প্রিয় পাঠক গণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন। আপনাদের সাথে আকে কথা বলবো পর্তুগাল স্টুডেন্ট
ভিসা নিয়ে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রচুর শিক্ষার্থী বিদেশে লেখাপড়া করছে। অনেকেই পর্তুগাল স্টুডেন্ট
ভিসা নিয়ে লেখাপড়া করার জন্য যেতে চান। আজকের আর্টিকেল টি তাদের জন্য, এটি পড়লে আপনি
আরো জানতে পারবেন, কিভাবে পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন , পর্তুগাল কেন পড়ালেখা করতে
যাবেন,স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র,পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা খরচ,পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসার কোর্স
।এ সকল বিষয় নিম্নে আলোচনা করা হলো। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আজকের আর্টিকেল টি পড়া
শুরু করি-
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা: ইউরোপ মহাদেশ গুলোর মধ্যে পর্তুগাল অন্যতম একটি দেশ।পর্তুগাল ইউরোপ
মহাদেশের দক্ষিণ- পশ্চিমে অবস্থিত। এছাড়াও আটলান্টিক মহাসাগরে উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত।
পর্তুগালে বাইরের দেশ থেকে ভ্রমণ করার জন্যে বেশ মানুষ আসে। কারণ পর্তুগাল দেশের সৌন্দর্য অনেক
বেশি ভালো লাগার মত।আবার পর্তুগালে অনেক উন্নত মানের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এই সকল
বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপ্লোমা,ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পি এইচ ডি- সকল ধরনের কোর্স এ পড়তে পারবেন পর্তুগাল
স্টুডেন্ট ভিসা- ২০২৩ এর মাধ্যমে গিয়ে।আর এই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে হরেক রকমের সাবজেক্ট
যেমন- সাইন্স, ইকোনমিক্স, মেডিকেল, বাণিজ্য, আইন, ইঞ্জিনিয়ারিং, একাউন্টিং সহ বহু ধরনের কোর্স।
কিন্তু মনে রাখবেন বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্তুগিজ ভাষায় কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। তাই কোর্স ও
বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করার আগে দেখে নিবেন সেখানে ইংরেজি মাধ্যমে কোর্স অফার করা হয় না কি।ভিসার
জন্য শিক্ষার্থীদের ভারতের দিল্লিতে যেতে হবে এবং সেখানে পর্তুগাল দূতাবাসে ভিসা প্রক্রিয়া ও ইন্টারভিউ
দিতে হবে।
পূর্তগাল কেন পড়াশোনা করতে যাবেন
পূর্তগাল কেন পড়াশোনা করতে যাবেন: পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসায় পড়াশোনার জন্য অনেকেরই পছন্দ-
কারণ এ দেশে পড়তে যাওয়ার জন্য ইংরেজিতে পারদর্শিতার কোন সার্টিফিকেট দিতে হয় না। তাই যারা
আইইএলটিএস দিতে ভয় পাচ্ছেন ,তাদের জন্য এ দেশ হবে উচ্চশিক্ষার অন্যতম দেশ। কিন্তু ইংরেজিতে
কথা বলার দক্ষতা ও সার্টিফিকেট থাকলে আপনি ভিসা পাওয়ার জন্য বেশি যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
এ দেশে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণ করতে উচ্চ মাধ্যমিক আর মাস্টার্সে আবেদনের জন্য চার বছরের
ব্যাচেলর এবং পিএইচডি করতে আপনাকে দুই বছরের মাস্টার্স থাকতে হবে। অন্যান্য দেশগুলোর মতো,
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা তার বিশ্ববিদ্যালয় এবং পলিটেকনিক গুলিকে দুটি ভাগে বিভক্ত করেছেন। যেগুলি
গবেষণা ফোকাস করে এবং হাতে-কলমে প্রশিক্ষণে বেশি ফোকাস করে। বেশিরভাগ কোর্স পর্তুগিজ ভাষায়
অফার করা হয়ে থাকে, তবে মাস্টার্স লেভেল এর ক্রমবর্ধমান কোর্স ইংরেজিতে পড়ানো হয়। অন্যদিকে,
একটি স্টুডেন্ট ভিসা তাদের সেমিস্টারে প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা এবং স্কুল থেকে বিরতি এবং ছুটির সময় প্রতি
সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি পায়।
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন: আপনারা যারা উচ্চ শিক্ষার জন্য পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা- ২০২৩ এ
আবেদন করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য বলছি । দীর্ঘমেয়াদি বা লঙ টার্ম ন্যাশনাল ভিসার জন্য আবেদন করতে
হবে। অস্থায়ী অবস্থান টেম্পরারি স্টে ভিসা ও রেসিডেন্স ভিসা এই দুই রকম ভিসা আছে। শিক্ষা বা গবেষণা
আবেদনকারীরা অবশ্যই রেসিডেন্স ভিসার জন্য আবেদন করবেন।আর ভিসার জন্য শিক্ষার্থীদের ভারতের
দিল্লিতে যেতে হবে এবং সেখানে পর্তুগাল দূতাবাসে ভিসা প্রক্রিয়া ও ইন্টারভিউ দিতে হবে। পর্তুগিজ
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির তথ্য ও প্রক্রিয়া আপনারা অনলাইনের মাধ্যমেও জেনে নিতে পারবেন।
স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: প্রথমে পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা -২০২৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের
অনলাইন পোর্টালে আবেদন করতে হবে।প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফরম পূরণের সঙ্গে সবশেষ একাডেমিক
সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্টের স্ক্যান কপি,ইউরো পাস সিভি, পাসপোর্ট এর কপি,ছবি,আবাসন ব্যবস্থা বা
রিকমেন্ডেশন লেটার, মটিভেশনাল লেটার এবং চাকরির অভিজ্ঞতার সনদ যুক্ত করতে হইবে। আবেদন ফি
হিসেবে ৫০ থেকে ২৫০ ইউরো নির্দিষ্ট হিসেবে আই বান ট্রান্সফার,পেপল অথবা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে
জমা দিতে হবে। নির্বাচিত হলে পুরো টিউশন ফির একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
অনলাইন পোর্টাল ছাড়াও কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেলের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো
পাঠাতে পারেন ।পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় যেসব কাগজপত্র দিতে
হবে তার মধ্যে রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত প্রমাণাদি ও টিউশন ফি প্রধানের কাগজপত্র, সত্যায়িত
মূল শিক্ষা সনদ ও নাম্বার পত্র, পাসপোর্ট সাইজের ৩৫-৪০ মি.মি সাইজের কপি ছবি।মূল শিক্ষা সনদ ও
নাম্বার পত্র প্রথমে বোর্ড এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সত্যায়িত এরপরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
থেকে সত্যায়ন করতে হবে। দিল্লি যাওয়ার পরে সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আবার সত্যায়ন করে
নিতে হবে।
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা খরচ
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা খরচ: পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনকারী নামে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা
ব্যাংক ব্যালেন্স সার্টিফিকেট এবং বিগত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে হবে। সার্টিফিকেট এবং
স্টেটমেন্ট ব্যাংক ম্যানেজারের স্বাক্ষরিত হতে হবে। সোর্স অফ ইনকাম সংক্রান্ত যত বেশি কাগজপত্র
উপস্থাপন করা যায় ততই ভালো। এছাড়াও ভিসা ফ্রি ৭২৫১ ভারতীয় রুপি নগদ জমা দিতে হবে। তবে যারা
স্কলার্শিপ নিয়ে যাবেন তাদের এই ফ্রি মওকুফ।পর্তুগিজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর টিউশন ফি তুলনামূলকভাবে
অনেক কম এবং বিশ্বমানের শিক্ষা দিয়ে থাকে যা পৃথিবীর সব দেশের গ্রহণযোগ্য। তাছাড়া পর্তুগাল
স্টুডেন্ট ভিসা পড়াশোনা শেষ করে সহজে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ নেওয়া যায়। এখানে অনার্স-
মাস্টার্স ও পিএইচডি করার সুযোগ আছে এবং প্রায় সব বিষয়ে পড়াশোনা করা যায়। টিউশন খরচ
ইউরোপের অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম। বছরে খরচ ৩হাজার থেকে ৪০০০ হাজার ইউরো। থাকা,
জীবনযাপনের খরচটাও যথেষ্ট সাশ্রয়ী, মাসে ৩০০ থেকে ৫০০ ইউররো এর মধ্যে ভালোভাবে চলে যায়।
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসার কোর্স
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসার কোর্স: পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা মূলত দুইটি সেশন সেপ্টেম্বর এবং ফেব্রুয়ারীতে
আবেদন করার সুযোগ, তবে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেপ্টেম্বর সেশনে বেশি সংখ্যক বিষয় থাকে
আবেদনের জন্য। দুই থেকে তিন টি পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও পলিটেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ভর্তি
প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। যেমন-প্রথম সার্কেলে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী না পেলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায় আবেদনের
জন্য আহ্বান করা হয়।ব্যাচেলর কোর্স এ সরাসরি ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য।
প্রথমে তাদের ৬ মাস থেকে ১ বছরের প্রাক-ব্যাচেলর কোর্স করতে হবে এবং সফল ভাবে শেষ করলেই মূল
কোর্স এ যেতে পারবেন। আইইএলটিএস বাধ্যতামূলক। তবে মার্স্টাস বা পোস্ট গ্রাজুয়েশন দিয়েও আবেদন
করা যায় ।তবে আইইএলটিএস হলে ভালো হয়,এতে ইন্টারভিউ এবং ভিসা পেতে সুবিধা হয়। অবশ্যই
ইংরেজিতে ভালো যোগ্যতা এবং দক্ষতা থাকতে হবে।
পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসার শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আপনাদের সাথে পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে অথবা যে কোন বিষয়ে আপনাদের কোন অভিযোগ বা মতামত থাকলে কমেন্ট
বক্সে লিখে জানাবেন।আমরা বিদেশের ব্যাপারে সব সময় সব ধরণের তথ্য দিয়ে থাকি ।তাই যারা বিদেশের
ব্যাপারে জানতে ইচ্ছুক তারা আমার এই সাইট থেকে জানতে পারবেন ।নিম্নে আপনাদের সাথে আরো কিছু
লেখার লিংক শেয়াার করা হলো।প্রয়োজন মনে করলে পড়তে পারেন ।আশা করি কাজে আসবে ।ধন্যবাদ
সবাইকে আজকে আমার এই পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা লেখা টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ
সহকারে পড়ার জন্য।আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
একই বিষয়ে পড়তে পারেনঃ
- অস্ট্রেলিয়া যেতে কত সময় লাগে
- সরকরিভাবে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার উপায়
- অস্ট্রেলিয়া শ্রমিকের বেতন
- কাতারে কোন কাজের চাহিদা বেশি।
- সিংঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা ও বেতন বেশি।
- কানাডায় কোন কাজের চাহিদা বেশি।
- মালয়েশিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি
- সৌদি আরব ভিসা কত প্রকার
- সুইজারল্যান্ড সংবিধান ও জনপ্রিয় স্থান
- সুইজারল্যান্ড ভাষা এবং প্রশাসন
- সুইজারল্যান্ড কোন মহাদেশে অবস্থত
- সুইজারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা
- সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ ভিসা
- সুইজারল্যান্ড নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- নিউজিল্যান্ড দেশের পরিচিতি ও জনসংখ্যা কত?
- নিউজিল্যান্ড ভিসা ও বেতন কত?
- নিউজিল্যান্ডের মুদ্রার নাম ও মান কত?
- পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ও কোন কাজের চাহিদা বেশি
- নিউজিল্যান্ড নাগরিকত্ব ও স্থায়ী বসবাসের সুবিধা
- বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম ও আবেদন
- পর্তুগাল দেশ কেমন