আশা কারি সকলেই ভালো আছেন । আজকে আমরা সরকারি ভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়
বিষয় টি নিয়ে আলোচনা করব। বাংলাদেশের অনেক মানুষ কোরিয়ায় জীবন – যাপন করার জন্য আগ্রহী।
কোরিয়া এমন একটি দেশ যা পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অন্যতম একটি দেশ। আর আমাদের সবারি স্বপ্ন থাকে
ভালো একটি দেশে গিয়ে কাজ করার । আর বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য দারুন একটি সুযোগ নিয়ে এসেছে।
সরকারি ভাবে কোরিয়া যেতে চাইলে আবেদন করে তার পরে যাওয়া যাবে। আর তাই আপনারা কিভাবে
দক্ষিণ কোরিয়া যাবেন তার জন্য আমার এই সম্পূর্ণ লেখা টি । আপনারা যারা সরকারি ভাবে দক্ষিণ
কোরিয়া যাওয়ার উপায় খুজছেন তারা আমার এই লেখা টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে
পড়ুন। নিম্নে সব কিছু বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল-
সরকারি ভাবে দাক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়
সরকারি ভাবে দাক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়: এশিয়ার মধ্যে একটি উন্নত দেশ হল দক্ষিণ কোরিয়া।
অনেকের আশা থাকে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার। আর বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর দক্ষিণ কোরিয়া শিল্প ও
সেবা খাতের জন্য কয়েক হাজার কর্মী সরকারি ভাবে নিয়ে থাকেন, এমপ্লয়মেন্ট সিস্টেমের ইপিএস এর
আওতায়। আপনাকে প্রথমে অনলাইন এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে , দক্ষিণ কোরিয়া যারা যেতে চান
তাদের লেখা-পড়ার দিক থেকে জেএসসি ,এসএসসি , এইচএসসি পাশ হতে হবে এবং বয়স ১৮ থেকে ৩৯
এর মধ্যে হতে হবে। তহলে আবেদন করতে পারবেন। আর আপনাকে অবশ্যই কোরিয়ার ভাষা জানতে হবে
ও ভাষা পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। আপনাকে সরকারি ভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে হলে ছয় টি ধাপের
মাধ্যমে যেতে হবে। আর এই সকল ধাপ সম্পূর্ণ হলেই আপনি দাক্ষণ কোরিয়া যেতে পারবেন। আপনি
সরকারি ভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে হলে আনাকে ইপিএস এর আওতায় এবং এইচআরডি কোরিয়ার
সহায়তায় বোয়েসেলের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার লটারি ধরে যেতে হবে। আর এছাড়াও সরকারি ভাবে দাক্ষণ
কোরিয়া যাওয়ার অন্য একটি উপায় হল ভাষা পারদর্শী পরীক্ষায় পাস করে তার মাধ্যমে যেতে পারবেন।
আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া যায়।
ধাপ- ১
আপনার দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য প্রথম শর্ত হলো ভাষার উপর দক্ষতা থাকতে হবে। আপনি ভাষা যে
কোনো ভাবেই শিখতে পারেন । আপনি ভাষা সরকারি স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কোনো কোচিং সেন্টার
কিংবা প্রাইভেট পড়ে ইত্যাদি ভাবে। সাধরণত ভাষার উপর পরীক্ষা দুই ভাবে হয় – ১. রিডিং পার্ট এবং ২.
লিসেনিং পার্ট। ভাষা শিখার পরে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে সার্কুলারের জন্য। সার্কুলার হবে আপনার
বোয়েসেল – বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট এবং সার্ভিস লিমেটেড এর মাধ্যমে বিভিন্ন পত্রিকায় ও
বোয়েসেল এর ওয়েবসাইটে। সার্কুলার হলে আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে প্রি-রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
আর রেজিস্ট্রেশন করতে হলে আপনার কি কি যোগ্যতা লাগবে তা স্পষ্ট করে সার্কুলারে লেখা থাকবে।
এছাড়া আপনার পাসপোর্ট থাকতে হবে। আপনার নাম , জন্ম তারিখ, পাসপোর্ট নাম্বার ও মোবাইল নাম্বার
পাসপোর্টের কপির মধ্যে স্ক্যান করে তার পরে ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে প্রি-রেজিস্ট্রেশন এর জন্য ইনপুট
করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হলে আপনাকে একটি কনফার্মেশন কপি দেবে। যা আপনার কাছে যত্ন
করে রাখতে হবে।
ধাপ-২
যে পরিমাণে লোক নিবে যদি তার চেয়ে বেশি প্রি-রেজিস্টেসন হয় , তাহলে সমস্ত রেজিস্ট্রেশন থেকে
সমপরিমান কম্পিউটারাইজড লটারির মাধ্যমে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এই লটারিতে অনেক ভাষা জানা
লোক বাদ পরে আবার অনেক ভাষা না জানা লোক চান্স পায় । এটি সম্পূর্ণ কম্পিউটার মাধ্যমে সিলেকশন
হয় ,তাই এখানে কোনো দুর্নীতি করার আপনার বা অন্য কারো ক্ষমতা নেই।
ধাপ-৩
আপনি যদি লটারির মাধ্যমে টিকেন তার পরে আপনাকে সব ধরণের কাগজপত্র জমা দিতে হবে। যে সকল
কাগজ পত্র জমা দিতে তাহল- অরিজিনাল পাসপোর্ট , ২০০০/- হাজার টাকা জমা দেওয়ার রশিদ, ২ কপি
পাসপোর্ট সাইজের ছবি, প্রি-রেজিস্ট্রেশন এর কনফার্মেশন কপি সব ডকুমেন্টস নিয়ে আপনাকে
বোয়েসেল গিয়ে মূল রোজস্ট্রেশন করতে হবে। আর এই রেজিস্টেশনের প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে
আর এর পরে সব কিছু ঠিকঠাক করে পরীক্ষার জন্য প্রস্ততি গ্রহণ করতে হবে।
ধাপ -৪
কম্পিউটারের সামনে বসে আপনাকে রিডিং পার্টে এর ২০ টি প্রশ্ন উত্তর দিতে হবে যার প্রতি প্রশ্নের মান ৫
করে। আর আপনাকে এর জন্য সময় দেওয়া হবে ২৫ মিনিট। আবার লিসেনিং পার্টেও ২০ প্রশ্ন থাকবে তার
জন্যও সময় ২৫ মিনিট আর এই দুই পার্টের পরীক্ষা একই সাথেই দিতে হবে। আর আপনার পরীক্ষার
রেজাল্ট ভালো হলে আপনি পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন। আপনার ভাষা পরীক্ষায় পাস করার পরে আরও
একটি স্কীল টেস্ট নামে পরীক্ষা হবে। আর এই পরীক্ষা কেমন হবে বা কিভাবে হবে তা ইন্সট্রাক্টরের কাছ বা
যে কোনো ল্যাংগুয়েজ সেন্টার থেকে জানতে হবে। কারণ সময়ের সাথে সাথে নিয়ম পরিবর্তন হয়।
ধাপ -৫
আপনি সব পরীক্ষায় পাস করার পরে প্রি-রজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে কোটা সমপরিমান লোক বাছাই করে আর
বাকি সবাই কে বাদ দিয়ে দেবে। তার মানে যারা পয়েন্ট বেশি পাবে তারা চান্স পাবে বাকি সব বাদ পড়বে।
ধাপ-৬
আপনি টিকে যাওয়ার পরে আপনাকে বোয়েসেল নোটিশের এর মাধ্যমে জানানো হবে। তার পরে আপনাকে
মেডিকেল করানো হবে। এবং আরো কিছু টুকিটাকি কাজ করানো হবে আর সেই সব কাগজ পত্র আপনাকে
বোয়েসেল এ গিয়ে জমা দিতে হবে এবং এপ্লিকেশন ফরম এক জন অভিজ্ঞ মানুষ ধারা পূরণ করে জমা
দিতে হবে।
উপরোক্ত ধাপ গুলো আপনার ঠিকঠাক মত হয়ে গেলে আপনার ছবি, বয়স , বায়োডাটা দেখে মালিক যদি
পছন্দ করে। তাহলে তার পরে আপনার ভিসা ইস্যু হবে। আর বোয়েসেল এর মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে
দিবে। তার পরে আপনাকে বোয়েসেল এর ৩ টা পে-অর্ডারের মাধ্যমে বোয়েসেল এর সব সার্ভিস চার্জ জমা
দিতে হবে। তারপরে আপনাকে কোরিয়ার টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার থেকে এক সপ্তার একটি ট্রেনিং
করতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়া কাজের ভিসা
দক্ষিণ কোরিয়া কাজের ভিসা : আপনারা যার দক্ষিণ কোরিয়া কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান তার যাওয়ার
আগে অবশ্যই কাজ সম্পর্কে জেনে যাবেন। কারণ কাজ সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি কোন ভিসা নিয়ে
যাবেন তা বলবেন কিভাবে। তাই যাওয়ার আগে ভলো ভাবে জানুন তার পরে কাজের ভিসা নিয়ে যাবেন।
দক্ষিণ কোরিয়া সাধারণত ইপিএস এর আওতায় লোক নেওয়া হয় । উপরোক্ত লেখা গুলোর মাধ্যমে জানতে
পারবেন যে আপনি কিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া জাবেন। আর দক্ষিণ কোরিয়া কাজের ভিসার জন্য কয়েকটি
সেক্টরে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ভাবে লোক পাঠানো হয় । বায়োসেলের সহকারী মহাব্যবস্থাপকের মতে,
বাংলাদেশ থেকে যে ভিসায় লোক নেওয়া হয় তা মূলত দক্ষিণ কোরিয়ার উৎপাদন খাত কাজ করানোর জন্য
নেওয়া হয়। আর এই সকল খাত গুলো হল – পনির ও খাদ্যশিল্প , কাগজশিল্প , প্লাস্টিকশিল্প, ইলেকট্রনিক্স
এবং ইলেকট্রিক শিল্প এবং মেশিনারিজ ইত্যাদি। আশাকরি আপনারা বুঝতে পেরেছেন ।
শেষ কথা
সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি আজকের সরকারি ভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় লেখা
টি। আপনারা লেখা টি পড়লে উপকৃত হইবেন আশা করি। এছাড়াও আপনাদের আরো কোনো বিষয়ে
জানার থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা তার উত্তর দিয়ে জানিয়ে দিবো। নিম্নে আপনাদের সাথে কিছু
লেখার লিংক শেয়ার করলাম । প্রয়োজন মনে হলে পড়তে পারেন । আশা করি কাজে লাগবে। সবাই ভালো
থাকুন সুস্থ্য থাকুন এই কামনায় শেষ করছি।
আরো একই বিষয়ে পড়তেঃ
- দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা ও খরচ
- দক্ষিণ কোরিয়া ট্যুরিস্ট ভিসা ও পাওয়ার নিয়ম
- দক্ষিণ কোরিয়া নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্কে অজানা তথ্য
- দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাস