পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায়:-আমরা স্বাভাবিক প্রকৃতির ডাকে মলত্যাগ পায়খানা করে থাকি। এই পায়খানা করার সময়
আমাদের বেশ কিছু জরুরী বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়। সে বিষয়গুলো আমরা লক্ষ্য না রাখলে আমাদের শরীরে হতে পারে
মারাত্মক ব্যাধি। তাই আসুন পায়খানায় গিয়ে মলত্যাগের আগে ও পরে যে বিষয় গুলো আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে সে
বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানি। প্রত্যেক দিন পায়খানা করার সময় সেই বিষয়গুলো লক্ষ্য করে পায়খানায় গিয়ে
মলত্যাগ করি।
১. জোর করে মল ত্যাগ না করা- Stools cannot be forced out
আমাদের যখন স্বাভাবিক পর্যায়ে মলত্যাগ না হয়। তখন একটু চাপ দিয়ে মলত্যাগ করার জন্য চেষ্টা করি। সেটা আসলে
করা উচিত নয়। কারণ এটা স্বাভাবিক ভাবেই বেরিয়ে আসার কথা। চাপ দিয়ে পায়খানা করার ফলে, আমাদের অনেক সময়
পায়খানার রাস্তায় প্রেসার পড়ে। যার কারণে পায়খানার রাস্তা ফেঁটে যায়। যা পরবর্তীতে পাইলসের আকার ধারণ করে। তাই
পায়খানায় গিয়ে অবশ্যই কোনো চাপ দিয়ে বা জোর করে পায়খানা করা যাবে না।
২.আরামদায়ক পোশাক পরে মলত্যাগ করা- Defecate after loose comfortable clothing
পায়খানায় যাওয়ার সময় অবশ্যই আরামদায়ক পোশাক পড়ে যেতে হবে । কারণ টাইট পোশাক পড়ে পায়খানা করলে
আপনার পায়খানা ঠিকমতো হবে না। সেটা স্বাস্থ্যসম্মত নয় তাই অবশ্যই পায়খানায় যাওয়ার আগে আরামদায়ক ঢিলেঢালা
পোশাক পরবেন।
৩.পায়খানায় পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখা-Adequate water supply in the toilet
বিশেষ করে আমাদের গ্রাম অঞ্চলে অনেকের পায়খানা পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা থাকে না। যার জন্য পায়খানা করার পর
পায়খানা পানি ব্যবহার করে না। তার জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি ব্যবস্থা পায়খানায় থাকতে হবে । যাতে করে পায়খানা করার
পর পানি দিয়ে পায়খানা পরিষ্কার করা যায় ।উপরের দিকে ময়লা না থাকে।
৪.টিস্যু বা ডিলে কুলুব ব্যবহার করা-Use Toilet Tissue
পায়খানায় টিস্যু জাতীয় ব্যবস্থা থাকতে হবে ।কারণ পায়খানা করার পর প্রথমে আমাদের টিস্যু ব্যবহার করা উচিত যাতে
করে পায়খানা ভালবাবে পরিষ্কার হয়। কারণ আমরা যদি হাত প্রথমে পানি ব্যবহার করার মাধ্যমে পরিস্কার করার কথা চিন্তা
করি তাহলে হাতের মধ্য সরাসরি ময়লা লাগার কারনে শরীরের অন্যান্য জায়গায় ময়লা লাগতে পারে। তার জন্য প্রথমে
টিস্যু ব্যবহার করতে হবে পরে পানি ব্যবহার করতে হবে।
৫.পায়খানা সাবান ব্যবহার করা- Using soap in the toilet
টিসু দিয়ে পায়খানা পরিষ্কার করার পর ,পরবর্তীতে সাবান দিয়ে অবশ্যই হাত ধুতে হবে। কারণ পায়খানার ময়লা হাতের
মধ্যে লেগে থাকতে পারে। একমাত্র সাবান দিয়ে পরিষ্কার করলে আপনার হাত হান্ডেট পার্সেন্ট জীবাণুমুক্ত হবে।
৬.মলত্যাগের সময় তাড়াহুড়া না করা- Do not rush to defecate
মলত্যাগের সময় অবশ্যই তাড়াহুড়া করা যাবে না । অনেক সময় আমরা তাড়াহুড়া করে মলত্যাগ করি তাতে করে
