লিভার সমস্যার লক্ষণ গুলো কি কি- বর্তমানে বিভিন্ন কারণে মানুষজন লিভার সমস্যা হয়ে থাক। আজকে আমি এই
লেখার মাধ্যমে সেই সকল বিষয় তুলে ধরব যে বিষয় গুলো আমাদের জন্য জানা খুবই জরুরী। কারন অনেক সময় আমরা
না জানার কারণে নিজেদের সমস্যাকে বড় করে ফেলি অথচ যদি প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নেয়া যায় তবে খুব সহজেই
রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি। এই লিভার সমস্যার লক্ষণ গুলো কি কি লেখাটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন দেখবেন
আপনি লিভার সমস্যার বিস্তারিত জানতে পারবেন। আর যদি এই রকম সমস্যা আপনার মধ্যে বা আপনার পরিবারের
কারো মধ্যে দেখা যায় তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারবেন।
লিভার বড় হওয়ার কারণ ও লক্ষণ
লিভারের যত গুলো সমস্যা হয় তার মধ্যে এই সমস্যাটি অন্যতম । অনেকেরই দেখা যায় এই ধরনের সমস্যা হতে। আমার
মায়ের ক্ষেত্রেও এই ধরনের সমস্যা হয়েছে। তবে ভয়ের কোন কারণ নেই আপনি যদি আগ হতেই এর কারণ জেনে এই
রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকেণ তবে খুব একটা সমস্যা হবেনা। আপনাকে শুধু কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। আর ডাক্তারের
পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে। আর যে ভাবে বুঝবেন আপনার লিভার বড় হয়েছে কিনা যদি আপনার মধ্যে আপনার
পরিবারের কারো মধ্যে নিম্নোক্ত লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় তবে বুঝবেন আপনার লিভারটি বড় হয়েগেছে।
লিভার বড় হওয়ার কারণ
অনেক গুলো কারণে আমাদের লিভার বড় হতে পারে তার মধ্যে যে কারণ গুলে সব থেকে বেশি দায়ী তা নিচে তুলে ধরা হলো।
১. শরীরের কিছু ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে যকৃত বড় হতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখ যোগ ভাইরাস হলো হেপাইইটিস এ,বি,সি,ডি এবং ই । এছাড়াও আরো শররে হারপিস সিম্পলেকস ,ইবস্টেন বার ও সাইটোমেগালো ভাইরাসের সংক্রমণ হলেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
২. অনেক ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ যেমন সালমোনেলা টাইফি, মাইকোব্যাটেরিয়াম টিউবারকিলোসিস প্রভৃতির কারণে যকৃৎ বড় হতে পারে। এছাড়াও আরো কিছু ছাত্রাকের সংক্রমণেও এই ধরনের সমস্য হতে পারে।
৩. যেহেতু এইখানে শরীরে সকল বিপাকক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাই বিপাকক্রিয়ার জটিলতার কারনেও এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪. শরীরের যদি অন্য কোন জায়গায় টিউমার হয় তা অনেক সময় যকৃতে ছড়িয়ে পড়তে পারে এতে করে এটা বড় হয়ে যেতে পারে।
৪. রক্তনালির সহ ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ড এ অতিরিক্ত রক্ত জমার কারনেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। আবার অনেক সময় দেখা যায় দীর্ঘদিন ধরে মদ সেবন করার ফলেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
লিভার বড় হওয়ার লক্ষণ
যে সকল বিষয় দেখলে বুঝা যাবে লিভার বড় হয়েছে তার মধ্যে নিম্নোক্ত গুলোই হলো সচারচর দেখা যায়। আর লিভার বড়
হলে সাধারণত তেমন একটা লক্ষণ দেখা যায় না। শুধু পরিক্ষার মাধ্যমেই এই সমস্যাটি সনাক্ত করা যায়। তবুও নিম্নোক্ত
লক্ষণ অনেক সময় দেখা যেতে পারে।
- পেটের উপরের অংশে বাড়তি চাপ লাগা ও এর সাথে ব্যাথা অনুভব করা।
- সমস্ত শরীর হলুদ ভাব হওয়া।
- বমি ও রক্ত পায়খানা করা।
- শরীরে চুলকানি দেখা দেওয়া।
- পেট ও পায়ে পানি জমার মত লক্ষনও দেখা দিতে পারে।
লিভার দুর্বলতার লক্ষণ
শরীরের যে কয়টি গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে তার মধ্যে লিভার একটি । শরীরে লিভার সমস্যা দেখা দিলে শরীরে দেখা যেতে
পারে বেশ কিছু লক্ষণ। আর যে সকল লক্ষণ গুলো পরিলক্ষীত হবে সে গুলো নিম্নোক্ত দেয়া হলো।
- অনেক সময় শরীরে নীল বা হলুদ ভাব দেখা দিতে পারে।
- শরীরে চুলকানি দেখা দিতে পারে।
- হাতের মধ্যে লাল ভাব হতে পারে।
- শরীরে পানির অভাবের কারণে মুখে গন্ধ হতে পারে।
- মুখে লাল দাগ বা লাল দেখা যেতে পারে।
লিভার ক্যান্সার লক্ষণ ও কারণ
সাধারণত বিভিন্ন কারনে লিভারে ক্যান্সার হতে পারে। কোন একটি নির্দিষ্ট কারণকে এর জন্য দায়ী করা যাবেনা। আজ
আমরা নিজে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো কি কারণে লিভারে ক্যান্সার হতে পারে আর এই ধরনের সমস্য হলে কিভাবে
বুঝা যাবে। বার এর উল্লেখ যোগ্য লক্ষ্যন সমূহ কি?
