বাছাই করা আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি ও দোয়া সমূহ

আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি: এই মহাবিশ্বের একমাত্র মালিক মহান রব্বুল আলামিন । যার গুনগান করলে আজীবনেও শেষ হবার নয় । আমার আপনার পালন কর্তা আল্লাহতালা। যিনি একমাত্র শ্রেষ্ঠ, সেই মহান আল্লাহতালা আমাদেরকে এবং পৃথিবীর যত প্রাণীকুল আছে সবার হেফাজতকারী। আমরা একমাত্র তাকেই বিশ্বাস করব, এবং তার ওপর ঈমান আনব। তিনি একমাত্র আমাদের পালনকারী।

পৃথিবীতে আর কোন ইলাহ নাই আল্লাহ ব্যতীত। এই বিশ্বাসের উপরেই মূলত আমাদের আকিদা থাকা দরকার। আমরা যেন একমাত্র আল্লাহর উপরই বিশ্বাস করি । একমাত্র আল্লাহর হুকুম ছাড়া পৃথিবীর কোন কাজ সংগঠিত হয় না। একমাত্র আল্লাহই আমাদের ভাল কিংবা মন্দ ঘটাতে পারে, এই বিশ্বাসের উপরে আমাদের সবসময় বলিয়ান থাকা একান্ত প্রয়োজন।

আর তাই আজকে আমরা আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে এখানে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ  কথা আলোচনা করবো যে গুলোর মাধ্যমে আপনার আল্লাহর উপর  ঈমান আরো পরিপূর্ণ হবে । তাই আসুন এখানে আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার উপায় দোয়া করার বিষয় সমূহ, এবং আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি সমূহ সুন্দর ভাবে আলোচনা করি। যাতে করে আমাদের ঈমান-আমল আরো মজবুত হবে।

তাওয়াক্কুল আল্লাহ বা আল্লাহর উপর ভরসা কি?

এই শব্দের অর্থ এক মাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করা । ইসলামে তাওয়াক্কুল একটি ইবাদত। আর আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন

উপাস্যের উপর তাওয়াক্কুল  করা শিরক হিসেবে গন্য হবে। ইসলামে আল্লাহর উপর ভরসা হল মানুষ কল্যাণকর বিষয়ে

অর্জনের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করবে। আর ফলাফলের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা করবে এবং তাকদিরের উপর বিশ্বাস

রাখবে।

আল্লাহর উপর ভরসা  নিয়ে উক্তি

আমাদের উচিত, প্রতিটা কাজে ও প্রতিটা কথায় একই সাথে প্রতিটা জায়গায় আল্লাহর উপর ভরসা করে পথ চলা। আমরা

ভরসা করব একমাত্র আল্লাহর উপরে। জগতে আমরা যে কাজ গুলো করিনা সেগুলো হলো মাত্র ওসীলা।

আমাদের মূল ভরসা থাকবে আল্লাহর উপর। কোন জিনিস বা ব্যাক্তির উপর আমরা কখনই ভরসা করব না, আমরা শুধু

আল্লাহর উপর ভরসা করব । আর যত কাজ করব সেটার ফল আমরা আল্লাহর কাছে চাইবো।

তুমি আল্লাহর ভয়ে যা কিছু ছেড়ে দিবে, তোমাকে আল্লাহ এর চেয়েও ‍উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবে। – প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সোঃ)

যে লোক অসৎ সেই লোক কাউকে সৎ মনে করে না সে সবাইকে নিজের মত মনে করে- প্রিয় সাহাবী হযরত আলী(রাঃ)

নিজে যে, তার নিজের সতর্কতা অবলম্বন না করে , তার দেহরক্ষী তাকে বাঁচাতে পারে না- হযরত আলী (রাঃ)

আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে আসা প্রতিটি শাস্তিই সম্পূর্ণরূপে ন্যায়বিচার তাঁর পক্ষ থেকে আসা প্রতিটি কল্যাণ পরিপূর্ণভাবে দয়া বা রহমত।- ইমাম ইবনে তাইমিয়া ( মাজমু’ফাতাওয়া ১০/৮৫)

পরম করুনাময় মহান আল্লাহকে ভয় করো । কারণ যে ব্যাক্তি তাঁকে ভয় করে সে কখনো একাকীত্ব অনুভব করে না- উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)

আপনার করা পাপগুলো ,মহান ক্ষমাকারী আল্লাহর দয়া থেকে বড় নয়- ড. বিলাল ফিলিপ্স

সবসময় নিজেকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে প্রত্যেকটি বিষয়ে মহান আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। কারণ আমার আপনার জন্য কোনটি কল্যানকর তা তিনিই সবথেকে বেশি ভাল জানেন- ডা. বিলাল ফিলিপ্স

মহান আল্লাহপাকের প্রতি, আমাদের ভালবাসা যতই বৃদ্ধি পেতে থাকবে । দুনিয়ার প্রতি তত ভালোবাসা কমতে থাকবে- ড. বিলাল ফিলিপ্স 

সে কিছুই পেলোনা যে আল্লাহকে হারালো। যে আল্লাহকে পেলো সে সবকিছুই পেল- সংগৃহীত

আল্লাহর উপর ভরসা করার দোয়া

আল্লাহর প্রেরিত রাসূল হযরত মোহাম্মদ (সা:) আমাদের কে শিক্ষা দিয়ে গেছেণ কিভাবে আমরা বিভিন্ন আপদ বিপদে আল্লাহর উপর ভরসা করবো এবং মহান আল্লাহর কাছে দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করবো। প্রতিটা কাজেই মহান আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে।

আর এর জন্য আমাদের বেশি বেশি করো তার উপর যেন ভরসা করতে পরি তার জন্য নামাজ পড়ে ,নফল এবাদতকরে, বিভিন্ন দোয়া দরূদ পড়ে( যেগুলো নিচে দেয়া হয়েছে) আল্লাহর কাছে ভরসা করতে হবে।

বিপদে আল্লাহর উপর ভরসা

যখন আমাদের উপর ঘোর বিপদ আসন্ন হয়, তখন আমরা পরম বন্ধু আল্লাহকে ভুলে যাই । কিন্তু বিপদে রক্ষা করার মালিক যিনি, তাকে স্মরণ করিনা। আর তাই আপনি যাতে মহা বিপদেও আল্লাহর উপর ভরসা করতে পারেন সেই ক্ষেত্রে এখানে কিছু হাদিস ও ঘটনা তুলে ধরা হলো, যা আপনার বিপদে আল্লাহর উপর ভরসা করতে সাহায্য করবে।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এরশাদ করেন “ আমার উন্মত থেকে ৭০ হাজার ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে । আর এদের অন্যতম গুণ হলো এই যে- তারা আল্লাহর ওপর ভরসা করে” (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

 মহান আল্লাহতায়ালা পাক কুরআনের সুরা তালাক : আয়াত ২-৩ বলেন” যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য মুক্তির পথ তৈরি করে দেন। আর তিনি তাক এমন উৎস থেকে রিজিক দেবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না । আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াকূল বা ভরসা করে. আল্লাহ তার জন্য যতেষ্ট”

আল্লাহর ভয় নিয়ে উক্তি

মহান আল্লাহতালা শুধু রক্ষাকরীই নয় সে কঠিন বিচার কারী। রোজ হাসরের ময়দানে তিনি বিচারক হিসেবে আমাদের সামনে হাজির হবেন। আর তার বিচারে যিনি খারাপ তারা কোন প্রকারে ছাড় পাবেনা। আর তাই তিনি কুরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াতে এই বিষয়য়ে বর্ণনা দিয়েছেন। আমরা যাতে করে সেই কঠিন দিনে মহান আল্লাহর বিচারে ধরা না পরি।

