আমেরিকা ইমিগ্রেশন ও ভিজিট ভিসা প্রসেসিং

আজকে আমি আপনাদের আমেরিকা ভিজিটভিসা প্রসেসিং এই লেখার মাধ্যমে এমন কিছু বিষয় নিয়ে

আলোচনা করবো যে বিষয় গুলো যারা আমেরিকা যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য একান্ত পরিহার্য। কারণ এই

বিষয়গুলো আপনি না জানলে সেখানে যাওয়া আপনার জন্য অনেক কঠিন হয়ে যাবে। আর সেই

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো হলো আমেরিকা আপনি ইমিগ্রেশন ভিসা কিভাবে পাবেন, এই দেশের ভিজিট ভিসা

প্রসেসিং করার প্রক্রিয়া সমূহ সহ আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিও কিভাবে, ও কখন কি কারণে দিতে হয় এই

সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। যাতে করে আপনি এই লেখার দ্বারা এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত

ধারণা লাভ করতে পারেন। আর এর জন্য প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এই আমেরিকা ভিজিটভিসা প্রসেসিং

লেখাটি ধৈর্য নিয়ে পড়তে থাকুন।

আমেরিকার ইমিগ্রেশন ভিসা

আমেরিকার ইমিগ্রেশন ভিসা– আমেরিকা অনেক ধরনের ভিসা প্রদান করে থাকে তার মধ্যে ইমিগ্রেশন

ভিসা খুবই জনপ্রিয়। অনেকেই এই ধরনের ভিসায় যেতে চায় । তাই আপনিও যদি এই উপায়ে যেতে চান

তবে আপনার জন্য আমার এই লেখাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে আপনি কিভাবে এই পদ্ধতিতে এই

দেশটিতে যেতে পারেন তা বিস্তারিত আলোচনা করবো। সাধারণত দেখা যায় ইমিগ্রেশন ৫ ধরনের হয়ে

থাকে। আর সেগুলো হলো-

  • Family-based migration
  • Fiancé(e) visa
  • Employment-based immigration
  • Diversity Visa
  • Returning Resident Visa

তবে এই সকল ক্ষেত্রে বেশির ভাগ মানুষ আসে Family-based migration এই মাধ্যম ব্যবহার করে। তাই

আপনি যদি আমেরিকার নাগরিক হয়ে থাকেন তবে যে কোন সময় আপনার পরিবারের যে কোন লোক

আপনার কাছে নেয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্র উল্লেখ থাকে এখানে দু-ধরনের

সম্পর্ক বিবেচনা করা হয়। প্রথমত ইমিডিয়েট রিলিটিভ যারা খুব কাছের পরিবারের লোক যেমন- স্বামী বা

স্ত্রী, মা ও বাবা আর ছেলে ও মেয়ে। আর দ্বিতীয়টি হলো ফ্যামেলি প্রেফারেন্স অর্থাৎ যারা একটু দূরের

আত্নীয় যেমন ভাই,বোন সহ অন্যান্য অত্নীয় তাদেরও সহজেই নিতে পারবেন। তবে এই ধরনের ভিসার

ক্ষেত্রে যেহেতু বছরে নির্দিষ্ট সীমা আছে তাই দেখা যায় প্রতিবছর প্রচুর পেন্ডিং থাকে তাই অনেক ক্ষেত্রে ১০

থেকে ১২ বছর সময় লেগে যায়। কিন্তু আপনারা যদি স্পাউস ও পিতা মাতার জন্য আবেদন করেন তবে তা

খুব তাড়াতাড়ি ভিসা পাওয়া যায়। আর এই ধরনের ভিসার জন্য কোন লিমিটেশন নেই। তবে আপনি যদি

আমেরিকার পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন অর্থাৎ ইমিগ্রেশন ভিসা পাওয়ার যোগ্য হয়ে থাকেন তবে খুব

তাড়াতাড়ি আপনার পরিবারের লোক জনের জন্য আবেদন করে ফেলুন যেহেতু এটা প্রসেসিং করার জন্য

লম্বা একটি সময় লেগে যায়। তাই দেরি করা ঠিক হবেনা।

আমেরিকা ভিজিট ভিসা প্রসেসিং

আমেরিকা ভিজিট ভিসা প্রসেসিং– সাধারণত এই ধরনের ভিসাকে বি১ ও বি২ ভিসা বলা হয়। আর এই

ধরনের ভ্রমন অনুমোধন নেয়া হয় বিভিন্ন কারণে যেমন -ব্যাবসা বিষয়ক কাজের জন্য, কোন ধরনের

