মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা: আজকে আমি আপনাদের এমন একটি বিষয় নিয়ে লিখবো, যে বিষয়টি আমাদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটাকে বলা হয় স্বাস্থ্য ঠিক রাখার মহৌষধ। তাই আসুন মধুর উপকার সম্পর্কে জেনে আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হই। আমাদের খাদ্য তালিকায় মধু রাখার চেষ্টা করি। যাতে করে আমরা আমাদের জীবনে সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে ওঠতে পারি।
মধুর রয়েছে বহুবিধ গুন। কিন্তু সেই গুন গুলো জেনে কখন আমাদের মধু খেতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দিব। তাই মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল। যাতে করে আপনি মধু খাওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
মধুর পুষ্টি গুন সমূহ
মধু হচ্ছে প্রাকৃতিক ঔষধ । এটার তেমন কোন সাইড ইফেক্ট নাই। মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান রয়েছে। তার মধ্যে যেগুলো উল্লেখযোগ্য তা নিচে প্রদান করা হল। আপনি যদি মধুর পুষ্টি গুন সম্পর্কে জানলে অবাক হয়ে যাবেন। এর মধ্যে যে সকল পুষ্টি রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলো।
- এর মধ্যে রয়েছে ২৪ থেকে ৩৮ ভাগ গ্লূকোজ।
- আরো রয়েছে ৩৪ থেকে ৪৪ পারসেন্ট ফ্রুক্টোজ।
- সুক্রোজ রয়েছে ০.৫ থেকে ৩.০ ভাগ।
- এর মধ্যে মন্টোজ আছে ৫ থেকে ১২ শতাংশ।
- অ্যসাইনো অ্যাসিড পাওয়া যাবে ২২ ভাগ।
- এটাকে খনিজ লবনের উৎস বলা যায় এর মধ্যে লবন থাকে২৮ ভাগ।
- এর মধ্যে ১১ ভাগ এনকাইম রয়েছে।
সবচেয়ে ভাল সংবাদ হলো মধুতে কোন প্রকার চর্বি নাই। যদি কারো মেদ ভূরি থাকে অথবা হাই পেশার থাকে সে রোগীও মধু সেবন করতে পারবে। শুধু খেয়াল রাখতে হবে যেন বেশি মাত্রায় ডায়াবেটিস না থাকে।
মধু খাওয়ার নিয়ম ও সময়
আমরা অনেকেই মনে করে থাকি মধু শুধু খেলেই হবে এটা ভুল ধারনা। মধু খাওয়ার নিয়ম আছে। আর তার জন্যই বলা হয় নিয়মে ওষুধ অনিয়মে বিষ। তাই আসুন জেনে নেয়াযাক কিভাবে আমরা মধু খাব। কিভাবে মধু খেলে বেশি উপকার হবে। নিম্নে মধু খাওয়ার সকল নিয়ম আলোচনা করা হল।
- আপনি যখন মধু সংরক্ষণ করবেন সেখানকার তাপ মাত্রা যেন কোনভাবেই ৪২° সেন্টিগ্রেটের বেশি না হয়। তাহলে মধুর গুনাগুন নষ্ট্য হয়ে তা বিষাক্ত হয়ে যাবে। এই জন্য যখন আপনি গরম পানির সাথে মধু খাবেন তখন খিয়াল রাখতে হবে গরম পানির তামমাত্রা যেন কোন ভাবেই ৪২° তাপমত্রার বেশি না হয়।
- চা বা পানি সাথে মিশিয়েও মধু খেতে পারেন । সেক্ষেত্রে একটু খেয়াল রাখতে হবে চায়ের গরমের মাত্রা যেন ৪২° বেশি না হয়।
- সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই হালকা গরম পানির সাথে মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। এভাবে মধু পান করলে শরীরের টকসিন বের করে দিতে সাহায্য করে।
- যদি আপনি ওজন কমানোর জন্য মধু পান করেন তাহলে হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস মিক্স করে পান করতে পারেন।
- মধু দিয়ে কালোজিরার সাথে মিশিয়েও সকাল বেলা খেতে পারেন। এতে করে শরীরের পুষ্টি গুন বৃদ্ধি পাবে।
দৈনিক মধু খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
একজন মানুষ যদি নিয়ম করে প্রতিদিন মধু খায় তহলে সে প্রকৃতিক ভাবে সুস্থ্য সবল থাকবে। মধুর মধ্যে রয়েছে অনেক গুলো পুষ্টি গুন। যেগুলো মানব শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। তাই চলুন দেখা যাক প্রতিদিন যদি নিয়ম করে মধু খাওয়া হয়ে তাহলে কি কি উপকার পাওয়া যায়।
- মধু প্রাকৃতিকভাবেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাঝে যদি কেহ সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে চায় তাহলে যেন মধু পান করে। যদি কেহ প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে মধু খায় চোখের স্বাস্থ্য, পেটের সমস্যা,ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাগুলো কমে যায়।
- প্রতিদিন যদি কেহ নিয়মিত মধু খায় তাহলে তার উচ্চ রক্তচাপ ও ত্বকজনিত সমস্যা দূর হবে। কারণ মধুতে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । এছাড়াও এর অর্গানিক অ্যাসিড ও ফ্ল্যাভনয়েড যা স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
- নিয়ম করে মধু খেলে শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণের ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। তাছাড়াও যে কোন ধরনের সেসুলার ড্যামেজকে কমিয়ে আনে।
- আপনি যদি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তহলে নিয়মিত মধু খান। এছাড়াও মধু রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
- এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটোরিয়াল উপাদান । এর থেকে নিঃসৃত হওয়া হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড অ্যান্টি মাইক্রবিয়াল হিসেবে কাজ করে যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার জন্মে বাঁধা দেয়। এছাড়াও নিয়মিত মধূ খেলে দাঁতের ব্যথাভাব ও প্রদাহ কমে ।
খালি পেটে মধু খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
পরিমিত মধু খাওয়ার উপকারিতা আছে অনেক রকমের। মধুতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি গুণ। আর তাই মধু আপনি যেভাবেই খান না কেন, মধু খেলে আপনি উপকার পাবেন। কিন্তু তার জন্য পালন করতে হবে কিছু নিয়ম কানুন। আর আপনি যদি খালি পেটে মধু খান তাহলে যে সকল উপকার হবে সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হল।
- খালি পেটে মধু ও লেবুর রস মিশ্রণ করে খেলে শরীরের ওজন কমে।
- লিভার পরিস্কার থাকে।
- শরীরের পুষ্টি চাহিদা পুরণ হয়।
ইসলামের মধু খাওয়ার নিয়ম
আল্লাহ্তালার প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর গোটা জীবনই ছিল আমাদের জন্য অনুকরণীয় । তার জীবনে চলার পথে কোন ধরনের ভুল এখন পর্যন্ত খুজে পায়নি আর কিয়ামত পর্যন্ত খুজে পাবেও না। তার এই নিখুত জীবন ব্যবস্থায় তিনি মধু খাওয়ার উপর বিভিন্ন সময় হাদিস প্রদান করেছেন। এছাড়াও পবিত্র কোরশরীফেও মধুর গুনাগুন সম্পের্কে বলা হয়েছে।
তাই বলা যায় মধু নিঃসন্দেহে মানুষের জন্য উপকারী। তাই কোরআন ও হাদিসে মধু সম্পের্কে যা বলা হয়েছে তা বিস্তারিত ভাবে ব্যাখা করা হলো।
এই মধুর গুনাগুন সম্পর্কে রাসুলে (সা.) বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। আর তাই আব্দুলাহ্ উব্ন মাসউদ(রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল(সা.) বলেছেন “ তোমরা কোরআন ও মধু দিয়ে ব্যাধি নিরাময়ের ব্যবস্থা করবে’।( ইব্ন মাজাহ,আস-সুনান খ ২ পৃ.১১৪২ হাদিস নং-৩৪৫২)
বুখারি,আস-সহিহ,খ.৫ পৃ.২১৫২ , হাদিস ৫৩৬০ বলা হয়েছে একবার রাসুল(সা.) এর কাছে এক সাহাবি এসে তাঁর ভাইয়ের পেটের অসুখের কথা বললে রাসুল(সা.) তাকে মধু পান করানোর জন্য পরামর্রাশ দেন এতে সে সুস্থ হয়ে উঠে।
মধুর মধ্যে রয়েছে অনেক রোগের সেফা এবং মধু একটি প্রতিষেধকও । এ বিষয়য়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন “ তাতে মানুষের জন্য রোগের প্রতিকার রয়েছে ( সুরা আন-নাহল , আয়াত:৬৯)
আল-বাইহাকি আস-সুনানুল সুগরা, খ ৮ পৃ.৩৫৪ হাদিস:৩৯৫৮ বলা হয়েছে ’ আর যেকোনো রোগীকে মধু পান করানো হলে সে সুস্থ হয়ে উঠে”
শীতকালে মধু খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
যেহেতু আমাদের দেশে শীত কালে প্রচুর শতি পড়ে তাই আমাদের শরীরকে গরম রাখতে বা করতে মধুর জুড়ি নাই। তাছাড়া এ সময় সবারই কমবেশি সর্দি-কাশি একটা কমন রোগ। আর তাই এই সময় যদি কেহ পরিমিত নিয়ম করে মধু খায় তাদের ঠান্ডাজাতীয় সমস্যা থাকে না। আর তাই আপনি যদি শীতকালে মধু খেতে চান তাহলে নিম্নলিখিতভাবে খেতে হবে।
- প্রতিদিন এক কাপ কুসুম গরম পানিতে ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ মধু ১ টেবিল চামচ লেবুর রস ও ১ চা চামচ আদার রসে এক সাথে করে দুই বেলা সকাল -সন্ধা খেলে তার সকল সর্দি-কাশির সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
- শীতের রাতে ঘুমানোর আগে যদি কেহ গরম দুধের সাথে ২ টেবিল চামট মধু মিশিয়ে খায় তাহলে তার রাতের ঘুম ভাল হবে কারন শীতের মধ্যেও তার শরীর গরম থাকবে।
- দিনে নিয়ম করে তিন বার ১ টেবিল চামচ মধু খেলে কাশি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- হালকা কুসুম গরম পানির সাথে ১ চা চামচ গোল মরিচের গুঁড়া ও ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে দিনে ৩ বার খেতে পারেন এতে করে শরীরের তাপ মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
- শীতের মধ্যে হালকা গরম চায়ের সাথেও ১ চা চামচ মধু আদারর রস মিশিয়ে খেলেও সর্দি ও কাশি ভাল হয়।
- ঠান্ডার সমস্যা থাকলে বাসক পাতার রস ও মধু সমপরিমাণ মিশিয়ে খেতে পারেন।
- এছাড়াও অনেকেই ঠান্ডা জনিত সমস্যার জন্য তুলসি পাতার রসের সাথে সমপরিমাণে মধু মিশিয়ে খায়।
মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
একদিকে মধুতে যেমন রয়েছে অনেক পুষ্টিগুন অন্যদিকে কালোজিরার মধ্যেও রয়েছে অনেক পুষ্টিগুন আর তাই বলা হয় একমাত্র মৃত্যু ব্যতিত কালোজিরা সকল রোগের ওষুধ। তাই যদি কেউ নিয়মিত কালোজিরা ও মধু এক সাথে পরিমিত খায় তাহলে যে সকল গুন হয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো।
মধু ও কালোজিরা নিদ্রাহীনতা দূর করে
অনেকেরই ঠিক মত ঘুম হয় না। বিশেষ করে যাদের বয়স একটু বেশি তাদের এই ধরনের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। আর তাদের জন্য এক মহাঔষধ আপনি যদি নিয়ম করে রাত্রে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে ১ চা চামচ মধু ও কালোজিরা মিশিয়ে খান তাহলে দেখবেন আপনার আর ঘুমের ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হবে না। এমনিতেই ঘুমে বিভোর থাকবেন।
দাঁতের ব্যাথা দূর করতে মধু কালোজিরার ব্যবহার
যারা নিয়ম করে পরিমিত মধু ও কালোজিরা খান তাদের কোন দিনও দাঁতের ব্যাথার সমস্যা হয় না। যদি আপনার দাঁতে ব্যাথা থাকে তাহলে আপনি প্রতিদিন সকালে মধু ও কালোজিরা খাবেন দেখবেন আপনার দাঁতের ব্যাথা চলে গেছে।
মাথা ব্যাথা সারাতে কালোজিরা ও মধু
আপনার যদি খুব মাথা ব্যাথা করে থাকে তাহলে আপনার জন্যই এই ব্যাবস্থাটি । এছাড়াও আপনি যদি জেনে রাখেন তাহলে আপনার অনেক উপকারে আসবে। মাথা ব্যাথায় কালোজিরার গুড়ো পরিমাণ মতো নিয়ে তার অর্ধেক পরিমাণ লবঙ্গ এবং অর্ধেক পরিমাণ মৌরিফুল একসাথে মিশিয়ে মাথা ব্যাথার সময় দুধের সাথে সেবন করলে মাথা ব্যাথা সাথে সাথেই চলে যাবে।
কালজিরা ও মধু দ্বারা জীবনি শক্তি বৃদ্ধি
আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে দেখা দেয় জীবনি সমস্যা । আর এর জন্য বেশির ভাগ পরিবারেই দেখা যায়
অশান্তি। আর এর শেষ পরিণতি হয় ডিবোর্স। আর এই সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে মধু এবং
কালোজিরা খেতে হবে । তাহলে আপনার জীবনি সমস্যা থাকবে অনেক দূরে।
সাধারণত প্রতিদিন এক গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে মধু ও কালোজিরা মিশিয়ে রাত্রে ঘুমানোর আগে
সেবন করেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আপনি আপনার হারানো জীবনি শক্তি ফিরে পাবেন। আপনার সংসার জীবন হবে সুখের।
রাতে মধু খাওয়ার উপকারিতা
যদি আমরা রাত্রে নিয়মিত ও পরিমিত মধু খাই তহলে অনেক গুলো উপকার আমরা পাবো, আর তা নিম্নে বিস্তারিত ভাবে ব্যাখা করা হলো।
কাশি দূর করতে মধু
প্রতিদিন রাত্রে যদি এক চামচ মধু খাওয়া হয় তাহলে গলা ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যেহেতু মধুর
অভ্যন্তরে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শুধু কফকে পাতলা করে না তা বেরকরে আনে।তাই
রাতে ঘুমানোর আগে পানিতে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেতে হবে।
মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান খুবই গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে থাকে। আর মধুর এই উপাদান শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই বাড়ায় না এর সাথে বিভিন্ন সংক্রমণ
রোগের হাত থেকেও রক্ষা করে থাকে।তাই প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম দুধের সাথে এক
চামচ মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এতে করে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাবে।
মধু ত্বকের জন্য উপকারী
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি বা উজ্জলতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত ত্বকে মধু ব্যবহার করতে পারেন। এত করে
আপনার ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পাবে। মধু যদি কেহ গায়ে মাখে তাহলে গায়ের রং ফর্সা হয় । রাতে
ঘুমানোর আগে মধু খেলেও ত্বক ও শরীরে প্রাকৃতিক উজ্জলতা আসে।
মধু চুলের জন্য উপকারী
যদি আপনার চুল পড়া সমস্যা থাকে তহলে মধু.দই ,ডিম,অ্যালোভেরা একসাথে মিশিয়ে চুলে লাগাতে
পারেন। এতে করে আপনার চুল এক দিকে যেমন বৃদ্ধি পাবে অন্য দিকে চুল হবে সিল্কি ও নরম। তাই
চুলের যত্নে মধুর কোন তুলনা নাই। এছাড়া মধু খেলেও চুল অনেক ক্ষতিকর দিক থেকে রক্ষা পায়।
মধু ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়
যারা নিয়মিত ও পরিমিত রাতে মাধু খায় তাদের ব্রণের কোন সমস্যা হয়না। অনেক সময় যাদের ব্রণের
সমস্যা আছে তাদের আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে মধু খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।কারণ এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল
বৈশিষ্ট্য যা ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।এছাড়াও রাতে ব্রণের স্থানে মধু লাগাতে পারেন।
ওজন কমাতে মধুর ব্যবহার
যাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা আছে তারা যদি নিয়ম করে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম
পানিতে এক চামচ মধু ও লেবু মিশিয়ে খায় তার শরীরের চার্বি কমে এতে করে তার ওজনও কমে যায়। তাই
আপনার যদি এ ধরনের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে প্রতিদিন নিয়ম করে খান দেখবেন মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই আপানার ওজন কমে গেছে।
গলা ব্যাথা সারাতে মধুর ব্যাবহার
যদি কেহ নিয়ম করে রাতে ঘুমানো আগে আদার রসের সাথে সমপরিমাণে মধু খায় তাহলে তার গলা ব্যাথার উপশম হবে । একই সাথে তার গলায় যদি অন্য কোন সমস্যা থাকে তাউ দূর হয়ে যাবে।
মধু খাওয়ার অপকারিতা
এটা খাওয়ার তেমন একা অপকারিতা নেই তবুও আপনি যখন মধু খাবেন তখন খেয়াল রাখতে হবে আপনার বাড়ীর ১ বছরের নিচে বাচ্চা মধু খাচ্ছে কিনা কারন এক বছরের নিচের বাচ্চাদের মধু না খাওয়ানোই ভাল। অত্যাদিক মধু খেলে মাথা ঘুরতে পারে, বমি বমি ভাব হতে পারে, শরীরের তাপ বেড়ে যেতে পারে ,অনেক সময় ডায়রিয়া হতে পারে। এছাড়া আর কোন অপকারিতা মধুতে পাওয়া যায় না।
মধু ও গরম পানির উপকারিতা
আমাদের অনেকরই ধারনা মধুর সাথে গরম পানি মিশিয়ে খেলে এর উপকারিতা বেড়ে যাবে। এটা ভুল
ধারনা কারণ আপনি যদি অধিক গরম পানিতে মধু মিক্স করেন তাহলে মধুর গুনাগুন নষ্ট হয়ে এটা বিষাক্ত হয়ে যায়। তাই আপনি যদি মধু গরম পানিতে খেতে চান তহলে সেটা হতে হবে কুসুম কুসুম গরম পানি । আর এই রকম গরম পানিতে মধু পান করলে আপনি পাবেন নানাবিধও উপকার । যেমন-
- মেদ ভূড়ি কমাবে।
- অতিরিক্ত চর্বি নষ্ট করবে।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
- দেহের পুষ্টি চাহিদা পুরণ করবে।
মধু খাওয়ার উপযুক্ত সময়
অনেকের মনে প্রশ্ন কোন সময় মধু খেলে আমরা উপকার বেশি পাবো। তাদের এই প্রশ্নের আলোকে মূলত
বলতে চাই, আমরা মধু দিনের সবসময় মধু খেতে পারবো তবে আপনি যদি সকাল বেলায় খালি পেটে এবং
রাতে ঘুমানোর আগে মধু খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে মধুর কার্যকারিতা বেশি পাবেন। কারণ এই সময়টা মধু
শরীরের জন্য বেশি উপকারী ।
তাই যারা নিয়মিত মধু খাবেন তারা অবশ্যই রাতে ঘুমানোর আগে এবং সকাল বেলায় খালি পেটে মধু খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
(আপনি যদি কৃষি বিষয়ক আপডেট ভিডিও দেখতে চান তহলে আমাদের এই চ্যানেলটি দেখতে পারেন ।
এখানে আপনি প্রতিদিন কৃষি বিষয়ক আপডেট ভিডিও পাবেন।)
শেষকথা:
মধুর নানাবিধ পুষ্টিগুণের কারণে আপনারা সবাই নিয়মিত মধু খেয়ে শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখবেন এ প্রত্যাশাই
করি। আমার মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা লেখা দ্বারা আপনারা মধুর উপকার সম্পর্কে
পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন এটাই আমার বিশ্বাস। আপনাদের যদি এই লিখাটি ভালো লেগে থাকে, এবং
উপকারে এসে থাকে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবের সাথে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করবেন।
আপনার মূল্যবান মতামত টুকু আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানাবেন। ধন্যবাদ আপনাদের কষ্ট করে লেখা টি পড়ার জন্য।
One comment
Pingback: ভাত খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা