সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে উক্তি – মানুষ বসবাসের প্রথম পর্যায়ে বা আদিকালে যে সময় ধর্মের কোন ভেদাভেদ ছিল না,
বা বর্ণের কোন ভেদাভেদ ছিল না, এছাড়াও দেশের কোন ভেদাভেদ ছিল না, তখন মানুষের মাঝে কোন ধরনের সাম্প্রদায়িক
দাঙ্গা ছিলনা। যুগের পরিবর্তনে মানুষের প্রয়োজনে মহান সৃষ্টিকর্তা যখন পৃথীবিতে ধর্মের আবির্ভাব ঘটান আর এর সাথে
তৈরী হয় ভিন্ন রাষ্ট্র ও গোত্রের। কারণ কিছু মানুষ মহান সৃষ্টিকর্তার সেই সুমহান বানি গ্রহণ করতে ব্যার্থ হয়। আর এর পর
থেকেই শুরু হয় সাম্প্রদায়িকতা। আর এই সাম্প্রদায়িকতা বর্তমানে ছড়িয়ে যাচ্ছে অনেক ভয়াবহ আকারে। মানুষ, মানুষের
মধ্যে ভেদাভেদ, ধর্মে-ধর্মে ভেদাভেদ, মানুষের বর্ণের মধ্যে ভেদাভেদ। সবকিছুর মধ্যে যেন সাম্প্রদায়িকতা রূপ নিয়েছে।
আর এই সকল সাম্প্রদায়িকতা থেকে বের হয়ে আসা হচ্ছে আমাদের উচিত। প্রতিটা মানুষকে আমাদের মানুষ হিসেবে
চিহ্নিত করা দরকার। সেখানে কে মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান, কালো, সাদা, ধনী-গরীব এগুলো চিন্তা করলে আমাদের ভুল
হবে। সবাইকে মানুষ হিসেবে চিন্তা করতে হবে। তাই আসুন কিভাবে আমরা সাম্প্রদায়িকতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে
পারি, সে বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আর এখানে সুন্দর সুন্দর কিছু উক্তি, কবিতা, রচনা থাকবে যেগুলো
আপনাদের অনেক বিষয়ে কাজে লাগবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ব্যবহার করতে পারবেন। আর এর
জন্য প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে উক্তি লেখাটি পড়তে থাকুন।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে উক্তি
ভারত উপমহাদেশে অহিংস আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন গান্ধীজী। তারই ধারাবাহিকতায় বলতে চাই
সাম্প্রদায়িকতা নয়, সম্প্রীতির মাধ্যমে আমরা একে অপরের সাথে মিলেমিশে বসবাস করতে চাই। আমাদের মধ্যে যেন
কোন সাম্প্রদায়িকতা না থাকে। আমরা যেন মিলেমিশে বসবাস করতে পারি সুন্দর এই ধরণীতে। সুন্দর এই পৃথিবীটাকে
আরো সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারি। মানুষের মধ্যে যেন কোন ভেদাভেদ না থাকে। সবাইকে আমরা মানুষ হিসেবে
নিজেদেরকে চিহ্নিত করতে পারি। আসুন নিজেদের মধ্যে সেই ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক গড়ার লক্ষ্যে কিছু উক্তি প্রদান করব, যে উক্তি
গুলো আপনি শেয়ার করতে পারবেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
- মিলি মিশে বসবাসের নামই হচ্ছে মানবতা।
- আপনি যাকে আঘাত করছেন তারও আপনার মত সব কিছু আছে।
- প্রতি হিংসা কখনো ভাল কিছু বহন করতে পারেনা।এটা শুধু ঘৃণাই ছড়ায়।
- আজ যাকে শক্র মনে হচ্ছে তাকে বন্ধু ভাবুন দেখবেন একদিন সে আপনার বিপদে এগিয়ে আসবে।
- কাওকে ছোট করে না দেখার নামই মানবতা।
মানব ধর্ম নিয়ে উক্তি
সবার উপরে মানবধর্ম তাহার উপরে নাই । কবিগুরুর এই উক্তির মধ্যেই যেন নিহিত আছে মানবের সেবা করার অভিপ্রায়।
এছাড়াও বিভিন্ন ধর্মে মানব সেবা নিয়ে সৃষ্টি কর্তা তার বাণীতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ থেকে বোঝা যায় মানুষের সেবা করার
মত আর কোন বড় কাজ নেই। কেউ যদি মানবের জন্য সেবা করে যায়, মানুষের কল্যাণে কাজ করে যায় সৃষ্টিকর্তাও সেই
কাজে খুশি হয়। সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ উপায় হচ্ছে মানব সেবা করা। তাই আসুন আমরা কিভাবে আরো
মানব সেবা করতে পারি, মানুষের উপকার করতে পারি, সে বিষয়গুলো নিয়ে উক্তি লিখব । যেগুলো আপনাকে মানুষের
জন্য কাজ করতে আরো অনুপ্রেরণা যোগাবে, আরও উৎসাহ যোগাবেভ আপনার সাথে সাথে যেন অন্যরা উৎসাহ পায় তাই
এই উক্তিগুলো আপনি শেয়ার করতে পারবেন আপনার বন্ধু বান্ধবের সাথে, বিভিন্ন মাধ্যমে।
- যারা মানবের সেবা করে তাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক খুশি হয়ে যায়।
- মানব সেবার মধ্যেই নিহিত আছে আপনার জীবনের স্বার্থকতা। তাই প্রতিনিয়ত মানব সেবায় কাজ করে যাওয়া হচ্ছে আমাদের দায়িত্ব।
- আপনার মনে হতে পারে আপনি সৃষ্টি কর্তার জন্য কাজ করছেন। না মূলত আপনার শান্তির জন্যই কাজ করছেন।
- প্রতিদিন যদি আপনি একটি ভাল কাজ করেন তবে দেখবেন এক দিন আপনি তার প্রতিদান পেতে শুরু করেছেন।
- নিজেকে অন্যর সেবায় বিলিয়ে দেয়ার নামই হচ্ছে মানব জীবন।
সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রচনা
অনেক প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে রচনা লিখতে দেওয়া হয়। আপনারা যদি আমার এই লেখাটা
প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন, এবং মন থেকে লেখাটি উপলব্ধি করতে পারেন, তবে আপনি খুব সুন্দর একটি
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে রচনা লিখতে পারবেন । এই ধরনের রচনা লিখতে আপনাকে এই লেখাটি অনেক সহযোগিতা
করবে। তাই যারা এই ধরনের রচনা লিখতে চান তারা অবশ্যই আমার লেখাটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। আপনি শুধু
রচনার আঙ্গিকে কথাগুলোকে উপস্থাপন করবেন, তবেই দেখবেন সুন্দর একটি রচনা হয়ে গেছে। এছাড়াও এখানে যে
উক্তিগুলো দেওয়া আছে আপনি আপনার রচনা বিভিন্ন অংশে এই উক্তিগুলো ব্যবহার করবেন। এতে করে দেখা যাবে
আপনার রচনাটি আরো সুন্দর হয়েছে, এবং সবার থেকে আলাদা হয়েছে। যা আপনাকে অধিক নম্বর পেতে সহায়তা করবে।
শান্তি নিয়ে উক্তি
শান্তি কথাটি অনেক ছোট, কিন্তু এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনেক বিশাল। কারণ আমরা যে কোন কাজকর্ম করি না কেন
সবকিছুর মূলে রয়েছে আমাদের শান্তি। আর শান্তি পাওয়ার জন্যই আমরা সব ধরনের কার্যকলাপ পরিচালনা করে থাকি।
সেই শান্তি হতে পারে সাংসারিক শান্তি, সামাজিক শান্তি তাই শান্তি নিয়ে আজকে এখানে কিছু উক্তি প্রদান করব। যে
উক্তিগুলো আপনার শান্তি বজায় রাখতে সহায়তা করবে । একই সাথে কিভাবে আপনি সবার সাথে শান্তিতে বসবাস করতে
পারেন? সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিবে। উক্তিগুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইল, যাতে করে সবার মাঝে শান্তি
বিরাজ করে।
- শান্তি এমন একটি জীনিস যা একা একা ভোগ করা যায় না। আর এটা একা একা অর্জন করাও সম্ভব না।
- তুমি যদি নিজে শান্তিতে থাকতে চাও তবে অন্যজনকে শান্তিতে থাকার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী করে দাও।
- যদিও অনেক সময় মনে হয় আমরা অপরের জন্য কাজ করি । কিন্তু মূলত আমরা নিজেদের শান্তির জন্যই কাজ করে থাকি।
- অশান্তি এমন একটি যন্ত্রণা যার শুরু হয় ছোট্র একটা বীজের সমান দিয়ে কিন্তু শেষ পরিণতি হয় বিরাট আকারের বট বৃক্ষের সমান হয়ে।
- সমাজের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যারা কাজ করে গেছে তারা সমাজের কাছে স্মরনীয় হয়ে আছে।
সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে সংলাপ
আজ পৃথিবীতে ভ্রাতৃত্ববোধের বড়ই অভাব। প্রতিটি স্তরে যেন সাম্প্রদায়িকতা জড়িত, মানুষের মধ্যে নাই মিলবন্ধন । দিন
দিন যেন মানুষের মধ্যে ভালোবাসা হ্রাস পাচ্ছে। আর এ কারণেই আমাদের প্রয়োজন সবার মাঝে সংলাপ তৈরি করা। যাতে
করে এক বর্ণের মানুষ, আরেক বর্ণের সাথে দাঙ্গায় জড়িয়ে না পরে। এক ধর্মের মানুষ আরেক ধর্মের মানুষকে শত্রু না
ভাবে। কারণ পৃথিবীতে আমরা সবাই যেন মিলেমিশে বসবাস করতে পারি। আর এর জন্য দরকার গোত্রে গোত্রে, ধর্মে-ধর্মে,
বর্ণে বর্ণে সংলাপ করা। কারণ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব সকল সমস্যার সমাধান করা। কারণ আমরা যখন
একজন আরেকজনের কাছাকাছি এসে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করতে পারব, তখন নিজেদের কষ্টগুলো
অনেকটাই দূর হয়ে যাবে। একজন আরেকজনকে বন্ধু ভাববে, আর এর জন্য দরকার প্রতিটি স্তরে ভাতৃত্ববোধ গড়ার জন্য
সংলাপের। আসুন আমরা এ ধরনের কার্যকলাপ যেন রাষ্ট্রীয়ভাবে, সামাজিকভাবে , ধর্মীয়ভাবে করা হয় সে লক্ষ্যে সবাইকে
অনুরোধ জানাই। একই সাথে আমাদের যদি কারও সামর্থ্য থাকে এ ধরনের কার্যকলাপ হাতে নেওয়ার সেটা আমরাও করতে
পারি।
সম্প্রদায়গত সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কি কি উদ্যেগ গ্রহণ করা যেতে পারে?
আমরা যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি তারা অনেক সময় বুঝতে পারিনা কি করলে আমাদের
মাঝে আরও ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি পাবে । একজন আরেকজনকে শত্রু না ভেবে বন্ধু ভাবা শুরু করবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি
বৃদ্ধির লক্ষ্যে কি কি কাজ করা যেতে পারে? তাদের উদ্দেশ্যে নিচে কিছু কাজের কথা আলোচনা করব। যে কাজগুলো
করলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি আরো বৃদ্ধি পাবে। বিভিন্ন গোত্রের বর্ণের মানুষ একজন আরেকজনের অনেক কাছে আসবে।
তাদের মধ্যে মারামারি হানাহানি কমে যাবে। যা আমাদের শান্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আর তাই
নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর উপর কাজ করলে সবার মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাবে।
- অন্ত ধর্মীয় আলোচনা।
- বিভিন্ন জাতী গোষ্টির সাথে এক সাথে আলাপ আলোচনা।
- এক সাথে মিলে মিশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা।
- সব শ্রেনীর মানুষ জন মিলে বিভিন্ন খেলা ধূলা ও প্রতিযোগীতার আয়োজন করা ।
- বিভিন্ন রাষ্ট্রিয় উৎসব এক সাথে পালন করা।
- একে অপরের উৎসবে যোগদান করা।
- এক সথে ভ্রমনের ব্যবস্থা করা।
সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে কবিতা
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে অনেকেই কবিতা খোঁজ করে থাকেন। কারণ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই ধরনের কবিতাগুলো আবৃত্তি
করলে সবার মাঝে একটি অনুভূতি কাজ করে। আর সেই অনুভূতিটা সবার মাঝে সম্প্রতি সৃষ্টি করতে সহায়তা করে।
বিশেষ করে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে এই ধরনের অনুষ্ঠান সরকারি এবং বিভিন্ন এনজিও কর্তৃক অনেক হয়ে থাকে। তাই
এই সকল অনুষ্ঠানে আপনি নিচের কবিতাটি আবৃতি করতে পারেন।
সবার মাঝে সম্প্রীতি
সবার মাঝে থাকবে বেঁচে
সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্ব।
একসাথে বাঁচতে হবে
যেথায় থাকবে শুধু মমত্ব।
গড়বো মোরা নতুন পৃথীবি
যেথায় থাকবেনা কোন ভেদা ভেদ
আবার মোরা গাই এক সাথে
মিলবো নতুন বন্ধনে
মিলে মিশে থাকবো মোরা
করছি তাহার সন্ধানে।
যদি সবাই মিলে থাকি
সুখে কাটবে মোদের দিন
মিলে মিশে বেঁচে থেকে
শোধ করবো পৃথীবির ঋন।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে উক্তি এর শেষ কথা
উপরোক্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে উক্তি লেখাটি আশা করি সবার উপকারে আসবে। আর এই সাথে সবাইকে অনুরোধ
করছি সবাই মিলে মিশে বসবাসকরবো। এই পৃথীবি যেন স্বর্গ রাজ্য হয় তার জন্য চেষ্টা করবো। এই লেখাটি যদি ভাল লেগে
থাকে তবে সবার সাথে শেয়ার করার জন্য অনুরোধ রইল। আমাদের সাইটে আরো অনেক সুন্দর সুন্দর লেখা আছে যা
আপনি পড়তে পারেন। আর এই লেখাটি যদি আপনাদের ভাল লেগে থাকে তবে শেয়ার করার জন্য অনুরোধ রইল।
This article has shed new perspective on the topic, kudos.