আমাদের মলত্যাগ সম্পূর্ণ হয় না। যা পরবর্তীতে আমাদের শরীরে বিভিন্নভাবে সমস্যা তৈরি করে । তাই আমরা যখন মল
ত্যাগ করবো তখন আস্তে আস্তে মলত্যাগ করবো।
৭.পায়খানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা-Clean your Toilet
পায়খানা হচ্ছে রোগ-জীবাণুর কারখানা। এখান থেকেই সমস্ত জীবাণু ছড়ায় । তাই আমাদের বাড়ির অন্যান্য জায়গা থেকে
বেশি পরিমান পায়খানা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরী। যেন কোনোভাবেই পায়খানা থেকে রোগজীবাণু ছড়াতে না পারে।
অনেকেরই দেখা যায় পায়খানা অনেক নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত তাই সেই সমস্ত পায়খানা গুলো থেকে প্রচুর রোগ জীবাণু ছড়ায়।
যার জন্য বাড়িতে রোগবালাই লেগেই থাকে । সেজন্য আমাদের সবসময় পায়খানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৮.পায়খানায় যাওয়ার সময় জুতা ব্যবহার করা- Using shoes in the bathroom
পায়খানায় যেহেতু অনেক রোগজীবানু থাকে তার জন্য, এখান থেকে মূলত আমাদের কৃমির জীবানু সেটা আমাদের পায়ের
মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। যা পরবর্তীতে আমাদের শরীর কৃমি দ্ধারা আক্রমণ হয়। আর এই রোগ থেকে
মুক্ত থাকতে গেলে আমাদের পায়খানা অবশ্যই জুতা ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের কৃমি আক্রান্ত
হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই তাদের পয়খানায় জুতা ব্যবহার করাতে হবে।
৯.পায়খানায় মুখে মাস্ক ব্যবহার করা- Using Mask in the Bathroom
পায়খানা যেহেতু পরিষ্কার জায়গা বা জীবাণু মুক্ত জায়গা না । তাই যেকোনো ধরনের জীবানু আমাদের মুখ দিয়ে প্রবেশ
করে আমাদের শরীরে আঘাত করতে পারে । তার জন্য আমাদের মুখে মাক্স বা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে । যাতে
পায়খানা করার সময় আমাদের মুখ খোলা না থাকে।
১০.পায়খানার পর পানি ব্যবহার করা- Using Water in the Bathroom
টিস্যু দিয়ে মলত্যাগের স্থান পরিষ্কার করার পর, পানি দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। যেহেতু আমাদের মলদ্বারে টিস্যু ব্যবহার
করার পরেও মল লেগে থাকতে পারে তাই পানি ব্যবহার করলে সেই জায়গা ভালোভাবে পরিষ্কার হয় এবং পানি এবং সাবান
দিয়ে দহাত ধৌত করলে আমাদের হাত জীবাণুমুক্ত হবে।
End Word
পরিশেষে বলা যায় উপরোক্ত পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় বিষয়গুলো আমাদের পায়খানা যাওয়ার সময় অবশ্যই
পালনীয়। আমরা পায়খানায় যাওয়ার সময় উপরোক্ত বিষয়গুলো আমরা মেনে চলবো । অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানার
ইচ্ছে থাকলে আপনি আমাদেরকে লিখতে পারেন পরবর্তী লেখা আপনাদের উত্তর দিব । কষ্ট করে বিষয়গুলো পড়ার জন্য
আপনাকে ধন্যবাদ। উক্ত বিষয়গুলো অবশ্যই আপনি প্রত্যাহিক জীবনে পালন করবেন সে লক্ষ্য করেই শেষ করছি ধন্যবাদ
সবাইকে।
2 comments
Pingback: কিডনি ভালো রাখার জন্য উপকারী খাবার
Pingback: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে উক্তি রচনা ও কবিতা