আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আশা করি সকলেই ভাল আছেন। জাপান দেশ ও ইতিহাস বিষয় টি নিয়ে
আজকে আমরা কথা বলবো। আপনারা যারা জাপান সম্পর্কে জানতে চান তারা আমার এই লেখা টি
মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এই লেখা টি থেকে আপনারা আরও জানতে পানবেন জাপান দেশ কেমন,
জাপানের ইতিহাস এবং জাপানে জনসংখ্যা কত কোটি। এ সকল বিষয় নিম্নে আলোচনা করা হলো। তাই
আপনারা যারা জানতে ইচ্ছুক তারা আমার এই জাপান দেশ ও ইতিহাস লেখা টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত
মনোযোগ সহকারে পড়ুন। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
জাপান দেশ কেমন
জাপান দেশ কেমন: জাপান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এই দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে জাপান
সাগর, পূর্ব চীন, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও রাশিয়ার পূর্ব দিকে উত্তরে ওখোৎস্ক সাগর থেকে দক্ষিণ-
পূর্ব চীন সাগরে ও তাইওয়ান পর্যন্ত প্রসারিত। যে কাঞ্জি অনুসারে জাপানের নামটি এসেছে, সেটির অর্থ
হলো- ‘সূর্য উৎস’। জাপানকে “সূর্যোদয়ের দেশ” বলা হয়। কারণ এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে আগে
জাপানে “সূর্যোদয়” হয়। জাপান একটি যৌগিক আগ্নেয়গিরি দ্বীপ মালা। এই দ্বীপমালাটি ৬,৮৫২ টি দ্বীপ
নিয়ে গঠিত। জাপানের চার টি বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জ হলো- হোনশু, হোক্কাইদো, ক্যুশু এবং শিকোকু। এই চারটি
দ্বীপ জাপানের মোট ভূখণ্ডের ৯৭% এলাকা জুড়ে গঠিত । জাপানের জনসংখ্যা ১২৬ মিলিয়ন । জনসংখ্যার
হিসাবে জাপার বিশ্বের মধ্যে ১০ ম বৃহত্তম রাষ্ট্র । জাপানের রাজধানীর নাম টোকিও । জাপানের রাজধানী
টোকিওতে জনসংখ্যা প্রায় ৯.১ মিলিয়ন । এই শহরটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার দ্বিতীয়
বৃহত্তম শহর । জাপানের মানুষের আয়ু অনেক বেশি হয়ে থাকে। জাপানিরা খুবই পরিশ্রমী হয়ে থাকে।
জাপানে শিশুদের স্কুলে লেখাপড়ার পাশাপাশি আদব- কায়দা শিখানোটাও অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হয়।
জাপানকে প্রযুক্তি বিদ্যার দেশ বলা হয়। জাপান একটি উন্নত রাষ্ট্র । আশা করি আপনারা জাপান দেশ
সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
জাপানের ইতিহাস
জাপানের ইতিহাস: পুরাতাত্বিক গবেষণার ফলে জানা গিয়েছে যে উচ্চ প্যালিওলিখিক যুগের জাপান
জনবসতির অস্তিত্ব ছিল। জাপানের প্রথম লিখিত উল্লেখ পাওয়া যায় খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে রচিত চীনের
ইতিহাস গ্রন্থ গুলিতে। জাপানের ইতিহাসে অন্যান্য বিভিন্ন অঞ্চলের প্রভাব দেখা যায়। এই দেশের ইতিহাস
প্রথমে চীনের সাম্রাজ্যের প্রভাব পড়েছিল। তারপর একটি বিচ্ছিন্নতার যুগ কাটিয়ে এই দেশের ইতিহাসে
পড়ে পশ্চিম ইউরোপের প্রভাব। ১২শ শতাব্দী থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত শোগুন নামের সামরিক সামন্ত-
শাসকরা সম্রাট উপাধিতে জাপান শাসন করেছিলেন। ১৭শ শতাব্দীতে প্রথম ভাগে জাপান এক দীর্ঘ
বিচ্ছিন্নতার পর্যায়ে প্রবেশ করে। ১৮৫৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী পাশ্চাত্যের সামনে জাপানকে
খুলে দেওয়ার জন্য চাপ দিলে সেই সেই বিচ্ছিন্নতার যুগের অবসান ঘটে। প্রায় দুই দশক অভ্যন্তরীণ বিবাদ ও
বিদ্রোহ চলার পর ১৮৬৮ সালে মেইজি সম্রাট রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা হন এবং জাপান সাম্রাজ্য
ঘোষিত হয়। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগে এবং ২০ শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে জাপান প্রথম চীন -জাপান যুদ্ধ, রুশ
-জাপান যুদ্ধ ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়লাভ করে। ১৯৩৭ সালে চীন-জাপান ১৯৪১ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের
একটি বর্ধিত অংশে পরিণত হয়। ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা
বিস্ফোরণের পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়। ১৯৪৭ সালের সংশোধিত সংবিধান গ্রহণের পর জাপান একটি
এককেন্দ্রিক সাংবিধানিক রাজতন্ত্রে পরিণত হয়। এই ব্যবস্থায় সম্রাটের পাশাপাশি কোক্কাই নামে একটি
নির্বাচিত আইনসভা গঠিত হয়।
জাপানের জনসংখ্যা কত কোটি
জাপানের জনসংখ্যা কত কোটি: ২০০৮ সালে জাপানের জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৭৭ লাখ । ফলে
জাপান বিশ্বের ১০ ম জনবহুল দেশ। উনিশ শতকের শেষ দিকে এবং বিংশ শতকের শুরুর দিকে জাপানে
জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে। তবে সাম্প্রতিক জন্মহার পতন এবং বিদেশ থেকে নীট শাসন মোটামুটি শূন্যের
কোঠায় হওয়াতে অতি সম্প্রতি, ২০০৫ সাল থেকে জাপানের জনসংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। জাপানের
জনগণ জাতিগতভাবে একই রকম, এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি এবং গড় আয়ু ৮১ বছরের কিছু
বেশি। ২০২৫ সালে নাগাদ ৬৫ থেকে ৮৫ বছর বয়স বিশিষ্ট নাগরিকের অংশ ৬% থেকে ১৫% – এ উন্নত
হবে বলে আশা করা হচ্ছে।জাপান মূলত একটি নাগরভিত্তিক রাষ্ট্র। মোট জনসংখ্যার ৮% কৃষি কাজে
নিয়োজিত। বহু কৃষক কৃষি কাজের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী শহরগুলিতে অতিরিক্ত কাজ করে জীবিকা নির্বাহ
করেন। শহরে জনসংখ্যার প্রায় ৮ কোটি হনশু দ্বীপের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে এবং কিয়ুশু দ্বীপের
উত্তরাংশে বসবাস করে।সবচেয়ে জনবহুল শহর গুলির মধ্যে আছে টোকিও মহানগর এলাকার যেখানে
জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ। জাপানি ভাষা জাপানের সরকারি ভাষা। এই ভাষাতে জাপানের প্রায় ৯৮%
লোক কথা বলে। এছাড়াও জাপানে স্বপ্লসংখ্যক লোক কোরীয় ভাষায় কথা বলে। জাপানের অধীনস্থ
রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জে রিউকিউয়ান ভাষা প্রচলিত , এগুলিতে প্রায় ৯ লক্ষ লোক কথা বলেন।
জাপান দেশ ও ইতিহাস এর শেষ কথা
পরিশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি আজকের জাপান দেশ ও ইতিহাস লেখা টি। এটি সুন্দর
একটি তথ্যমূলক লেখা। আপনারা যারা জাপান সম্পর্কে জানতে চান তারা এই লেখা টি থেকে সবকিছু
জানতে পারবেন। তাই আপনারা এই লেখা টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। নিম্নে আপনাদের জন্য আরো
কিছু লেখার লিংক শেয়ার করা হলো। প্রয়োজন মনে করলে পড়তে পারেন। আশা করি কাজে লাগবে।
ধন্যবাদ সবাইকে আজকে আমার এই জাপান দেশ ও ইতিহাস লেখা টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত
মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
একই বিষয়ে পড়তে পারেনঃ
- নিউজিল্যান্ড ভিসা ও বেতন কত?
- নিউজিল্যান্ডের মুদ্রার নাম ও মান কত?
- পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ও কোন কাজের চাহিদা বেশি
- নিউজিল্যান্ড নাগরিকত্ব ও স্থায়ী বসবাসের সুবিধা
- বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম ও আবেদন
- পর্তুগাল দেশ কেমন
- পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা
- পর্তুগাল টুরিস্ট বা ভিজিট ভিসা এবং কি কি কাগজপত্র লাগে
- সোনার খাদ চেনার উপায় ও কেনার কৌশল
- নিউজিল্যান্ড বনাম বাংলাদেশ
- পর্তুগাল ভিসা আপডেট ও যেতে কত টাকা লাগে