লিভারে ক্যান্সার হওয়ার কারণ
যে সকল কারনে সাধারনত লিভারে ক্যান্সার হওয়ার জন্য দায়ী তার মধ্যে নিচে উল্লেখ যোগ্য গুলো তুলে ধরা হলো।
এছাড়াও আরো কিছু কারণ থাকতে পারে তবে সে গুলো তেমন উল্লেখ যোগ্য নয়। নিম্নোক্ত কারণ গুলো সবথেকে বেশি
কর্যকরী।
১. অনেক সময় দেখা যায় হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের (এইচসিভি) লম্বা সময় সংক্রণের ফলে লিভারে ক্যান্সার হতে পারে।
২. যদি শরীরে সিরোসিস হয় তার জন্য লিভারের দাগের টিস্যু তৈরি হয় তবে সেটা লিভারের ক্যান্সারের সম্ভাবনা অনেক অংশে বাড়ায়।
৩. জেনেটিক কারনেও এটি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পিতা মাতা বা বংশে কারও এই ধরনের রোগ থাকলে হতে পারে।
৪. অ-প্রয়োজনী শরীরের চর্বি বা মেদ লিভারের ক্যান্সারের ঝুকি অনেক বাড়িয়ে তুলে।
৫. মদ বা অ্যালকোহল গ্রহন থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন কারণ এটা গ্রহনের ফলে অপূরণীয় ক্ষতির সন্মুখিন হতে পারেন। মদ বা মাদক সেবনের ফলে লিভার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেক গুনে।
৬. বাড়িতে দেখা যায় অনেক সময় পচাঁ বাসি খাবার আমরা খেয়ে থাকি। কিন্তু অনেকেই আমরা জানিনা। এই ধরনের খাবার খাওয়ার ফলে অনেক সময় লিভারের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুনে বেড়ে যায়।
৭. যাদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত বা অনেক বেশি তাদেরও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
লিভার ক্যান্সার লক্ষণ
যাদের ডাক্তারের কাছে পরামর্শ করার তেমন সুযোগ নেই। বা বিভিন্ন সময় শরীর খারাপ লাগলেও সমস্যাটি বুঝতে পারছেন
না। তারা নিচের লক্ষণ গুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন। আপনার লিভারে ক্যান্সার হয়েছে কিনা।
- অনেক সময় দেখা যায় শরীরে ওজন অকারণে কমে যাচ্ছে।
- খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া বা ক্ষুদা মন্দা হওয়া।
- সাধারণত পেটের ওপরের দিকে ব্যথা করবে।
- বমি হওয়া বা অনেক সময় বমির ভাব হওয়া।
- শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা।
- পেট ফুলে যাওয়া।
- চোখ ও ত্বক হলুদভাব দেখানো এবং জন্ডিস হওয়র মত দেখানো।
লিভার সমস্যার লক্ষণ গুলো কি কি এর শেষ কথা
আশা করি উপরোক্ত লিভার সমস্যার লক্ষণ গুলো কি কি? লেখাটি আপনাদের ভাল লেগেছে। আর আপনারা যদি এই
ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন, এবং আপনার সমস্যাটি যদি একটু জটিল হয় তবে আর দেরি না করে ভালো একজন
ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। সেক্ষেত্রে লিভার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যাওয়াই ভাল। আপনারা সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন এই
প্রত্যাশা নিয়ে আজকের মত শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত লেখাটা পড়ার।