পিঠে ব্যথা হলে করণীয় এই লেখায় আমরা আলোচনা করবো যে নানা কারণে আপনার পিঠে ব্যথা হতে পারে। আর হঠাৎ
করে ব্যথা হলেই চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। যদি দেখেন আপনার ব্যথাটি অনেকদিন ধরে স্থায়িত্ব হচ্ছে তবে ভালো একজন
ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এছাড়াও আজকে আমরা পিঠের বিভিন্ন অংশের ব্যথা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
যে আলোচনা পড়লে আপনি আপনার পিঠের ব্যাথার সমাধান এখান থেকে পেয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ। তাই আসুন আপনার
পিঠের কোন অংশে ব্যথা করলে কি ধরনের সমস্যা হতে পারে, সে বিষয়ে পিঠে ব্যথা হলে করণীয় লেখায় বিস্তারিত
আলোচনা করি। আপনার পিঠে যদি ব্যাথা জনিত কোন সমস্যা থাকে তবে আমাদের দেওয়া এই নিচের আলোচনা আপনার
জন্য অনেক উপকারী হতে পারে।
পিঠের ডান পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ
অনেক গুলো কারণে আমরা প্রায়ই পিঠের বিভিন্ন অংশে ব্যাথা অনুভব করি। সব ধরনের বয়সের মানুষ এই ব্যাথা অনুভব
করতে পারে তবে যাদের বয়স একটু বেশি বিশেষ করে ৪০ এর অধিক তাদের এই ধরনের সমস্যা একটু বেশি হয়ে থাকে বা
ঘন ঘন ব্যাথা হতে দেখা যায়। যে সকল কারণে আমাদের পিঠে ব্যাথা হতে পার তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য সমূহ হলো-
১. কোন ভারি কিছু জাগাতে গিয়ে পিঠে বা কোমরে ব্যথা পেলে।
২. রাত্রে ঘুম ঠিক মত না হলেও পিছনে ব্যথা হতে পারে এটা সাধারণত যাদের বয়স বেশি তাদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায় ।
৩. ঠান্ডা লাগলেও পিঠে ব্যথা হতে পারে।
৪. পিঠের মেরুদন্ডের সমস্যা হলেও পিঠে ব্যাথা হতে পারে। এক্ষেত্রে সাধারণত ডান পাশে ব্যথা হয়ে থাকে।
৫. হার্ট আ্যটাকের আগেও পিঠে ব্যথা করতে পারে।
পিঠে ডান পাশে ব্যথা হলে করণীয়
পিঠের ডান পাশে ব্যথা হলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাওয়া প্রয়োজন । কারণ সে আপনাকে ভালো পরামর্শ দিতে
পারবেন। আপনার কি হয়েছে ও আপনার কি করা প্রয়োজন। নিচে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি দেওয়া হলো। উপরোক্ত পদ্ধতিতে
যদি আপনার ব্যথা না যায় বা না কমে তবে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।।
১. পিঠের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিশ্রাম। বিশ্রামই হচ্ছে সব রোগের প্রথম চিকিৎসা।
২.যদি আপনার ভালো ঘুম হয় তবে তা পিঠের ব্যথা নিরাময়ের জন্য উপকারী।
৩. সমান বিছানায় সোজা হয়ে শুতে হবে। অবশ্যই মাথার নিচে নরম বালিশ দিন।
৪. যেখানে বেশি ব্যথা করবে সেখানে গরম সেক দিরে পারেন। এর জন্য আপনি ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন।
৫. সকল মাংসপেশি সতেজ রাখতে অবশ্যই প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করুন।
৬. আপনার আগে যদি পিঠে ব্যথা বা কোমরে ব্যথার সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ভারি কোনো কিছু তোলার ক্ষেত্রে সতর্ক হোন। ভারি কোন কিছু উঠাতে গেলে আগে হাঁটু ভাজ করে নিন। তাহলে ভারি বস্তুটির চাপ আপনার মেরুদণ্ড ও পেশিতে প্রভাব ফেলবে না।
যদিও অল্প একটু ব্যবস্থা নিলেই পিঠের ডান পাশের ব্যথা থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়। তবে কোন কারণে যদি দেখা যায় তা
দীর্ঘদিন যাবত স্থায়ীত্ব হচ্ছে তবে অবশ্যই ভাল একজ ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
পিঠে বাম পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ
অনেক গুলো কারণে পিঠের বাম পাশে ব্যাথা হতে পারে। যে মন তার মধ্যে রয়েছে আমাদের পিঠে হাড়, পেশী, ডিস্ক,
টেন্ডন এবং লিগামেন্টের একটি জটিল গঠন রয়েছে যা আমাদের শরীরকে সমর্থন করতে, এবং আমাদের চারপাশে
চলাফেরা করতে সক্ষম করে। যদিও পিঠে ব্যথা প্রধানত অনেক কারণে হয়, কিছু ক্ষেত্রে পিঠে ব্যথার কারণ অস্পষ্ট থাকে।
পিঠে ব্যথা মূলত যে সব কারণে হয়ে থাকে তার মধ্যে নিম্নোক্ত হলো উল্লেখযোগ্য কারণ যেমন-
- টেনশন করার কারণে।
- ডিস্ক সার্জারি করার কারণে।
- অনেক সময় স্ট্রেন বা আঘাতের কারণেও হয়ে থাকে।
- আমাদের মেরুদণ্ডের অংশগুলি ডিস্ক, তরুণাস্থি-সদৃশ প্যাডগুলির সাথে কুশনযুক্ত। এই উপাদানগুলির যেকোনো একটির সাথে সমস্যা হলে পিঠে ব্যথা হতে পারে।
- মেডিক্যাল অবস্থায় ডিস্কের ক্ষতি হতে পিঠের বাম পাশে ব্যাথা হতে পারে। ,
- অস্টিওপোরোসিসের মতো মেরুদণ্ডের সমস্যাও পিঠের বাম পাশে ব্যথা হতে পারে।
আরো যে সকল কারণ রয়েছে সেগুলো হলো
- পেশী খিঁচুনি কারণে পিঠির বাম পাশে ব্যাথা হতে পারে।
- ডিস্ক হার্নিয়েশন হবার কারনেও হতে পারে।
- যদি কোন কারণে পেশী টান লেগে যায় তবে ব্যাথা হতে পারে।
- শরীরে হিপ আর্থ্রাইটিস এর কারণেও হতে পারে।
- কোন কারণে পতন, ফ্র্যাকচার বা আঘাত কারণেও বাম পাশে ব্যাথা দেখা দিতে পারে।
- যদি চাপা লিগামেন্ট বা পেশী থাকে তবে বাম পাশে ব্যাথা দেখা দিতে পারে।
- ক্ষতিগ্রস্ত ডিস্ক এর কারনেও ব্যাথা দেখা দিতে পারে।
পিঠে বাম পাশে ব্যথা হলে করণীয়
যদি কোন কারণে আপনার পিঠের বামপাশে ব্যাথা হয়ে যায় বা আপনি নিজেকে ব্যাথা থেকে মুক্ত রাখার জন্য সচেষ্ট তবে
নিম্নোক্ত পদ্ধতি সমূহ অনুসরণ করে খুব সহজেই ব্যাথা থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। আর তার জন্য আপনাকে যে সকল
কাজ করতে হবে তা নিম্নে বিস্তাারিত আলোচনা করা হল।
পিঠের ব্যাথা প্রতিরোধে প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করা
কম প্রভাবের অ্যারোবিক্স দিয়ে শুরু করুন এবং চালিয়ে যান (এটি আপনার পিঠে ঝাঁকুনি দেওয়া উচিত নয়)। এটি আপনার
পেশীগুলিকে আরও ভাল কার্য সম্পাদন করার অনুমতি দিয়ে আপনার পিঠের সহনশীলতা এবং শক্তি বাড়াতে সাহায্য
করতে পারে। সাঁতার বা হাঁটা ভালো বিকল্প। আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন কোন ক্রিয়াকলাপ আপনি লক্ষ্য করতে
পারেন।
পিঠের ব্যাথা নিরাময়ে বা প্রতিরোধে পেশী শক্তি এবং নমনীয়তা বৃদ্ধি
আপনি পেট এবং পিঠের পেশীর ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে পারেন যা আপনার কোরকে শক্তিশালী করে, পেশীগুলিকে
সাহায্য করে যাতে তারা আপনার পিঠকে শক্তিশালী করতে একসাথে কাজ করতে পারে। এক্ষেত্রে শুধু একজন ডাক্তার
অথবা আপনার একজন শারীরিক থেরাপিস্ট বলতে পারেন কোন ব্যায়াম আপনার জন্য বেশি কাজ করতে পারে।
পিঠের ব্যাথা প্রতিরোধে শারীরিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
স্থূল বা অতিরিক্ত ওজন পিছনের পেশীগুলিকে চাপ দিতে পারে। আপনার ওজন বেশি হলে, সেই অতিরিক্ত কিলো কমিয়ে
দিলে পিঠের ব্যথা প্রতিরোধ করা যায়।
পিঠে ব্যাথার হোমিও ঔষধ
অনেক গুলো কারণে আমাদের পিঠের ডান বা বাম পাশে ব্যাথা হতে পারে। আবার অনেক সময় মেরুদন্ডেও ব্যাথা দেখা
দিতে পারে। তবে যে সকল কারণেই ব্যাথা দেখা যাক না কেন প্রথমেই আমাদের ভাল একজন হোমিও ডাক্তারের কাছে
গিয়ে পরমর্শ গ্রহণ করা দরকার এবং তাদের পরমর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা প্রয়োজন। তা নাহলে আমরা অর্থিক ও
শারীরিক দু -ভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারি। যদি তেমন কোন মেজর সমস্য না থাকে তবে নিম্নোক্ত ওষুধ সমূহ আপনার
ব্যাথার জন্য সেবন করতে পারেন।
- ADEL-39
- COLOCYNTHIS-Q
- BERBERIS VUL-Q
- CIMICIFUGA-30
- CALCARIAFLUOR-6X
পিঠে ব্যথা হলে করণীয় এর শেষ উপদেশ
উপরোক্ত পিঠে ব্যথা হলে করণীয় লেখাটি আপনার অনেক কাজে লেগেছে এ প্রত্যাশা রেখে আজকের মতো এখানে
শেষ করতে যাচ্ছি। তবে আপনাদের কাছে একটি অনুরোধ রইল, আপনাদের যদি আরো কোন ধরনের লেখা প্রয়োজন হয়
তবে আমাদের কাছে লিখতে পারেন, বা আমাদেরকে জানাতে পারেন । আমরা আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী পরবর্তীতে
লেখা পোস্ট করব। যে লেখাকে আপনার সমস্যার সমাধান করবে । বিভিন্ন মানুষজনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়েই
কাজ করা আমাদের লক্ষ্য । আমরা চাই আমাদের এই লেখা দ্বারা আরো বেশি মানুষের উপকার হোক। ধন্যবাদ আপনাকে
কষ্ট করে আমার এই পিঠে ব্যথা হলে করণীয় লেখাটা পড়ার জন্য।
আরো পড়তে পারেন
১. টাকা নিয়ে উক্তি ও কাকে বলে।
৫. স্কুলের বন্ধুদের নিয়ে উক্তি
This post exceeded my expectations, appreciate it.