মিটিং/সভা বা সমাবেশ,কোন ধরনে ব্যবসায়িক চুক্তি সম্পাদন করতে আর এই ধরনের  ভিসা হলো বি১।

এছাড়াও যখন আপনি ভ্রমন , সাইট ভিউ, বন্ধু বা বান্ধবি সহ আত্নীয়র বাসায় বেড়াতে যাওয়া,চিকিৎসা বা

সেবামূলক কাজে গেলে সেটাকে বি২ এর আওতায় ধরা হয়ে থাকে।

আমেরিকা ভিজিট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা

আমেরিকা ভিজিট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা- আপনি বি১, বা বি২ যে ভিসার জন্যই আবেদন করেন।

আপনাকে তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমান উপস্থাপন করতে হবে যে আপনি এই ধরনের অনুমোধন নিয়ে

সেখানে যাওয়ার যোগ্যতা রাখেন। যুক্তরাষ্ট্র জারি করা যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশান এন্ড ন্যাশনালিটি এক্ট

(আইএনএ) অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়ার যোগ্য অনুসারে। তাদের এই আইনের ধারা অনুযায়ী তারা

মনে করে থাকেন যে আপনি সেই দেশের নাগরিক হওয়ার জন্যই সেখানে অভিগমন করতেছেন। তাই

আপনাকে বেশ কিছু তথ্য উপস্থাপন করতে হবে, যা আপনার প্রমান করবে আপনি সেখানে গিয়ে বসবাস

করার জন্য থেকে যাবেন না। আর সেই ধরনের প্রমানের জন্য আপনাকে নিম্নোক্ত বিষয়ে উপস্থাপন করতে

হবে। তবেই বুঝা যাবে আপনি সেখানে থাকতে যাচ্ছেন না।

  • খুব কম সময়ের জন্য ভিসার আবেদন করতে হবে।
  • আপনার পূর্বে একাধিক দেশে ভ্রমণ রেকর্ড থাকলে সেটা ভিসা পেতে সহায়ক হয়।
  • বাংলাদেশে ভালো চাকুরি অথবা বড় ধরনের ব্যবসা থাকা।
  • বাংকে ভালোমানের অংকের টাকা থাকা। তারা যেন বুঝতে পারে আপনি সেখানে গিয়ে খরচ করার মত টাকা আপনার কাছে আছে।
  • সর্বপরি ভিসা ইন্টারভিউয়ের সময় নিজেকে ভালোবাবে উপস্থাপন করা, এবং আপনি এই দেশে অনেক ভালো আছেন আপনি খুব তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসতে চান সে বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করা।

আমেরিকা ভিজিট ভিসা পেতে কি কি কাগজ পত্র বা ডকুমেন্ট লাগে

যখন আপনি বাংলাদেশ থেকে ভ্রমণ করার জন্য ইউ এস.এ যাবেন তখন আপনাকে বেশ কিছু ডকুমেন্ট

জমা দিতে হবে। সেখানের যাওয়ার চূড়ান্ত অনুমোধনের জন্য। তাই অনেক সময় দেখা যায় এই সকল

ঝামেলার কারণে অনেকেই সেখানে ভ্রমণ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখেন। তাই আজ এখানে আমি বলে

দিব কি কি কাগজ পত্র আপনাকে ভিসা প্রাপ্তির জন্য অফিসে জমা দিতে হবে।

  1.  ডিএস-১৬০ এটি অফিস কতৃক নির্ধারিত ভিসা আবেদন পত্র । এখানে উল্লেখিত সকল তথ্য পূরণ করে জমা দিতে হবে।
  2.  আপনার  একটি বৈধ পাসপোর্ট যার মেয়াদ থাকবে নন্যূতম ১ বছর। তবে উল্লেখ থাকে যে আপনি যে সময়ে ভ্রমনে যাচ্ছেন সেখান থেকে ফিরে আসার পরেও যেন পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাস থাকে।
  3. সদ্য তোলা ২”x২”(৫সেমিx৫সেমি) একটি (১) ছবি।
  4. আপনি যে ভিসার জন্য ফি প্রদান করেছেন তার রশিদ।
  5. ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে।
  6. আপনি যদি চাকুরিজীবি বা ছাত্র/ছাত্রী হন তবে অফিস/স্কুল কতৃত এনওসি জমা দিতে হবে।
  7. ব্যবসায়িক হলে অফিসের প্যাড ও ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হবে।
  8. যদি কারো কাছ থেকে স্পন্সর পেয়ে থাকেন তবে তার কপি।
  9. আপনাকে একটি ভ্রমণ পরিকল্পনা ও ভ্রমনের ‍উদ্দেশ্য বিস্তারিত বর্ণনা করে কভার লেটার জমা দিতে হবে। এছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী বা আপনার ভ্রমনের ধরন অনুযায়ী আরো কিছু কাগজ পত্র লাগতে পারে যেমন উদাহর হিসেবে বলা যায় অপনি যদি ডাক্তারের কাছে যান তবে ডাক্তারের প্রেসক্রিপসন।