আর তার জন্য আল্লাহর ভয় সবসময় আমাদের মনে রাখা উচিত। যদি আমরা আল্লাহতালার ভয় অন্তরে রাখি তাহলে পাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকতে পারবো। তাই প্রতিনিয়ত আমাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকা দরকার। নিচে কিছু আল্লাহর ভয় নিয়ে  উক্তি প্রদান করা হলো।

আল্লাহকে আমি সবথেকে বিশি ভয় পাই। এর পর সেই মানুষকে ভয় পাই যে মহান আল্লাহকে মোটেই ভয় পায় না।- বিখ্যাত কবি শেখ সাদী

যদি কোন ব্যক্তি মানুষেকে দয়া না করে তবে আল্লাহতায়ালা তাঁর উপর রহমত বর্ষণ করে না- আল হাদিস

মদপান থেকে তোমরা সবসময় বিরত থাক। কারণ এটি যাবতীয় অপকর্মের চাবি- আল হাদীস

আপনি যে ছেলের সাথে বা মেয়ের সাথে আজ  হারাম কাজে লিপ্ত বিচার দিবসে দেখবেন সেই আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছে- ডক্টর বিলাল ফিলিপ্স

আল্লাহ যে স্থানে থাকা নিষিদ্ধ করছেন সেই জায়গায় আপনার উপস্থিতি এবং আল্লাহ যেই জায়গায় থাকতে আদেশ করছেন সেখানে আপনার অনুপস্থিতি ব্যাপারে সাবধান হোন- আবু হাজিম ( আল- হিলইয়াহ ৩/২৩৪)

যে ব্যক্তি একাই একটি শহরকে দখল করে ফেলে নিশ্চয়ই তার চেয়েও শক্তিশালী সেই ব্যক্তি যে নিজের কামনাকে জয় করে- সুলাইমান বিন দাউদ ( হিলইয়াহ আল-আউলিয়া ৬/১৭০৭)

তুমি যখন দেখবে, তোমার নামাজের মধ্যে অন্তর উপস্থিত থাকছে না ,তখন বুঝতে হবে এটাই হলো ইমানের দূর্বলতার কারণ ।আর তাই কঠোর পরিশ্রশ করো নিজের ঈমানকে মজবুত করার জন্য- ইমাম ইবনু কুদামাহ আল মাকদিসি (রহঃ)

অভিশপ্ত সেই ব্যক্তি যে মরে গেল অথচ তার খারাপ কাজগুলো পৃথিবীতে রয়ে যায়- বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু বকর (রাঃ)

কষ্ট নিয়ে ইসলামিক উক্তি

সুখ ও দুঃখ মানুষের জীবনে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আল্লাহর হুকুমে আমরা কখনো হাসি আবার কখনো কাঁদি। মহান আল্লাহতালা অনেক সময় আমাদের কষ্ট দিয়ে পরিক্ষা করে থাকে। আর তাই  এই কষ্ট নিয়ে ইসলামে রয়েছে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা। আমরা সেই ইসলামিক দিক নির্দেশনা মেনে সকল  প্রকার কষ্টে  ধৈর্য ধারণ করবো।

যেন আমরা ধৈর্যের সাথে সকল কষ্ট মোকাবেলা করতে পারি । আর এর জন্য এখানে কিছু ইসলামিক উক্তি দেয়া হলো যেগুলো আপনাকে ধৈর্যধারনে সহায়তা করবে।

ধৈর্য হলো এমন একটি গাছ যে গাছের সারা অঙ্গে কাটা কিন্তু এর ফল অনেক মজাদার- আল হাদিস

পরম করুনাময় আল্লাহতায়ালার অনুগত্য করা ছাড়া ,অন্য কোন মাধ্যমে আল্লাহর সাথে কোন ব্যাক্তির সম্পর্ক পরিপূর্ণতা লাভ করবে না- হযরত ওমর (রাঃ)

