ধরনের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা।
ব্লুবেরি খাওয়ার উপকারিতা
এই ফলটি মানুষের লিভারকে ভাল রাখতে সহায়তা করে । কারণ এর মধ্যে যে পুষ্টি গুন রয়েছে তা লিভারকে ভাল রাখতে
সহায়তা করে। যেমন এর মধ্যে রয়েছে পলিফেনলস যা লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই নিয়মিত যারা এই ফলটি খায়
তারা অনেক বেশি সুস্থ্য থাকে।
ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা
আমাদের যারা মা বোন আছে তারা এই রোগের সন্মুখিন বেশি হয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের দুদ্ধ খাওয়ার বাচ্চা আছে এবং
বয়স ২৫ থেকে ৫০ এর মধ্যে তাদের এই ধরনের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। তাই যদি একটু সচেতন হওয়া যায় তবে খুব
সহজেই এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। আজ আমি আপনাদের এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যা
আপনাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে। নিচে বেশ কয়েকটি খাবার বিষয়ে বলবে যে খাবার গুলো
গ্রহণ করলে আপনি খুব সহজেই ব্রেস্ট ক্যান্সার থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
বাঁধাকপি খাওয়ার উপকারিতা বা ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ
আমরা খুব সহজেই খেতে পারি এই সবজিটি যা আমাদরে বাজারে প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায় । কিন্তু এর উপকারিতা না
জানার জন্য অনেক সময় আমরা খেতে চাইনা। তাই যারা বাঁধাকপি খায় তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে কাজ করে
থাকে কারণ এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন প্ল্যান্ট কম্পাউন্ড।
উজ্জল রংঙের সবজি খাওয়ার উপকারিতা বা ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ
এই ধরনের সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ক্যারোটিনয়েড যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই
প্রয়োজন তাই প্রতিদিন খাওয়ার তালিকায় এই ধরনের সবজি থাকা প্রয়োজন। আর এই ধরনের সবজি খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার
কে প্রতিরোধ করা যায়। আর এই সবজি গুলো হলো -তরমুজ ,কমলা,লাল লন্ক,মিষ্টি আলু,টমেটো ও গাজর ইত্যাদি।
আখরোট কেন খাওয়া প্রয়োজন বা ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ
এই খাবারটি হলো প্রচুর আঁশ যুক্ত খাবার ও এর মধ্যে রয়েছে ক্যালোরি তাই এই খাবারটি খেলে টিওমার প্রতিরোধে সহায়তা
করে । আর যে খাবার গুলো টিওমার প্রতিরোধ করে থাকে তা ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে থাকে। তাই এক গবেষনায়
দেখা গেছে যারা নিয়ম করে আখরোট খায় তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
অলিভ অয়েল খাওয়ার উপকারিতা বা ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ
যদিও আমাদের দেশে এই খাবারটি প্রচলিত নেই। তবে আমাদের এই খাবারটি গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে
সালাদের সংঙে খাওয়া অধিক ভাল। কারণ এই খাবারটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের ব্রেস্ট
ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার উপকারিতা বা ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ
সামুদ্রিক মাছের মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। তাই বিভিন্ন গবেষনায়
দেখা গেছে যারা সপ্তাহে নূন্যত ২ দিন সামুদ্রিক মাছ খায় তাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আমাদের
প্রয়োজন নূন্যতম সপ্তাহে ২ হলেও খাবার তালিকায় সামুদ্রিক মাছ রাখা।
পাকস্থলী ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা
বর্তমানে অনেকেরই দেখা যায় পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়ে থাকে। বিষেশ করে যাদের বয়স ৫০ এর অধিক হয় তাদের এই
রোগ হবার সম্ভাবনা বেশি থকে। আর তাই এই সময়টায় খাবার খুব সাবধানতার সাথে খেতে হয়। ডাক্তারগণ এ সময় তাদের
খাবার-দাবারে অনেক সতর্ক হওয়ার জন্য বলেন, তাই এই সময়টায় সতর্কভাবে খাবার খেতে হয়। যেমন অধিক মসলাযুক্ত
খাবার ত্যাগ করা, প্রসেস করা খাবার যেমন বিভিন্ন ধরনের শিক কাবাব। এছাড়াও আরো রয়েছে রেড মিট বিশেষ করে
খাসির মাংস ও গরুর মাংস। এই জাতীয় খাবার সবসময় আমাদের পরিত্যাগ করা উচিত। কারণ এই সকল খাবার ক্যান্সারের
ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি করে থাকে। তাই এ সময়টাতে সাবধানতার সাথে খাবার দাবার খাওয়া উচিত। অন্যান্য ক্যান্সার রোগীর
জন্য যে খাবার গুলোর কথা বলা হয়েছে সেই খাবার গুলো পাকস্থলী ক্যান্সার রোগীর জন্যও প্রযোয্য। তাই উপরোক্ত
খাবারগুলো ক্যান্সার নিরাময়ের জন্য সহযোগিতা করবে। সেক্ষেত্রে খাবার গুলো যেন কোন ভাবেই অতিরিক্ত ঝাল যুক্ত
যেন না হয়।
ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা এর শেষ উপদেশ
উপরোক্ত ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা লেখাটি আশা করি সবারই কাজে লাগবে। আর তাই আপনাদের যদি এই
লেখাটা অনেক উপকারে এসে থাকে তবে সবার সাথে শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি। আর উপরোক্ত বিষয়গুলো লক্ষণ
রেখে আপনার খাবার দাবার পরিবর্তন করলে মরণব্যাধি থেকে আমরা সহজেই রক্ষা পেতে পারি । তাই আসুন নিজে সুস্থ
থাকি, সবাইকে সুস্থ রাখার জন্য চেষ্টা করি। সবাই যেন সুন্দরভাবে এই পৃথিবীতে বসবাস করতে পারি। প্রথম থেকে শেষ
পর্যন্ত ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা লিখাটি পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমাদের সাইটে আরো অনেক
স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখা আছে, যেগুলো পড়তে পারেন, আশা করি ভালো লাগবে।
One comment
Pingback: যৌন সমস্যার স্থায়ী সমাধান নিয়ম ও গল্প