আমেরিকা ভিজিট ভিসা প্রেসিসিং ধাপ সমহ

আপনি যদি এই ধরনের অনুমোধন পত্র পেতে চান তবে আপনাকে কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে তা সম্পন্ন

করতে হবে হবে। আর সেই ধাপ গুলো নিম্নোক্ত বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো আপনাদের বুঝার সুবিধার জন্য।

ধাপ-১

এই ধাপে আপনাকে যা করতে হবে তাহলো আপনাকে নির্ধারিত ফর্মটি সকল তথ্য সঠিক দিয়ে পুরণ

করতে হবে। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, তাহলো কোন ভাবেই ভূল অথবা মিথ্যা তথ্য দেয়া থেকে

বিরত থাকতে হবে । যদি কোন কারণে তারা বুঝতে পারে আপনি  এখানে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করছেন।

তাহলে তারা আপনার ভিসা বাতিল করে দিবে। কারণ তারা আপনার ভিসা ইন্টারভিউয়ের সময় এই সকল

তথ্য থেকে অনেক বেশি প্রশ্ন করবে বিষয় গুলোর সত্যতা যাচাই করার জন্য।

ধাপ -২

উপরোক্ত ফর্মটি সঠিক ভাবে পূরন করা হলে এবার আপনার ভিসার জন্য ফি প্রদান করে তার রশিদ সংগ্রহ

করতে হবে। কারণ আপনি যখন আবেদন পত্রটি জমা দিবেন তখন এই বিলটি সাথে জমা দিতে হবে।

ধাপ -৩

এবার আপনি এই ধাপে এসে তাদের দেয়া ওয়েব সাইটে গিয়ে আপনার পাসপোর্ট ও ফি জমার রশিদের

দেয়া নাম্বারটি দিয়ে দেখে নিন আপনার ভিসার জন্য সাক্ষাৎকার কবে। এভাবেই আপনার প্রসেসিং

প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।

আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ

আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ–  যদিও বিশ্বের অন্যান্য দেশে আপনার কাগজ পত্রকে বেশি অগ্রাধিকার

দেয়া হয় । কিন্তু এই দেশটি তা থেকে ভিন্ন। এখানে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় অনুমোধনের জন্য

সাক্ষাৎকারকে। তাই আপনাকে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। এই ধরনের ভ্রমণ অনুমোধন পত্র

পাওয়ার বিষয়ে। আপনি যদি এই বিষয়টি বিস্তারিত পড়তে চান, বা বুঝতে চান যে আপনি কিভাবে

ইন্টারভিউ দিলে ১০০ ভাগ ভিসা হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাহলে পড়তে পারেন আমাদের এই লেখাটি।

কারণ এখানে আমরা বিস্তারিত বর্ণনা করেছি কিভাবে আপনি ইন্টারভিউ দিলে সেখানকার ভিসা পেয়ে

যাবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত। আর তার জন এই লেখাটিতে ক্লিক করুন এবং ভিজিট করুন আমাদের

গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখায়।

 

আমেরিকা ভিজিটভিসা প্রসেসিং এর শেষ নিবেদন

পরিশেষে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত শেষ করতে চাচ্ছি আমেরিকা ভিজিটভিসা প্রসেসিং

লেখাটি। আমার বিশ্বাস যে সকল তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়েছে সেই সকল তথ্য আপনাদের

অনেক কাজে লাগবে। এছাড়াও আপনাদের যদি আরো কোন বিষয়ে জানার আগ্রহ থাকে তবে আমাদের

কাছে লিখতে পারেন। আমি আপনাদের সেই প্রশ্নের উত্তর দিব। এই বিষয়ে আমাদের আরো অনেক

গুরুত্বপূর্ণ লেখা আছে, যে গুলো পড়লে আপনার অনেক উপকার হবে। আপনাদের সুবিধার জন্য নিচে

সেই লেখা গুলোর লিংক শেয়ার করা হলো। যদি লেখাটি ভালো লাগে তবে সবার সাথে শেয়ার করার

অনুরোধ রইল। আর খারাপ লাগলে কমেন্স করে জানাবেন। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমেরিকা

ভিজিটভিসা প্রসেসিং পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

About 24 Favor

Check Also

Meeting minutes writing format

Meeting minutes writing format: Who has engaged with NGO job maximum people need writings this …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *