নিউজিল্যান্ড দেশ ও ইতিহাস

হ্যালো বন্ধুরা, আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো নিউজিল্যান্ড দেশ ও ইতিহাস  বিষয়

টি নিয়ে। আপনারা যারা নিউজিল্যান্ড দেশ সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তারা আমার এই লেখা থেকে

জানতে পারবেন।এই লেখা থেকে আপনারা আরও জানতে পারবেন নিউজিল্যান্ড ইতিহাস

সম্পর্কে। তাই এ সকল বিষয় নিম্নে আলোচনা করা হল। আপনারা যারা নিউজিল্যান্ড সম্পর্কে

জানতে ইচ্ছুক তারা অবশ্যই আজকে আমার এই নিউজিল্যান্ড দেশ ও ইতিহাস  লেখা টি প্রথম

থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

নিউজিল্যান্ডের  ইতিহাস

নিউজিল্যান্ডের  ইতিহাস

নিউজিল্যান্ডের  ইতিহাস: নিউজিল্যান্ড দেশে প্রায় ৭০০ বছর আগে পলিনেশীয় বিভিন্ন জাতি

নিউজিল্যান্ড আবিষ্কার করে এবং এখানে বসতি স্থাপন করেন।এরা ধীরে ধীরে একটি স্বতন্ত্র মাওরি

সংস্কৃতি গড়ে তোলে। ১৬৪২ সালে প্রথম ইউরোপীয় অভিযাত্রী,ওলন্দাজ আবেল তাসমান,

‍নিউজিল্যান্ড নোঙর ফেলেন। ১৮ শতকের শেষ দিক থেকে অভিযাত্রী , নাবিক,মিশনারি ও

বণিকেরা নিয়মিত এখানে আসতে থাকে । ১৮৪০ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ও নিউজিল্যান্ডের মাওরি

গোত্র গুলি চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং এর ফলে নিউজিল্যান্ড ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে আসেন।

মাওরিদের কে ব্রিটিশ নাগরিকদের সমান মর্যাদা দেওয়া হয়। এ সময় নিউজিল্যান্ডে ব্যাপকভাবে

ইউরোপীয় বসতি স্থাপন শুরু হয়। ইউরোপীয় অর্থনৈতিক ও বিচার ব্যবস্থা আরোপের ফলে

মাওরিরা তাদের বেশির ভাগ জমিজমা ইউরোপের কাছে হারিয়ে দরিদ্র হয়ে পড়েন। ১৯৩০- এর

দশকে নিউজিল্যান্ডকে একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়ে থাকে। অর্থনীতিতে

সরকারের হস্তক্ষেপ বাড়ানো হয়। একই সময়ে মাওরি দের মধ্যে এক ধরনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব

ঘটে।মাওরিরা অনেক সংখ্যায় শহরে বসতি স্থাপন করা শুরু করে এবং নিজেদের অধিকার

আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৮০- এর দশকে অর্থনীতিতে সরকারি হস্তক্ষেপ হ্রাস

করা হয় এবং অনেক উদারপন্থী নীতি বাস্তবায়ন করা হয়।বৈদেশিক সম্পর্কের ব্যাপারে অতীতে

নিউজিল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্রের অনুসারী ছিল, তবে বর্তমানে এ ব্যাপারে দেশ টি অনেক স্বাধীন।

আশা করি আপনারা সকলেই নিউজিল্যান্ডের ইতিহাস সম্পর্কে সব কিছু বুঝতে পারছেন।

নিউজিল্যান্ড দেশ

নিউজিল্যান্ড দেশ: নিউজিল্যান্ড দক্ষিণ- পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের ওশেনিয়া অঞ্চলে অবস্থিত

একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। মানচিত্রে এটি মহাদেশীয় রাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়া কাছাকাছি অবস্থিত বলে মনে হলেও

প্রকৃতপক্ষে এটি অস্ট্রেলিয়া থেকে দক্ষিনে- পূর্বে ২০০০ কিলোমিটার দূরে তাসমান সাগরে

অবস্থিত। ভৌগোলিক ভাবে বিচ্ছিন্ন দেশ নিউজিল্যান্ডের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে টোঙ্গা ,ফিজি এবং

নুভেল কালেদোনি উল্লেখযোগ্য। নিউজিল্যান্ড দুইটি প্রধান বৃহৎ দ্বীপ নিয়ে গঠিত, যেগুলোকে

উত্তর দ্বীপ ও দক্ষিণ দ্বীপ বলে।কুক প্রণালী নামের একটি অপেক্ষাকৃত সরু সামদ্রিক প্রণালী দুটি

দ্বীপ কে পৃথক করেছে। এছাড়া এখানে অসংখ্য ক্ষুদ্র দ্বীপ আছে, যাদের মধ্যে স্টুয়ার্ট ও চ্যাথাম

দ্বীপপুঞ্জ টি উল্লেখযোগ্য।নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটন উত্তর দ্বীপে অবস্থিত। এটি বিশ্বের

সমস্ত রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে দক্ষিনে অবস্থিত। নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম শহর অকল্যান্ড উত্তর

দ্বীপেই অবস্থিত। নিউজিল্যান্ডের উভয় দ্বীপই পাহাড়-পর্বতে পূর্ণ।দক্ষিণ দ্বীপে একটি দীর্ঘ পর্বত

শৃঙ্গল  অবস্থিত,যার নাম হলো দক্ষিণ আপ্লস।পর্বত গুলো মহাসাগরীয় আর্দ্র বায়ুু গুলিকে ধরে রাখে

এবং এর ফলে এগুলির চারপাশে ঘন কুয়াশার মতো মেঘের আবরণ দেখতে পাওয়া যায়।বর্তমানে

নিউজিল্যান্ড অধিকাংশ মানুষই ইউরোপিয় বংশোদ্ভূত শ্বেতাঙ্গ। নিউজিল্যান্ড এর আদি অধিবাসী

জাতির নাম মাওরি, তারা বৃহত্তম সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী। এছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এশীয়

বংশোদ্ভূত এখানে বসবাস করে, বিশেষ করে পৌর এলাকায়। ইংরেজি হলো নিউজিল্যান্ডের

সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা। আদিবাসীদের মাতৃভাষায় হলো মাওরি ভাষা।মাওরিরা পলিনেশিয়া নামক

প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে নিউজিল্যান্ডে আগমন করেন। তারা এই দেশটিকে

“আওতেয়ারোয়া” নামে ডাকতো, যার অর্থ “দীর্ঘ শুভ্র মেঘের দেশ”। নিউজিল্যান্ড ঐতিহ্যবাহী

মাওরি সংস্কৃতি এখনও বেঁচে আছে।কিন্তু এখন সেটি আধুনিক নিউজিল্যান্ডের ইউরোপীয় সংস্কৃতির

সাথে মিশে গেছে।আজও নিউজিল্যান্ডে ঐতিহ্যবাহী মাওরি  সংগীত বাঁশির সুরে সুরে বাজানো হয়

এবং ঐতিহ্যবাহী মাওরি নৃত্যও পরিবেশন করা হয়।চিত্র শিল্প, কাঠে খোদাই শিল্প,শনের বুননে তৈরি

হস্তশিল্প বা দারু শিল্প মাওরি সংস্কৃতির অংশ।

নিউজিল্যান্ড উন্নত দেশ

নিউজিল্যান্ড একটি উন্নত দেশ। আন্তর্জাতিক ভাবে প্রচলিত মানব উন্নয়ন সূচকের উপরের দিকে

অবস্থান করে আছে।এছাড়া দেশটির জীবনযাত্রার মান প্রত্যাশিত শিক্ষার হার, আয়ুষ্কাল, শান্তি ও

অগ্রগতি, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক

অধিকার রক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অগ্রসর করা একটি দেশ। পৃথিবীর বেশির ভাগ বাসযোগ্য শহরগুলোর

মধ্যে  নিউজিল্যান্ডের শহরগুলো হলো অন্যতম। নিউজিল্যান্ড মেরিনো প্রজাতির ভেড়ার পশম

বিশ্বখ্যাত।দক্ষিণ দ্বীপের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় অনেক ভেড়ার খামার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

ভেড়ার পশম ছাড়াও নিউজিল্যান্ড উৎকৃষ্ট মানের পনির,মাখন ও মাংস উৎপাদন করে।

নিউজিল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধান হলেন ইংল্যান্ডের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ।তার প্রতিনিধি নিউজিল্যান্ড

এর সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী। প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যাপারে রানীর কোনো

প্রভাব নেই, রানী কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপ্রধান। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী অধীন

সংসদই হল রাষ্ট্র ক্ষমতার অধিকারী। প্রধানমন্ত্রী নিউজিল্যান্ডের সরকারপ্রধান।এদেশের পরিবেশ

এবং প্রাণীকুল বৈচিত্র্য ও অনন্য প্রাকৃতি। মনুষ্য বসতি প্রতিষ্ঠার পূর্বে এখানে প্রচুর স্থায়ী পাখি ছিল

যার মধ্যে অনেক প্রজাতিই জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। দীর্ঘ চঞ্চু

বিশিষ্ট কিন্তু উড়তে অক্ষম কিউই নামের একটি পাখি কেবল নিউজিল্যান্ডে দেখতে পাওয়া যায়।

কিউই পাখি নিউজিল্যান্ডের একটি জাতীয় প্রতীক। এমনকি নিউজিল্যান্ডের অধিবাসীদের কেউ

মাঝে মাঝে প্রচার মাধ্যমে “কিউই” নামে ডাকা হয়।

নিউজিল্যান্ড দেশ ও ইতিহাস এর শেষ উক্তি

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি নিউজিল্যান্ড দেশ ও ইতিহাস লেখা টি। এটি সুন্দর একটি

জ্ঞান মূলক লেখা। আপনারা যারা নিউজিল্যান্ড সম্পর্কে বা নিউজিল্যান্ডের ইতিহাস সম্পর্কে

জানতে চান, তারা অবশ্যই এই লেখা টি অবশ্যই পড়ুন। নিউজিল্যান্ড যাওয়ার আগে নিউজিল্যান্ড

সম্পর্কে জেনে যাওয়া ভালো। তাই আপনারা এই লেখা টি শেষ পর্যন্ত পড়বেন। আপনাদের যদি

আরো কোন বিষয় জানা থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমরা তার উত্তর দিয়ে সেই বিষয়

টি আপনাকে জানিয়ে দেবো। আমরা বিদেশের ব্যাপারে সব সময় সব ধরণের তথ্য দিয়ে থাকি। তাই

আপনারা যারা বিদেশের ব্যাপারে তথ্য জানতে ইচ্ছুক তারা আমার এই লেখাগুলো থেকে জানতে

পারবেন ।আশা করি উপকারে আসবে। নিম্নে আপনাদের সাথে আরও কিছু লেখার লিংক শেয়ার

করা হল। প্রয়োজন মনে করলে পড়তে পারেন। আশা করি কাজে আসবে। আপনাদের সবাইকে

ধন্যবাদ আজকে আমার এই নিউজিল্যান্ডের দেশ ও ইতিহাস লেখা টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত

মনযোগ সহকারে পড়ার জন্য। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত এখানেই

শেষ।

একই জাতীয় আরো লেখা :

About 24 Favor

Check Also

কাতারে কর্মী নিয়োগ

কাতার চাকরি এর জন্য কর্মী নিয়োগ

কাতার  চাকরি এর জন্য কর্মী নিয়োগ : আজকে আরো একটি সু-খবর নিয়ে আপনাদের সাথে হাজির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *