আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা ,আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আজকে আমরা কথা বলবো সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ ভিসা নিয়ে।
আপনারা যারা সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ ভিসায় যেতে চান তারা অবশ্যই আমার এই লেখা টি পড়ুন। লেখা থেকে আপনারা আরো জানতে
পারবেন সুইজারল্যান্ডে অন্যতম শহর জুরিখে যা যা আছে ।তাই আপনারা যারা সুইজারল্যান্ড ভ্রমন সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তারা
আমার এই সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ ভিসা লেখা টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা
হল।
সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ ভিসা
সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ ভিসা: বিমানে চড়ে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি জুরিখ যাওয়া যায়। এর জন্য সুইজারল্যান্ড দূতাবাস থেকে ভ্রমণ
ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। ব্যবসায়ীক কাজের জন্য যেতে হলে বিজনেস ভিসার দরকার হবে। এছাড়া সেনজেন ভিসা নিয়ে জুরিখ ঘুরে
আসতে পারবেন।বছরের যেকোনো সময়ই জুরিখ ভ্রমণের জন্য যেতে পারবেন ।তবে গ্রীষ্মকাল জুরিখ ভ্রমণের জন্য সব থেকে
উপযুক্ত সময়। এছাড়াও বিভিন্ন ঋতুতে অপরূপ সৌন্দরর্য পূর্ণ সুইজারল্যান্ড ভিন্ন ভিন্ন রূপে পর্যটকদের মন জয় করে।জুরিখ
সুইজারল্যান্ড এর সবচেয়ে বড় শহর। সুইজারল্যান্ড এর অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত। ইউরোপের প্রধান শিল্প ও
অর্থনৈতিক রাজধানী গুলোর মধ্যে জুরিখ পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে আনন্দদায়ক এবং আকর্ষণীয় স্থান ।সাংস্কৃতি প্রেমীদের জন্য
এখানে আছে বেশকিছু জাদুঘর এবং মধ্যযুগীয় স্থাপনা। পর্যটকদের দর্শনের জন্য সুইস এর সেরা শহর গুলির মধ্যে জুরিখ হলো
অন্যতম ।
জুরিখে যা যা দেখবেন
আপনারা জুরিখে যা যা দেখবেন তাহল -লেক জুরিখ,জুরিখ অলস্টাড, ইউটিবার্গ,ফরাসুস্টার,সুইস ন্যাশনাল মিউজিয়াম ।নিম্নে
বিস্তারিত আলোচনা করা হল-
লেক জুরিখ: পরিষ্কার এই হ্রদ টি বেলভিউ এলাকা থেকে শুরু হয়ে টাইফেনব্রুনেন পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে
বিস্তৃত। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে অবকাশ যাপনের জন্য এই লেক আদর্শ জায়গা।লেক জুরিখের জলে সাঁতার কাটা এবং নৌকা ভ্রমণের
ব্যবস্থা রয়েছে।
জুরিখ অলস্টাড:জুরিখ অলস্টাড বিংশ শতাব্দীর পূর্বের ঐতিহাসিক শহরের অন্তর্ভুক্ত একটি এলাকা। এখানে পর্যটকদের জনপ্রিয়
আকর্ষণ এবং স্থাপত্য নিদর্শন এর মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি ল্যান্ডমার্ক, প্লাজা,লিনহেনহফ,ফ্রমুমুনস্টার, সেন্ট পিটার্চ চার্চ
, নিউমার্কেট এবং পুরানো মধ্যযুগীয় রাথাউস আবাসস্থল।
ইউটিলিবার্গ: যারা পাহাড়ের উপর থেকে জুরিখ শহর এবং লেক জুরিখ সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তারা ইউটিলিবার্গ চলে যেতে
পারেন। এখানে পাহাড়ের উপর উটো কুলম নামে ছোট্ট একটি হোটেল এবং দুইটি টাওয়ার রয়েছে। টাওয়ারগুলোর একটি টেলিভিশন
সংকেতের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং অন্যটিতে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। জুরিখ থেকে ট্রেনে ইউটিলিবার্গ
যাওয়া যায়।
ফরাসুস্টার: নারী গির্জার বা ফরাসুস্টার জুরিখের চারটি প্রধান চার্চের মধ্যে অন্যতম। ৮৫৩ সালে জার্মান নাগরিক সুইসা তাঁর মেয়ে
হিল্ডগার্ডের উপাসনায় এটি নির্মাণ করেন।বর্তমানে গির্জাটি উপাসনা এবং ভ্রমণের জন্য চালু রয়েছে ।গির্জাটির অন্যতম আকর্ষণীয়
দিকের মধ্যে রয়েছে ৩০ ফুট উঁচু কাচের জানালা, শিল্পি পল বোডার এবং টাওয়ারের ফ্রেসকো ঘড়ি।
সুইস ন্যাশনাল মিউজিয়াম: এই মিউজিয়ামে প্রস্তর যুগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সুইজারল্যান্ডে সংস্কৃতি এবং জীবন দর্শনের
বিভিন্ন উপাদান সংরক্ষিত আছে।১৮৯৮ সালে গুস্তাভ গুল এই মিউজিয়াম টি স্থাপন করেন। সুইজারল্যান্ড এর ইতিহাস, ঐতিহ্য
সম্পর্কে জানতে এর থেকে উত্তম স্থান আর দ্বিতীয়টি নেই।
সুইজারল্যান্ড ভ্রমনের আরো কিছু জায়গা সমূহ
সুইজারল্যান্ড ভ্রমণের আরো কিছু জায়গা সমূহ যেমন- গ্রসমুনস্টার, লিন্ডেনহফ,রিটবার্গ মিউজিয়াম,জুরিখ চিড়িয়াখানা,কুন্ঠাউস
জুরিখ।নিম্নে বিস্তারিত করা হলো-
গ্রসমুনস্টার:মহান মন্ত্রী খ্যাত এই গির্জাটি শার্লেম্যান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। গির্জার টুইন টাওয়ার কে জুরিখের সবচেয়ে স্বীকৃত ল্যান্ডমার্ক
হিসেবে ধরা হয়। ১২ শতকে গির্জাটি আধুনিকায়ন করে বিখ্যাত শিল্পী অগাস্টো গিয়াকোমেট্টি এবং অট্ট মঞ্চের ব্রোঞ্জের ভাস্কর্যের
দরজা স্থাপন করা হয়।
লিন্ডেনহফ:লিম্মত নদীর তীরে অবস্থিত সবুজ ঢাকা লিন্ডেনহফ শহরের আছে সুদীর্ঘ ইতিহাস।লিন্ডেনহফ পাহাড়ের উপর অবস্থিত
এ শহরে আছে রোমান কাসেল ,নাগরিক সমাবেশের স্থান, পুরাতন প্রাসাদ এবং দুর্গ। ঐতিহ্যবাহী এই শহরে আপনি পায়ে হেটে ভ্রমণ
করলে আপনার মনকে নিঃসন্দেহে প্রশান্ত করে দেবে।
রিটবার্গ মিউজিয়াম:১৮৫৭ সালে জার্মান শিল্পপতির জন্য নির্মিত নিক্লাসিকাল ভিলাটি ব্যারন এডুয়ার্ড ভন ডের হায়দতের
সংগ্রহশালা হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে ।রোমের ভিলা আলাবানি মডেলের অনুকরনে নির্মিত রিটবার্গ মিউজিয়ামটি সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত
বিশ্ব ঐতিহ্য নির্দেশের একমাত্র জাদুঘর। এখানে তিব্বতী,ভারতীয়, চীনা, আফ্রিকান এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন
ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়।
জুরিখ চিড়িয়াখানা:ইউরোপের অন্যতম সেরা এই চিড়িয়াখানায় প্রায় ৩৬০ প্রজাতির বিভিন্ন প্রাণী রয়েছে। তাঁদের অনুকূল প্রাকৃতিক
পরিবেশে রাখা হয়েছে।এছাড়া চিড়িয়াখানার উল্লেখযোগ্য প্রাণীর মধ্যে আছে তুষার চিতা বাঘ এবং উড়ন্ত শিয়াল ইত্যাদি।
কুন্ঠাউস জুরিখ:কার্ল মোজার এবং রবার্ট কারজেলের ডিজাইনে নির্মিত কুন্ঠাউস জুরিখ জাদুঘর টি ১৯১০ সালে উন্মুক্ত করা হয়।
এখানে সুইজারল্যান্ডের স্থানীয় আর্ট অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শিল্প সংগ্রহ স্থান পেয়েছে।ক্লাউড মনেট, এডওয়ার্ড
মিঞ্চ, পাবলো পিকাসো এবং সুইস আলবার্তো জিকোমোমটিয়ের মত বিশ্ব বিখ্যাত শিল্পীদের শিল্পকর্মগুলো এখানে দেখা যায়।
সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- পাসপোর্ট(মেয়াদ তিন মাসের বেশি থাকতে হবে)
- ভিসা প্রসেসিং এর জন্য সঠিক ও নির্ভুল ভাবে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
- তিন মাসের মধ্যে তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- ছবি অবশ্যই রঙিন হতে হবে এবং ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড হালকা নীল অথবা সাদা হতে হবে।
- পাসপোর্টে কমপক্ষে একটি সম্পূর্ণ ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
- পাসপোর্টে ব্যক্তিগত তথ্যের পেজটির একটি ফটোকপি আবেদনপত্রের সাথে জমা দিতে হবে।
- থাকার জন্য যথেষ্ট অর্থ থাকার প্রমাণ পত্র ,ব্যাংক স্টেটমেন্ট ভিসার আবেদন পত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
- ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসা চার্জ নগদ জমা দিতে হবে।
- ভিসার জন্য আবেদনের সময় ট্রাভেল ইন্সুরেন্স করতে হবে।
সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ ভিসা এর শেষ উক্তি
সবশেষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি আজকের সুজারল্যান্ড ভ্রমণ ভিসা বিষয়ে লেখা টি ।এটি সুন্দর একটি গুরুত্বপূর্ণ
তথ্যমূলক লেখা। আশাকরি আপনাদের অনেকের উপকারে আসবে। আপনাদের যদি আরো কোন বিষয়ে জানার থাকে তাহলে
অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমরা তার উত্তর দিয়ে সেই বিষয় টি আপনাকে জানিয়ে দেবো। আমরা সব সময় বিদেশের ব্যাপারে
সব ধরনের তথ্য দিয়ে থাকি ।তাই যারা বিদেশের ব্যাপারে তথ্য জানতে চান তারা আমাদের এই লেখাগুলো থেকে জানতে পারবেন।
নিম্নে আরও কিছু লেখার লিংক আপনাদের সাথে শেয়ার করা হল। প্রয়োজন মনে করলে পড়তে পারেন। আশা করি কাজে লাগবে
। ধন্যবাদ সবাইকে আজকে আমার এই সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ ভিসা লেখা টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
একই জাতীয় আরো লেখা :
- দুবাই ড্রাইভিং ভিসা বেতন কত?
- দুবাই হাউজ ড্রাইভার নিয়োগ ২০২৩
- দুবাই সিকিউরিটি গার্ড কোম্পানি ২০২৩
- দুবাই যেতে কত টাকা লাগে?
- দুবাই যেতে কত বছর বয়স লাগে ২০২৩?
- দুবাই কাজের সন্ধান
- দুবাই কাজের ভিসা ২০২৩
- দুবাই সর্বনিম্ন বেতন কত?
- দুবাই বা আরব আমিরাতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
- কুয়েত খাদেম ভিসা।
- কুয়েত কোম্পানি ভিসা ২০২২।
- কুয়েত জব ভিসা।
- কুয়েত হোটেল ভিসা।
- কুয়েত মসজিদের হারেজ ভিসা।
- কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি।
- মালয়েশিয়া কলিং ভিসা এজেন্সি
- মালয়েশিয়া কাজের ভিসা-২০২২
- মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
- সৌদি ভিসা প্রসেসিং
- সৌদি আরব ভিসা চেকিং
- সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি
- কাতারে কোন কাজের চাহিদা বেশি।
- সিংঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা ও বেতন বেশি।
- কানাডায় কোন কাজের চাহিদা বেশি।
- মালয়েশিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি
- সৌদি আরব ভিসা কত প্রকার
- কুয়েত মাজরা ভিসা