পরকীয়া নিয়ে উক্তি : প্রিয় বন্ধুরা আজকে এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। যে বিষয়টি বর্তমানে সমাজে ব্যাধির
আকার ধারণ করেছে। আমরা অনেক সময় নিজের অজান্তেই এই ভুলের দিকে পা বাড়িয়ে থাকি। আর যে ভুলের মাশুল
দিতে হয় অনেক বড় পরিসরে, এবং অনেকেিই জীবন দিয়েও সেই মাশুল দিতে হয়। তাই সেই ভুল থেকে আমরা কিভাবে
নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারি। ভুলেও যেন এই ফাঁদে পা না দেই সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। অবশ্যই বুঝতে
পারছেন আমার টাইটেল দেখে যার নাম হচ্ছে পরকীয়া। বিবাহিত জীবনে পর অনেক স্বামী বা স্ত্রী অন্যের প্রেমে জড়িয়ে
পড়ে সেই ক্ষেত্রে অনেক ধরনের সম্পর্ক হয়ে যায় । আর সেই ধরণের সম্পর্ক থেকে কিভাবে নিজেকে মুক্ত রাখা যায়?
কিভাবে নিজেকে সরিয়ে রাখা যায়? সেটাই বলার চেষ্টা করব আজকে এই পরকীয়া নিয়ে উক্তি লেখার মাধ্যমে। প্রথম
থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো বিষয়টি পড়তে থাকুন আপনার বিষয়টি সম্পর্কে পুরো ধারনা তৈরী হয়ে যাবে।
পরকীয়া নিয়ে উক্তিতে পরকীয়া কাকে বলে
কথাটি শুনলেই যেন কেমন লাগে। পরকীয়া যার ইংরেজী হচ্ছে Adultery বা Extramarital affair বলা যায়। তাই যে নামেই একে ডাকেন না কেন এর সাধারণ ব্যাখা হচ্ছে । যখন কোন বিবাহিত নারী বা পুরুষ
তার স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোন পুরুষ বা মহিলার সাথে যে কোন ধরনের অনৈতিক ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ানোর পর
যখন তাদের মধ্যে জীবনি ক্রিয়া কলাপ সংগঠিত হয় তাকে তখল পরকীয়া বলা হয়।
পরকীয়া নিয়ে উক্তি
ইউরোপের দেশগুলোতে পরকীয়া নিয়ে খুব একটা সমস্যা না হলেও মুসলিম দেশগুলোতে এটি একটি জঘন্য অপরাধ। তাই
এই ধরনের জঘন্য অপরাধ থেকে নিজেদেরকে কিভাবে রক্ষা করতে পারি এবং নিজের আপন জন যদি এ ধরনের সম্পর্কে
জড়ায় তাকে কিভাবে আমরা উক্তির মাধ্যমে সাবধান করতে পারি সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। এখানে যে
উক্তি গুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো একদম নতুন এবং আনকমন । আশা করি আপনি যদি আপনার সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমের শেয়ারকরেন, একদিকে আপনি যেমন এ ধরনের অপরাধ থেকে দূরে থাকতে পারবেন। অন্যদিকে আপনার বন্ধু-
বান্ধব আত্মীয়-স্বজনও যারা আপনাদের শেয়ারটি দেখবে তারাও এ ধরনের অপরাধ থেকে দূরে থাকতে পারবে।
- যদি তুমি তুমার স্বামীর কাছে সুখ না পাও তবে পৃথিবীর কোথাও সুখ খঁজতে যেওনা । কারণ তুমি ধরে নিও বিধাতা তুমার কপালে সুখ রাখে নাই।
- প্রতিটা স্ত্রীর জন্য তার স্বামী হচ্ছে একমাত্র ভালোবাসা গ্রহণের জায়গা।
- প্রতিটি স্বামী স্ত্রীর উচিৎ একজন আপরজনকে ভালোবাসা।
- প্রতিটা পরকীয়া প্রেমের ফল হয় ভয়াবহ।
- তোমরা পরকীয়া প্রেমের ধারে কাছেও যেওনা কারণ এটা সমাজ ও ধর্মের চোখে জঘন্য অপরাধ।
পরকীয়ায় ইসলাম ধর্মের বিধান
ইসলাম ধর্ম কখনোই অনৈতিক বা সমাজ গ্রহণ করে না এমন কোনো কার্যক্রম সমর্থন করে না। আর এরই ধারাবাহিকতায়
এই ধরনের অপরাধ হচ্ছে অনেক বড় ধরনের জঘন্য অপরাধ। যে অপরাধের শাস্তি অনেক ভয়ানক, এবং শাস্তির বিধান
রয়েছে জীবননাশ। তাই যারা মুসলিম ধর্মাবলম্বী তাদের এই কাজটি করার আগে অবশ্যই এর শাস্তির ব্যাপারে আমাদের
সচেতন থাকা উচিৎ। হাদিস এবং কুরআন এর আলোকে কি ধরনের শাস্তির বিধান রয়েছে তা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।
কুরআনের আলোকে পরকীয়া প্রেমের শাস্তি
১. সূরা আহজাবের ৩২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা নারীদের পরপরুষের সাথে নরম কমল ও অকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলার জন্য মানা করেছেন । এত করে কোন পুরুষ নারীর সাথে কথা বলার সময় যেন আকর্ষণবোধ না করে।
২. সুরা নূরের ৩০ নং আয়াতে শুধু নারীদেরই নয় পুরুষদেরকেও দৃষ্টি সংযত রাখার ব্যাপারে বলা হয়েছে। এর পর একই সূরার ৩১ নং আয়াতে মহিলাদের তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখার পাশাপাশি তাদের গোপন সৌন্দর্য অনাবৃত করতেও নিষেধ করা হয়েছে। অন্যর সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ করাকে হারাম করে সবটুকু স্বামীর জন্য নিবেদনে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।
৩. সুরা বনি ইসরাইল আয়াত নং ৩২ এ বলা হয়েছে ” তোমরা ব্যাভিটারের নিকটবর্ হইও না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ”।
৪. সুরা নুর এর ২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে বলেন “ ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণী উভয়কে একশ ঘা করে বেত্রাঘাত কর”
হাদীসে অনুসারে পরকীয়া প্রেমের শাস্তি
১. বায়হাকি হদিস নং ৫৬৪ তে পরকীয়া প্রেমের বয়াবহ শাস্তির কথা বলা হয়েছে। আমাদের প্রিয়নবী রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে মুসলমানগণ! তোমরা ব্যভিচার পরিত্যাগ কর। কারণ, এর ছয়টি শাস্তি রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি দুনিয়াতে ও তিনটি আখেরাতে প্রকাশ পাবে। যে তিনটি শাস্তি দুনিয়াতে হয় তা হচ্ছে, তার চেহারার ঔজ্জ্বল্য বিনষ্ট হয়ে যাবে, তার আয়ুষ্কাল সংকীর্ণ হয়ে যাবে এবং তার দারিদ্রতা চিরস্থায়ী হবে। আর যে তিনটি শাস্তি আখেরাতে প্রকাশ পাবে তা হচ্ছে, সে আল্লাহর অসন্তোষ, কঠিন হিসাব ও জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।
২. অন্য একটি হাদিসে হযরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) বর্ণনা করেন “ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) বলেন যে ব্যক্তি মুখ ও লজ্জাস্থানের হেফাজতের জামিনদার হবে আমি তার বেহেশতের জামিনদার হব। বুখারি শরীফ হাদিস নং- ৭৬৫৮।
৩. মুসলিম শরীফের ২৪৪৫ নাম্বার হাদিসে হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) বর্ণনা করেন “ প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন সাবধান! তোমরা নির্জনে নারীদের কাছেও যেও না। এক আনসার সাহাবি বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! দেবর সম্পর্কে আপনার নির্দেশ কি? নবীজি (সা.) বললেন দেবর তো মৃত্যুর সমতুল্য।
উপরোক্ত কুরআন ও হাদীসের আলোকে বুঝাযায় ইসলামে পরকীয়া সম্পর্কে কতটুকু কঠিন ভাবে সর্তক করা হয়েছে। তাই আমাদের উচিৎ এই ধরনের কাজ থেকে নিজেকে সমসময় দূরে রাখার চেষ্টা করা।
পরকীয়া নিয়ে উক্তি লেখায় পরকীয়া নিয়ে কবিতা
এটি একটি খারাপ কাজ । আর তাই যদি আপনার বন্ধু বা পরিচিত কেউ এই ধরনের সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে মনে করেন
তবে আপনি তাকে সর্তক করার জন্য এই কবিতাটি তার সাথে শেয়ার করতে পারেন । বা তা যদি সম্ভব না হয় তবে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শেয়ার করতে পারেন এতে করে দেখা যাবে সে সচেতন হয়ে এই ধরনের বিপদ থেকে
নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসতে পারে। তাই নিচের কবিতাটি আপনি শেয়ার করতে পারেন আপনার বন্ধুদের সাথে।
পরকীয়া প্রেমের পরিণতি
পরকীয়া প্রেমের পরিণতি
লাভ নেই তাতে কোন,
আছে শুধু ক্ষতি আর ক্ষতি।
সমাজের মানুষ ঘৃণা করে অতি
একবার যদি হয় পরকীয়া
অনেক সময় পরিণাম হয় জীবন দিয়া
একটু সুখের আশায় কেহ
পরকীয়া প্রেমে বন্দী হয়
আসলে পরে দেখে সেটা আসলে সুখ নয়
ইসলাম তাই করছে মানা
করতে পারকীয়ার মতো প্রেম
কঠিন শাস্তির বিধান আছে
কোরআন হাদিসের আলোকে
পরকীয়ার কারণ ও প্রতিকার
বর্তমান সমাজে পরক্রিয়া খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। আমাদের চারপাশে অহরহ এই ঘটনাগুলো ঘটছে। আর এই ঘটনার
পেছনে বেশ কিছু কারণ দায়ী । যে কারণগুলো দায়ী সেগুলো আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। একই সাথে এই ধরনের
সমস্যা থেকে কিভাবে পরিত্রান পাওয়া যায় সে বিষয়টি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা । আমরা প্রথমে দুটো ভাগে আলোচনা
করি প্রথমভাগে পর কীয়াক্রিয়া হওয়ার কারণ এবং শেষের ভাগে এটা থেকে পরিত্রান।
পরকীয়ার কারণ
একজন মানুষ বিভিন্ন কারণে পরকীয়ার মতো জঘন্য অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে। আর তাদের মধ্যে যে সকল
কারণগুলো বিশেষভাবে দায়ী, মানুষজন সাধারণত যে সকল কারনে এই ধরনের খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে সেগুলো
এখানে উল্লেখ করা হলো-
- স্বামী – স্ত্রীর এক সাথে না থাকার কারণে।
- স্বা বা স্ত্রী দীর্ঘ সময় এক সাথে না থাকার কারণে।
- সংসারে অশান্তি থাকার কারনে।
- স্বা বা স্ত্রীর জীবনি সমস্যা থাকার কারনে।
- ঝগড়ার কারণে একজন অপর জন থেকে দূরে থাকার কারণে।
- এক গবেষনায় দেখা গেছে পরকীয়া অনেক সময় অভাবের কারণেও দেখো যেতে পারে।
- পূর্বের প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক থাকার কারনে।
- অবাধ মেলা মেশার কারণে।
- চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য খারাপ থাকলে।
এছাড়াও আরো কিছু কারণ আছে সে গুলো প্রভাব খুব একটা দেখা যায় ন।
পরকীয়ার প্রতিকার বা পরকীয়া থেকে দূরে থাকার উপায়
একজন মানুষ চাইলে এই ধরনের অপরাধ থেকে দূরে থাকতে পারে। এটা শুধু মানষিক ব্যাপার মাত্র। যখন আমরা এই
ধরনের সমস্যায় জড়িয়ে যাই থখন আমাদের আবেগ কাজ করে বেশি । তাই অনেক সময় আবেগের বসে এই কাজ করে
ফেলি। তাই যদি কেহ নিম্নোক্ত বিষয় গুলোর দিকে খিয়াল রাখে তবে খুব সহজেই এই ধরনের অপরাধ থেকে নিজেকে মুক্ত
রাখতে পারবে।
- ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা।
- স্বামী স্ত্রী কাছা কাছি থাকা।
- উভয়ের মাঝে ভালোবাসার সম্পর্ক বজায় রাখা।
- দুজন দুজনের জীবনি তৃপ্তির দিকে খেয়াল রাখা।
- এর যে সামাজিক এবং সাংসারিক প্রভাব রয়েছে সেই সম্পর্কে বিবেচনা করা।
- যে কোন সময় সমস্যায় পড়তে পারেন তা মনে রাখা।
- যে কোন ধরনের পরিস্তিতিতে স্বা- স্ত্রী দুজনে আলাপ আলোচনা করা ।
- বিবাহ পূর্বের সকল ধরনের সম্পর্ক বাদ দেয়া।
- সবসময় একজন আরেক জনের সামনে নিজেকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করা।
পরকীয়া নিয়ে উক্তি শেষ কথা
উপরোক্ত পরকীয়া নিয়ে উক্তি লেখাটি থেকে আশাকরি আপনাদের পরকীয়া সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান লাভ হয়েছে। আর এই
জ্ঞান দ্বারা আপনি এই ধরনের অপরাধ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন। আমরা সব সময় কামনা করি আপনি, এবং
আপনার পরিবারের কেউ এই ধরনের সমস্যায় পতিত না হয়। আমাদের সাইটে আরো অনেক সুন্দর সুন্দর লেখা আছে, যে
লেখাগুলো আপনি ইচ্ছে করলে পড়তে পারেন। লেখাটা কেমন লেগেছে? অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন । আরও যদি
কোন বিষয়ে জানার ইচ্ছে থাকে তবে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আমরা আপনাদের প্রয়োজন অনুযায়ী লেখা প্রকাশ
করার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ আপনাকে কষ্ট করে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত লেখা টি পড়ার জন্য।
One comment
Pingback: মেয়েদের ইমপ্রেস করার উপায় মেসেজ কবিতা ও ছন্দ