আল্লাহর উপর ভরসা করার ফল

একমাত্র আল্লাহর উপর যারা ভরসা করে তাদের ভাল ফল নিশ্চিত । আমরা যদি যে কোন বিষয়ে বা পরিস্থিতিতে মহান আল্লাহপাকের উভর ভরসা করি তবে সে নিজেই আমাদের সাহায্য কারী হয়। বিভিন্ন সময়ে অনেক ঘটনা আছে আল্লাহর উপর ভরসা করার ফলের আমরা সেই ঘটনা গুলোর মধ্যে থেকে বাছাই করে দু-একটি ঘটনা এখানে বর্ণনা করবো যা আপনার আমার ঈমান আরো মজবুত করবে।

এক হাদিসে হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন’ তোমরা যদি প্রকৃতভাবেই আল্লাহতালার ওপর নির্ভরশীল হতে তাহলে পাখিদের যেভাবে রিজিক দেয়া হয়, সেইভাবে তোমাদেরকেউ রিজিক দেয়া হতো। পাখি যেমন সকালবেলা খালি পেটে বের হয় আর সন্ধা বেলায় ভরা পেটে ফিরে আসে”

 মহান আল্লাহ পাক তার পবিত্র কুরঅন শরীফের সুরা মায়িদা : আয়াত -২৩ এ বলেন ” তোমরা যদি প্রকৃতই মুমিন হয়ে থাক, তাহলে একমাত্র আল্লাহর উপরেই ভরসা কর” 

সূরা ইমরান : আয়াত -১৬০ এ পরম করুনাময় আল্লাহ পাক বলেন “ যদি আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করে থাকেন তবে কেউ তোমাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না। আর যদি তিনি তোমাদের সহায়তা না করেন , তবে তিনি ছাড়া কে আছে যে তোমাদের সাহায্য করবেন? মুমিনদের শুধুমাত্র আল্লাহর উপর নির্ভর করা উচিত”

সূরা নহল: আয়াত নাম্বার ৯৯ যে খানে আল্লাহপাক বলেন “ নিশ্চয়ই তাদের উপর শয়তানের কোন শক্তি নেই যারা ঈমান আনে এবং স্বীয় প্রতিপালকের উপর ভরসা করে”

আরেক আয়াত আহযাব: আয়াত নং ৩  আল্লাহ বলেন” আপনি আল্লাহর উপর ভরসা করুন । মূলত তত্ত্ববধায়ক হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ঠ” 

আল্লাহ সর্বোত্তম সাহায্যকারী

আল্লাহ যে একমাত্র সর্বোত্তম সাহায্যকারী । তার অনেক প্রমান আল্লাহতালা পৃথিবীতে দিয়েছেন। একমাত্র আল্লাহ পারেন

যে কোন বিপদ থেকে আমাদেরকে রক্ষা করতে। আর তাই যুগে যুগে অনেক ঘটনা ঘটে গেছে, যেখানে আল্লাহ পাক তার

দয়ায় মানুষদেরকে রক্ষা করেছে। তাই আমরা যদি রক্ষা পেতে চাই একমাত্র আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা প্রয়োজন।

কারণ মানুষের কাছে কিছু চাইলে মানুষ কষ্ট পায় কিন্তু আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে আল্লাহ খুসি হয়। তাই যে কোন বিপদ

আপদে একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবো। কারণ তিনিই একমাত্র সর্বোত্তম সাহায্যকারী।

আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার আমল

প্রতিটা কাজের যেমন একটি নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। ঠিক তেমনি আল্লাহর কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার অনেক উপায় বা নিয়ম আছে। আর সেই নিয়মগুলোকে আমরা যদি প্রতিনিয়ত আমল হিসেবে নেই, তাহলে সে আমল দ্বারা আমরা খুব সহজেই আল্লাহতালার সাহায্য পেয়ে যাব।

তাই আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার জন্য যে কতগুলো আমল আছে, তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ যে আমলতা খানে আমরা উল্লেখ করেছি। যা দ্বারা মহান রব্বুল আলামীনের সাহায্য আপনি খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।

হযরত বুরইদা (রাঃ) বলেন আমাদের প্রিয়নবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এক ব্যক্তিকে এ রূপ বলতে শুনলেন যে- যার বাংলা উচ্চারণ-

’’আল্লাহুন্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্নাকা আংতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আংতাল আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ”

যার বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং জানি যে তুমিই আল্লাহ; ‍তুমি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই। তুমি এক, অনন্য, মুখাপেক্ষীহীন ও অন্যের নির্ভরস্থল। তুমিই সেই মহান সত্ত্বা যে নাকি কাউকে জন্ম দেননি আর কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। আর তার সমকক্ষ কেউ হতে পারবে না”

তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ)  বললেন, সে আল্লাহ তাআলাকে তাঁর ইসমে আজম বা সর্বাধিক বড় ও সম্মানিত নামের সঙ্গে ডাকল; যা দ্বারা যখন কেউ আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তিনি তাকে তা দান করেন, এবং যা দ্বারা কেউ যখন তাঁকে ডাকে, তিনি তার ডাকে সাড়া দেন। (তিরমিজি, আবু দাউদ, মিশকাত)।

উপরোক্ত  হাদিসের আমল ও নির্দেশনা

এ হাদিসে ইসমে আজমের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা, আশ্রয় ও দোয়া করার বিষয়ে আহ্বান করা হয়েছে। আবার

দোয়া কবুল হবে এ নিশ্চয়তাও দেয়া হয়েছে। মূল কথা হলো বান্দাকে আল্লাহর কাছে যে কোনো বিষয়ে সাহায্য প্রার্থনায়

বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না; আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হয় না। এ

সম্পর্কে হাদিসে এসেছে-

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, আল্লাহকে তার ইসমে আজমের সঙ্গে ডাকা। তাঁর কাছে চাহিদা অনুযায়ী প্রার্থনা করা।

তাঁর কাছেই সব বিষয়ের সাহায্য চাওয়া বান্দার জন্য সর্বোত্তম এবং কল্যাণের। কারণ তিনিই বান্দার আশা-ভরসার

নির্ভরযোগ্য স্থল।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসে উল্লেখিত দোয়াটির মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা পূরণে ডাকার তাওফিক দান

করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করে নিজেদের অভাব-অনটন দূর ও দোয়া কবুল করিয়ে নেয়ার তাওফিক দান

করুন। আমিন।

আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার ৫ টি উপায়

যার দয়ায় আমরা বেঁচে আছি । যিনি একমাত্র পালন কর্তা । যার দয়া আমাদের প্রতিনিয়ত দরকার তার কাছ থেকে কিভাবে

আমার সাহায্য পেতে পারি তার জন্য, এখানে আপনাদেরকে শেখাবো, আল্লাহর কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার জন্য যে পাঁচটি

উপায়। সে পাঁচটি উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, এবং আপনি এগুলোর মাধ্যমে  আল্লাহর কাছ থেকে যে কোন

বিপদ আপদে সাহায্য চেয়ে নিবেন।

শেষ রাতে দোয়া

যদি কেহ আল্লাহতায়ালার কাছে রাত্রের শেষ প্রহরে উঠে তার কাছে ক্ষমা ও কোন ধরনের সাহায্য চায় তবে আল্লাহ সেই

চাওয়াকে ফিরিয়ে দেয়না। তাই আমরা যদি আমাদের প্রয়োজনে অ-প্রয়োজনে আল্লাহর কাছে শেষ রাত্রে ইবাদতের মাধ্যমে

সাহায্য চাই তবে তা খুব সহজেই পেয়ে যাব।

রাত্রে ঘুম থেকে উঠে নির্দিষ্ট দোয়া পড়া

কেউ যদি রাত্রে ঘুম থেকে উঠে নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করে মাহান রব্বুল অলামিন আল্লাহতায়ালার কাছে সাহায্য চায় তবে

তিনি তা ফিরিয়ে দেননা। তাই আমরা যখন আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবো তখন নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করবো যার

বাংলা উচ্চারণ দেয়া হলো।

”লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া‘হদাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল ‘হামদ, ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি

শাইয়্যিন ক্বাদীর, আল-‘হামদু লিল্লাহি, ওয়া সুব’হা-নাল্লা-হি’, ওয়া লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া ‘আল্লা-হু আকবার’,

ওয়া লা- ‘হাওলা ওয়া লা- ক্বুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লা-হ”

হযরত ইউনুস( আঃ) এর দোয়ার মাধ্যমে

কোন ব্যাক্তি যদি আল্লাহপাকের সাহায্য কামনা করে তবে মাছের পেটের ভেতর থাকাবস্থায় ইউনুন(আঃ) যে দোয়া

করেছিলেন যার বাংলা উচ্চারণ হলো- “লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা সুব‘হা-নাকা ইন্নী কুনতু মিনায যা-লিমীন”

আর যে কোন মুসলিম লোক কোন বিষয়ে কোন সময় এই দুআ করলে আল্লাহপাক তার দু-আ কবুল করেন ও তাকে সাহায্য

করে( রেফারেন্স রিমিযিঃ৩৫০৫)

বিপদের সময় নির্দিষ্ট দোয়া পড়া

যদি কেহ অনেক বিপদে পড়ে আছে । এখন সে আল্লাহর কাছে সাহ্য কামনা করছেন তখন নিচের এই দোয়টি পড়লে মহান

আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যাবে দু-য়াটির বাংলা উচ্চারণ হলো-ইন্না- লিল্লা-হি ওয়া ইন্না- ইলাইহি রা-জিউন। আল্লা-

হুম্মাঅ্‌ জুরনী ফী মুসীবাতী ওয়া আখলিফ লী খাইরাম মিনহা”

কারো মৃত্যুর পর দোয়া করা

মরার পরে আমরা সবাই খুবই অসহায় হয়ে যাব। সেই সময় একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ সাথী হবে না। তাই যার

‍মৃত্যুবরণ করেছে তাদের জন্য আমাদের দোয়া করা দরকার।

শেষ কথা

মহান আল্লাহপাক সবাইকে সাহায্য করুন। সবার দুর্দিনে আল্লাহর সাহয্য সঙ্গে থাকুক।  আল্লাহর করুণা নিয়ে সবাই বেঁচে থাকি এই সুন্দর ধরণীতে । রোগ-শোক দুঃখতাপে আল্লাহই একমাত্র সহায় হোক। সেই প্রত্যাশা নিয়েই আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করছি আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি  লেখাটি পড়ে আল্লাহর প্রতি আমাদের বিশ্বাস আরো হাজার গুণ বেড়ে যাবে, এবং আমরা যেকোন কাজে একমাত্র আল্লাহর উপরে ভরসা রাখবো।

তিনিই একমাত্র অন্তর্যামী তিনি একমাত্র আমাদের সকল বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে। সে প্রত্যাশা রেখেই শেষ করছি।

আর সবাইকে একটি অনুরোধ করছি একবার আল্লাহর উপর ভরসা করে দেখেন  তিনি আপনার সকল সমস্যার সমাধান

করে দিবেন ইনশাআল্লাহ । লিখাটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, অবশ্যই শেয়ার করার জন্য অনুরোধ রইল।

ধন্যবাদ কষ্ট করে আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি  সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য।

আরো যে বিষয় গুলো পড়তে পারেন তাহলো :

. জীবন নিয়ে সেরা ২৫০ টি কথা .উক্তি

২. মা নিয়ে কিছু কথা ছন্দ, উক্তি ও মেসেজ

. কিছু কথার পিঠে কথা গান

. বাপের বেটা কবিতা 

৫.নীরবতা নিয়ে উক্তি, কবিতা

About 24 Favor

Check Also

মেয়েদের নিয়ে মজার ফেসবুক স্ট্যাটাস ও ছবি

বৈশাখের নতুন ফেসবুক শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস উক্তি ও এসএমএস

বৈশাখের নতুন ফেসবুক শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস উক্তি ও এসএমএস এ বিভাগে আমরা নিয়ে এসেছি আপনাদের জন্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *