রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ

রোজা ভঙ্গের কারণ:-রোজা শব্দটি এসেছে ফারসি শব্দ থেকে। এর আরবি শব্দ সাওম যার  বাংলা অর্থ হল সংযম । পাঁচটি স্তম্ব  রয়েছে তার মধ্যে সিয়াম হলো তৃতীয় । মুসলমান নর নারীগন রোযার মাসে

সিয়াম/রোযা পালন করে থাকে । বিভিন্ন কারণে রোযা/ সিয়াম  বঙ্গ হয়ে যায় আর যে সব কারনে সিয়াম/রোযা  বঙ্গ  হয়ে যায় তা বিস্তারিত ভাবে আলোচ না করা হলো।  আমার এই লেখাটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত  পড়লে , রোজা বঙ্গের যেসকল কারণ আছে তা বিস্তারিত জানতে পারবেন

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ

সাওম ভঙ্গের কারণ ৭ টি আসুন নিম্নোক্ত সেই সাতটি কারণ উল্লেখ করা হলো।

  1. পানাহার করা ।
  2. এমন কিছু যা পানাহারের স্থলাভিষিক্ত।
  3. ইচ্ছাকৃত বমি করা ।
  4. মহিলাদের হায়েজ নেফাসের সময়।
  5. হস্তমৈথুন করা ।
  6. শিঙ্গা লাগানো বা এমন জাতীয় কোন কাজ করা যার কারণে শরীর থেকে রক্ত বের হয়

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি

সাওম নষ্ট হওয়ার কারণ সমূহ আপনাদের বোঝার সুবিধার জন্য আরও বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো । যাতে করে আমরা সহজেই বুঝতে পারি কি কি করলে আমাদের রোজা ভঙ্গ হবে।

পানাহার- Eating and drinking

আমরা সাধারণত পানাহার বলতে বুঝি মুখ দ্বারা কোন কিছু ভক্ষণ করা বা প্রবেশ করানো । যা আমাদের পাকস্থলী তে গিয়ে পৌঁছে আর আমরা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ দ্ধারা বা নাকের ছিদ্র দ্বারা কোন কিছু প্রবেশ

করাই,  এবং তা পাকস্থলীতে গিয়ে পৌঁছায় ,তবে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। তাছাড়া বিড়ি সিগারেট হুক্কা পান করলেও রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। যদি কেহ ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করে । তবে তার কাযা এবং কাফফারা উভয়ই আদায় করার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেন। সুনানে দারাকুতনী ২/১৯১ ইমাম যুহরী রহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেন ’’রমজানে রোজা রেখে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করবে তার হুকুম ইচ্ছাকৃতভাবে দিনে জৈবিক কাজ কারীর অনুরুপ। অর্থাৎ তাকে কাফফারা আদায় করতে হবে । মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক। হাদীস -৭৪৬৮

ইবরাহীম নাখায়ী রহমাতুল্লাহ আলাইহির বলেছেন( সে আহার করা থেকে বিরত থাকবে যাতে অমুসলিমদের সাথে  সাদৃশ্য সৃষ্টি না হয়)। ইবনে আবী শয়বা হাদীস-৯৪৩৪ এভাবে রোজা ভঙ্গ হয়ে গেলে সাথে সাথে তওবা করতে হবে এবং পরবর্তীতে  কাযা রোজা আদায় করতে হবে।

এমন কিছু যা পানাহারের স্থলাভিষিক্ত- Near of Eating and drinking

অনেকেই শরীর দুর্বলতার জন্য বা শরীর সতেজ রাখার জন্য শরীরে রক্ত বা স্যালাইন নিয়ে থাকেন । আর যদি রোজা অবস্থায় এইরূপ কাজ করেন তাহলে রোজা ভেঙ্গে যায় । তবে প্রয়োজনের জন্য শরীর সতেজ করার উদ্দেশ্যে নয় তখন এ ধরনের কিছু ব্যবহার করলে রোজা ভঙ্গ হবে না যেমন- ইনসুলিন পেনিসিলিন কিংবা বিভিন্ন ধরনের টীকা।    (শায়খ মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিম ফতোয়া সমগ্র ৪/১৮৯ থেকে সংগ্রহ করা)

বিঃদ্রঃ শফিগনের মতামত অনুসারে এই প্রকারের চিকিৎসা রাতের বেলায় নেওয়া উত্তম।

ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা- Intentional vomiting

ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করার কারণে রোজা ভঙ্গ হয়। যদি কারো মুখ ভর্তি হয়ে বমি করে সেক্ষেত্রে তার রোযা

ভঙ্গ হয়ে যাবে । রোজা ভংঙ্গের এই কারণটি সুনামে তিরমিযি (৭২০) আলবানী সহিহ গ্রন্থে (৫৭৭) হাদিস

টিকে সহিহ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। রোজা রাখার বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য আপনি পড়তে

পারেন আমাদের এই লেখাটি যেখানে রোজা সম্পের্কে বিস্তারিত ধারনা ও এর হাদিস ও গুরুত্ব ব্যাখা করা

হয়েছে। তার জন্য (এখানে ক্লিক করুন)।

মেয়েদের রোজা ভঙ্গের কারণ

মহিলাদের হায়েজ নেফাসের কারনে রক্ত বের হওযায় রোজা ভঙ্গের অন্যতম কারণ। আর এই বিষয়ে

একটি হাদিস বর্ণনা করা হলো ’’ যখন মহিলাদের হায়েজ নেফাসের হয় তখন কি তারা নামাজ রোজা ত্যাগ

করে না’’   (সহি বুখারী  ৩০৪) আবার যদি কোন মহিলা মনে মনে করে তারা হায়েজ নেফাসের শুরু

হয়েছে কিন্তু কোন প্রকার রক্ত বের হয়নি । তবে তার ওই দিনে রোজা হয়ে যাবে । উক্ত কারণে যাদের

রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে তাদের কাজা রোজা রাখতে হবে ।

ছেলেদের রোজা ভঙ্গের কারণ

 এ বিষয়ে বলতে গেলে বলা যায় হাত দ্ধারা বা অন্য কোন উপায়ে বীর্যপাত ঘটানো কে হস্তমৈথুন বলা হয় ।

এর কারণে রোজা ভঙ্গ হয় সে বিষয়টি দলিল হচ্ছে হাদিসে কুদসি – ’সে আমার কারনে পানাহার ও জৈবিক

কাজ পরিহার করে ‘’ কিন্তু যদি এমন হয় যে হস্তমৈথুন শুরু করেছে কিন্তু আল্লাহর ভয়ে এবং রোজা রাখার

কারণে হস্তমৈথুন বন্ধ করে এবং তার বীর্যপাত হয়নি তবে তা রোজা হয়ে যাবে । এর জন্য কাযা বা

কাফফার আদায় করতে হবেনা।

পরিশেষে বলতে পারি রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ  উল্লেখ করা হলো এই কারণগুলো হচ্ছে রোজা ভঙ্গের কারণ । রোজা থাকা অবস্থায় কোনভাবেই যেন আমাদের সাথে এই ধরনের কারণ না ঘটে সেদিকে

আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। আর যদি কোন কারনে শয়তানের প্ররোচনায় আমরা রোজা ভঙ্গ করে ফেলি তাহলে সাথে সাথে আল্লাহ্ যেন আমাদের ক্ষমা করে তার জন্য তওবা করে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে কাফফরা ও

কাযা আদায় করতে হবে। রোজার সম্পর্কে আপনার যদি আরো কিছু জানার ইচ্ছা থাকে তবে আপনি আমাদের কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন আমরা পরবর্তী লেখায় আপনার চাহিদা অনুযায়ী লিখাটি উপস্থাপন করব।

কষ্ট করে পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ

অন্যান্য বিষয় পড়তে নিচের ক্লিক করুন:

About 24 Favor

Check Also

How to Write Case Study

How to write case study report sample

Sometimes we need to write any kind of case study for our report or any …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *