আসসালামু আলাইকুম সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আপনাদের জন্য একটি তথ্যমূলক লেখা দুবাই থেকে বাংলাদেশ টাকা পাঠানোর নিয়ম । বিষেশ করে যারা দুবাই বা সংযুক্ত আরব অমিরাতে চাকুরী, কাজের জন্য বা ব্যবসা করার জন্য বসবাস করছেন। তাদের জন্য আজকে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরব । যে বিষয়টা সবারই কাজে লাগবে,
এবং আপনি যদি এই তথ্যগুলো নিজের কাছে সংরক্ষণ করেন । এটা ইচ্ছে করলে আপনার ফেসবুকে শেয়ার করে সংরক্ষন
করে রেখে দেন তাহলেও একসময় দেখবেন আপনার অনেক বড় কাজে লাগবে। আজকের বিষয়টি হচ্ছে আপনি কি কি
ভাবে দুবাই থেকে আপনার অর্জিত কষ্টের টাকা সহজে এবং বৈধ উপায়ে বেশি লাভে বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়া পাঠাতে পারেন ।
সেই বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা করবো। আজকের পর থেকে আপনার আর কষ্ট করে কাউকে জিজ্ঞেস করতে হবে না ।
এই টাকা পাঠানোর ব্যাপরে।
কেন আমার বৈধ টাকা পাঠানোর মাধ্যম গুলো ব্যবহার করবো?
অনেকেই বিদেশ থেকে অবৈধভাবে দেশে টাকা প্রেরণ করে থাকে। এক্ষেত্রে একদিক থেকে যেমন দেশের অর্থনৈতিক
অবস্থাকে খারাপের দিকে ঠেলে দেয়া হয়। অন্যদিকে ব্যক্তিগতভাবেও আপনি পড়ে যেতে পারেন প্রতারণার ফাঁদে।
অনেকেই আছে বিদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে থাকে। যা অনেক সময় দেশেরে পরিবারের মানুষের কাছে
বুঝিয়ে দেয় না। এক্ষেত্রে দালাল চক্র মোটা অংকের টাকা জমা করে তারা পালিয়ে যায় । তাই আপনি যদি বৈধভাবে দেশে
টাকা পাঠান তবে একদিকে যেমন আপনি নিজে নিরাপদ থাকবেন অন্যদিকে বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ান সরকারের বৈদেশিক
রিজার্ভ বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করলেন। এছাড়াও বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার বিদেশি টাকা প্রেরণের ওপরে নির্দিষ্ট
একটা ভর্তুকি দিচ্ছে যটা খুবই আশাজনক। তাই আজকের পর থেকে সবাই দয়া করে বৈধভাবে টাকা প্রেরণ করে আপনার
পরিবার ও সরকারের উন্নয়নে বিষেশ ভুমিকা পালন করুন।
দুবাই থেকে টাকা পাঠানোর মধ্যম গুলো
এই দেশ থেকে টাকা পাঠানোর যেসকল মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে যে গুলো বহুল ব্যবহৃত সে গুলোকে পর্যায়ক্রমে
আলোচনা করবো এবং যে মাধ্যমগুলো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ও বহুল প্রচলিত সেই গুলো নিয়ে আমি প্রথমে আপনাদের
সাথে আলোচনা করব। এর পর পর্যায়ক্রমে টাকা পাঠানোর যতগুলো মাধ্যম আছে সেগুলোও তুলে ধরব। আপনি আপনার
সুবিধামতো যে কোন সার্ভি গ্রহণ করতে পারেন। যেই মাধ্যমটি আপনার কাছাকাছি আপনি ইচ্ছে করলে আপনার টাকাটা
সেই মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে পারবেন। চলুন এক এক করে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
দুবাই থেকে বিকাশের (bkash) মাধ্যমে টাকা পাঠানো
বর্তমানে দুবাই থেকে বাংলাদেশ টাকা আনার সবচেয়ে জনপ্রিয়, এবং সহজ মাধ্যম হচ্ছে বিকাশ( bkash) । আপনি ইচ্ছে
করলেই যে কোন সময় যে কোন পরিমাণ টাকা দুবাই থেকে বাংলাদেশে ফরেন ক্লিয়ার হাউসের মাধ্যমে খুব সহজেই
অনুমোদিত ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা প্রেরন করতে পারবেন। তাই আপনার আশেপাশে যদি কোন বিকাশ কাউন্টার থাকে
তাহলে আপনি যেকোনো সময় টাকা প্রেরন করতে পারবেন। যেহেতু এরা কোন ব্যাংক নয় তাই এদের সার্ভিস অনেক বেশি
সময় ধরে দিয়ে থাকে। তাই আপনি ইচ্ছে করলে আপনার প্রিয়জনের টাকাটা বিকাশ এর মাধ্যমে পাঠাতে পারেন।
ওয়াইজ – Wise এর মাধ্যমে দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা প্রেরণ
যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়াইজ( Wise) বর্তমানে টাকা বাংলাদেশে পাঠানোর বিশ্বস্ত এবং খুব ভালো একটি মাধ্যমে।
প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করলেও খুব অল্প দিনেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এদের বর্তমানে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ২১
বিলিয়ন এর অধিক। যাদের তারা প্রতিনিয়ত সেবা দিয়ে আসছে। আর এই প্রতিষ্ঠানটির প্রথম নাম ছিল ট্রান্সফারওয়াইজ। যা
পরবর্তীতে ওয়াইজ হিসেবে পরিচিতি পায়। আর যারা এই ওয়াইজের মাধ্যমে দেশে টাকা প্রেরণ করবেন সে ক্ষেত্রে সরকার
২.৫% প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। অনেকেই ভাবতে পারেন এখানে একাউন্ট খোলতে হবে যা অনেক জামেলার । আমি
আপনাদের উদ্দেশ্যই বলছি এখানে একাউন্ট খোলা মোটেই জামেলার নয়। আপনি ইচ্ছে করলেই খুব সহজেই এখানে
একাউন্ট খুলতে পারবেন। আর এই একাউন্ট খোলার জন্য শুধু মাত্র কয়েকটা জীনিস লাগবে আর তাহলো আপনার
শুধুমাত্র পাসপোর্ট ও মোবাইল নাম্বার ও আপনার জন্ম তারিখ । বাস একাউন্ট খোলা হয়ে গেল এবার ইচ্ছে মত যে কোন
পরিমাণ টাকা দেশে প্রেরণ করতে পারবেন। বাংলাদেশে যে কোন বিকাশ ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শাখা থেকে তুলতে
পারবেন তাও আবার বৈধ ভাবে সরকারী ভর্তুকি(২.৫%) সহ।
ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন-Western Union মাধ্যমে দুবাই থেকে টাকা প্রেরণ
ওয়েস্টার্ণ ইউনিয়ন এর মাধ্যমে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর জন্য এটা বেশ অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম। বর্তমানে সাধারণ
মানুষজনের কাছে ওয়েস্টার্ণ ইউনিয়ন এর মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা গ্রহণ করা বেশ জনপ্রিয় হয়ে গেছে। কারণ ওয়েস্টার্ণ
ইউনিয়ন এর মাধ্যমে খুব সহজেই নিজের মোবাইলের অ্যাপ দিয়ে অথবা ব্যাংকে গিয়ে বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাংকের
যেকোন শাখায় টাকা পাঠানো যায় । তাই এই মধ্যমে টাকা পাঠানো খুব সহজ।
ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে দুবাই থেকে টাকা পঠানো
একদিকে যেমন অন্যান্য এজেন্সির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক বিদেশ থেকে বিদেশী টাকা গ্রহণ করে । দেশে টাকা প্রদান করে
থাকে অন্যদিকে দুবােইয়ের বাংলাদেশী লোক যে এলাকায় বেশি সেখানে গড়ে উঠেছে এই ব্যাংকের শাখা। তাই একদিকে
যেমন তারা অন্য এজেন্সির মাধ্যম হিসেবে কাজ করে টাকা পাঠানোর জন্য তেমনি নিজেরাও সরাসরি দিরহাম গ্রহণ ও
টাকা প্রদান করে থাকে এই ইসলামী ব্যাংক। বাংলাদেশী অধিকাংশ লোক মুসলিম হওয়াতে তাদের কাছে ইসলামী ব্যাংক
খুবই জনপ্রিয়। এছাড়াও এই ব্যাংকের সার্ভিস খুব্নেই ভাল। যে কেউ খুব সহজেই দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন।
ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা প্রেরণ
ডাচ বাংলা ব্যাংক অনেক জনপ্রিয় একটি ব্যাংক। যেখানে মানুষজন বিদেশ থেকে বিশেষ করে দুবাই থেকে টাকা প্রেরণ
করে থাকে । তাই আপনি ইচ্ছে করলে আপনার পরিবার পরিজনের জন্য ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা দেশে পাঠাতে
পারেন খুব সহজেই। বর্তমানে এই ব্যাংকের শাখা অনেক বেশি থাকায় লেনদেন করা সহজ । তাই আপনি নির্দ্বিধায়
ডাচবাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে আপনার টাকা দেশে পাঠানোর ব্যাস্থা করতে পারেন।
মানিগ্রামের(MoneGram) মাধ্যমে দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা প্রেরণ
মানে গ্রামের নাম শোনেননি এমন লোক খুব কমই আছে এক সময় মালিগ্রাম খুবই জনপ্রিয় ছিল মানুষজনের মাধ্যমে বেশি
করে টাকা পাঠাত তখন ব্যাংক তেমন একটা ছিল না বর্তমানে যদি অনেকগুলো মাধ্যমে বের হয়েছে যার কারণে মানে
গ্রামের জনপ্রিয়তা একটু কমেছে তবুও অনেক লোক এই মালিগ্রাম এর মাধ্যমে টাকা পেলেন করে থাকে আপনি ইচ্ছে
করলে বৈধভাবে মানিগ্রামের মাধ্যমে টাকা দেশে প্রেরণ করতে পারবেন।
এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বাংলাদেশে টাকা প্রেরণের জন্য সহযোগীতা করে থাকে তাদের মধ্যে অন্যতম উল্লেখ যোগ্য প্রতিষ্ঠান সমূহ হলো:
১. অগ্রনী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ
২. সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ
৩. স্ট্যান্ডার্ড চার্টাট ব্যাংক । সহ আরো কয়েকটি ব্যাংক।
দুবাই থেকে বাংলাদেশ টাকা পাঠানোর নিয়ম এর শেষ কথা
দুবাই থেকে বাংলাদেশ টাকা পাঠানোর নিয়ম লেখাটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকার হবে। এই প্রত্যাশানিয়েই আজকের
মত এখানে বিদায় নিচ্ছি। সবােই ভাল থাকবেন। প্রবাশি ভাইয়েরা আপনাদের বিশেষ করে হাজারো সালাম কারণ আপনারা
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকা সচল রাখার জন্য সবসময় কাজ করে যাচ্ছেন। আবার কথা হবে নতুন কোন বিষয়
নিয়ে। সুস্থ্য থাকুন ভালথাকুন আল্লাহ হাফেজ।